Top

আলু চাষে জিয়াউর রহমানের সফলতা, ২৯ বিঘায় ২৭শ মন উৎপাদন

০৬ মার্চ, ২০২১ ৩:০৫ অপরাহ্ণ
আলু চাষে জিয়াউর রহমানের সফলতা, ২৯ বিঘায় ২৭শ মন উৎপাদন
যশোর প্রতিনিধি :

রাজগঞ্জে চলতি বছরে গোল আলু চাষ করে ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেছে জিয়াউর রহমান নামে এক চাষি। আলুর দাম কম হওয়ায় বিজ আলুসহ সব আলুই কোল্ড স্টোর জাত করছেন তিনি।

সরোজমিনে জানা গেছে, পশ্চিম মনিরামপুরের রাজগঞ্জের হরিহরনগর ইউনিয়নের ডুমুরখালী গ্রামের মোসলেম আলী সরদারের ছেলে আলু চাষি জিয়াউর রহমান। এ বছর তিনি ডুমুরখালী ও দশআনি মাঠে ২৯ বিঘা জমিতে গোল আলুর চাষ করেছেন। সম্প্রতি ওই ২৯ বিঘা জমির আলু তুলতে ও বস্তাবন্দি করতে স্থানীয় পুরুষ ও মহিলা শ্রমিকদের কাজে লাগিয়েছে।

দেখা গেছে মহিলা শ্রমিকরা ক্ষেত থেকে আলু কুড়িয়ে ঝুড়িতে করে এনে রাস্তার ধারে স্তুপ করে রাখছে। আর কেউ কেউ সেখান থেকে বাছাই করে ৬০ কেজির ওজনের বস্তা বন্দী করে রাস্তার উপর সারি বদ্ধ করে রাখছে। সেখান থেকে পাঠানো হচ্ছে কোল্ড স্টোরে। আলু চাষি জিয়াউর রহমান জানান ২৯ বিঘা জমিতে প্রায় ২শ মন বীজ আলু রোপন করা হয়। এর মধ্যে রাজশাহী কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি গবেষক ড. মঞ্জুরুল ইসলামের মাধ্যমে বাংলাদেশ টিস্যু কালচারালের উন্নত মানের বীজ সংগ্রহ করা হয়েছিল।ওই বীজ আলাদাভাবে রোপন করে প্রায় ৩শ মন ভিত্তি আলুর বীজ উৎপাদন করা হয়েছে। ভিত্তি বীজ গুলো সম্পুর্ন আলাদা করে বস্তা বন্দী করা হয়েছে।

তিনি আরো জানান এবারে আলুতে রোগ ব্যধি খুব কম দেখা দিয়েছে। দুই একটা আলুতে দাগ দেখা দিয়েছে। আলুর চেহারাই যেন ঝলক মারছে। বাছাইতে খুব কম আলুই বাদ যাচ্ছে। প্রতি কাঠা জমিতে ৫ থেকে সাড়ে ৫ মন পর্যন্ত আলুর ফলন হয়েছে। প্রতি বিঘা জমিতে ১শ মন এর উর্দ্ধে আলু উৎপাদিত হয়েছে। সর্ব মোট ২৯ বিঘা জমিতে আলু উৎপাদিত হয়েছে প্রায় সাড়ে ২৭ মন। সব আলুই ৬০ কেজি করে বস্তা বন্দী করা হয়েছে।

আলু উঠানোর মুখে দাম কম থাকায় বিক্রি না করে বীজ আলুসহ সকল (১২শ বস্তা) গোল আলুই ঝিকরগাছার মালঞ্চি ও টাউয়ার কোল্ড স্টোরে গুদাম জাত করা হয়েছে। আলু চাষের প্রথম থেকে শুরু করে ২৯ বিঘা জমিতে সর্ব মোট খরচ হয়েছে প্রায় পৌনে ৯ লাখ টাকা।

উল্লেখ্য আলু চাষি জিয়াউর রহমান গত বছর ১৬ বিঘা জমিতে গোল আলু চাষ করেছিলেন। আলু উঠানোর সময় দাম কম থাকায় সে সময়ও ৭শ বস্তা আলু কোল্ড স্টোরে রেখেছিলেন। পরে স্টোর থেকে বের করে বীজ আলু হিসেবে প্রতি বস্তা ২৫শ টাকা দরে ২শ বস্তা বিক্রি করা হয়েছিল। বাকি ৫শ বস্তা আলু বাজারে বিক্রি করেছিল। যা প্রতি বস্তা ১১শ টাকা দরে বিক্রি করেছিলেন বলে তিনি জানান।

আলু চাষি জিয়াউর রহমান আরো জানান, বিগত কয়েক বছর ধরে আলুর চাষ করে আসছি। কিন্তু উঠানোর মুহুর্তে দাম খুবই কম থাকে। তাই আমি কম দামে আলু বিক্রি না করে কোল্ড স্টোরে গুদাম জাত করে থাকি। দাম বেশি হলে স্টোর থেকে বের করে তা বিক্রি করি। একই উদ্দেশ্যে এ বছরও আমি বীজ আলুসহ প্রায় ২৭শ মন আলু কোল্ড স্টোরে গুদাম জাত করেছি। আশা করছি গত বছরের ন্যায় এবারও বীজ আলু ও বাজারজাত আলু অধিক মূল্যে বিক্রি করতে পারবো। আর সেটা যদি করতে পারি তা হলে অনেক লাভবান হবো। ফলে আগামী বছর আরো বেশি পরিমাণ জমিতে গোল আলুর চাষ করবো বলে আশা করছি।

তিনি আরো বলেন, আমার আলু চাষে সবসময় পরামর্শ ও দেখাশোনা করছেন স্থানীয় উপ-সহকারী কৃষি অফিসার প্রদীপ কুমার। এ বিষয়ে মনিরামপুর উপজেলা কৃষি অফিসার হীরক কুমার বিশ্বাস বলেন এ বছর আলু চাষে রোগব্যধি কম ছিল। আমি আলু চাষি জিয়াউর রহমানের কথা শুনেছি। আমার মাঠ কর্মীরা তার চাষের দিকে সবসময় খেয়াল রেখেছে।আমাদের উপদেশে আলুর খুব ভালো ফলন পেয়েছে সে। আসা করছি আগামীতে ওই চাষি আরো বেশি পরিমাণ জমিতে আলু চাষ করবে।

শেয়ার