সততা, নিষ্ঠা, ও কঠোর পরিশ্রমে সফলতা এসেছে লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার উত্তর চরবংশী গ্রামের কৃষক পরিবারের সন্তান রাসেলের। প্রথম দিকে ১টি ২০ হাজার টাকা সমমূল্যের ছাগল নিয়ে খামার শুরু করেন তিনি। বর্তমানে তাঁর খামারে ৫০টি ছাগল ও ২৫টি গরু রয়েছে।

পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করে ১২ বছরে কোটিপতি বনে গেছেন সফল এই উদ্যোক্তা। নিজ এলাকায় গড়ে তুলেছেন “রাসেল ডেইরি ফার্ম” নামক একটি প্রতিষ্ঠান। বাবা আবদুল হালিম, মা, ভাই ও স্ত্রীকে সাথে নিয়ে দেখভাল করেন তাঁর এ খামার।

জানা যায়, ছোটবেলা থেকে ব্যাংকার হওয়ার ইচ্ছে থাকলেও পরিবারের চাপে ডাক্তার হওয়ার স্বপ্নে পড়তে হয়েছে বিজ্ঞান বিভাগে। ছাত্রজীবন থেকে বাবার কাছ থেকে নেয়া ১০-২০ টাকা জমিয়ে শখের বশে ২০ হাজার টাকায় একটি ছাগল কিনেন তিনি। ওই ছাগল থেকে ৩টি বাচ্চা হয়। এরপর আর পেছনে তাকাতে হয়নি রাসেলকে।

বাণিজ্য প্রতিদিনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

এর পরে নিজের জমানো টাকা আর ছাগল বিক্রির টাকা দিয়ে একটি শংকর জাতের গাভী ও উন্নত জাতের দুইটি ছাগল কিনেন তিনি। পরে কঠোর পরিশ্রম আর সততার মাধ্যমে ১২ বছরেই কোটিপতি বনে যান তিনি।

রাসেল ডেইরী ফার্মে গিয়ে দেখা যায়, ৪০ শতাংশ জমির ওপর খামার গড়ে তুলেছেন তিনি। খামারে লোহার খাঁচায় সারি সারি করে বাঁধা রয়েছে বকনা গরু ও ছাগল।

সফল খামারি রাসেলের সাথে কথা হলে তিনি জানান, ২০১০ সালে ফ্রিজিয়ান জাতের একটি গাভী থেকেই তার খামারে প্রজনন সম্প্রসারণ শুরু। বর্তমানে তার খামারে ২টি ষাঁড়, ১৫টি গাভী ও ১০টি বাছুরসহ ২৫টি গরু রয়েছে। বর্তমানে ১৫টি গাভী থেকে প্রতিদিন ১০০ লিটার দুধ পান তিনি। এছাড়া দেশীয় ব্ল্যাক বেঙ্গল জাতের ছাগল, দেশী মোরগ-মুরগি, এবং কবুতর পালন শুরু করেছেন তিনি।

তিনি বলেন, খামারে বাছুর হলো লাভের অংশ। বছর শেষে ৪০টি বাচ্চা হয় সাধারণত। বাছুর থেকে বছরে আয় হয় প্রায় ২ লাখ ১০ হাজার টাকা। বর্তমানে খামারে দেড় কোটি টাকার গরু ও ছাগল রয়েছে বলেও জানান তিনি।

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হোসেন আহাম্মদ জানান, এ এলাকায় রাসেল বেকার যুবকদের জন্য একটা উদাহরণ। স্বল্প সময়ে পরিশ্রমের মাধ্যমে রাসেল তাঁর খামারের পরিসর বাড়াতে পেরেছেন। আত্মপ্রত্যয়ী এই যুবকের খামার দেখে বেকারত্ব দূর করতে অন্যরাও এগিয়ে আসবে বলে মনে করেন এই জনপ্রতিনিধি।

এ প্রসঙ্গে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আইয়ুব মিঞাঁ রানা বলেন, রায়পুরে সফল খামারি রাসেল গরু ও ছাগল পালন করে স্বাবলম্বী। তাঁর খামারের গবাদি পশুগুলোকে প্রাণিসম্পদ বিভাগের পক্ষ থেকে ভ্যাকসিন দেয়া হয়। তাছাড়া পশু লালন পালনে তাঁকে নানা পরামর্শ প্রদানের পাশাপাশি সরকারি সহযোগিতা প্রদাবের কথাও জানালেন প্রাণিসম্পদ দপ্তরের এই কর্মকর্তা।