দীর্ঘ ২৩ বছর পর ঢাকা থেকে পলাতক মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার গড়পাড়া গ্রামের কাবুল হত্যা মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামী বিপ্লব (৫০) কে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব।

গতকাল ১৫ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে ঢাকার মিরপুরের ৬০ ফিট এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র‌্যাব-৪, সিপিসি-৩ এর কোম্পানি কমান্ডার লে. কমান্ডার আরিফ হোসেন।

বাণিজ্য প্রতিদিনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

বিপ্লবের বাড়ি মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার পাঞ্জনখাড়া (সাদিনগর) গ্রামে।

বর্তমানে তিনি ঢাকা মিরপুরের ৬০ ফিট এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন।

র‌্যাবসূত্রে জানা গেছে , ১৯৯৯ সালের জুলাই মাসের প্রথম দিকে রাজনৈতিক মতবিরোধের জের ধরে আসামী বিপ্লব ও তার সহযোগীরা হামলার প্রস্তুতি নিয়ে গড়পাড়া গ্রামের মোতালেব হোসেনের বাড়িতে যায়। মোতালেবকে না পেয়ে বিরোধী রাজনৈতিক মতাদর্শের কাবুলের ওপর অতর্কিত হামলা ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা কাবুলকে উদ্ধার করে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ঘটনার পরের দিন মোতালেব হোসেন বাদী হয়ে মানিকগঞ্জ সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ঘটনার পর থেকেই বিপ্লবসহ অন্যান্য আসামীরা পলাতক ছিলেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত শেষে ১৩ জনকে আসামী করে আদালতে অভিযোগ পত্র দায়ের করেন। পরে আদালত আসামী বিপ্লব ও মনির চৌধুরীকে মৃত্যুদণ্ড এবং লিপাই, মোশারফ হোসেন, সুনীল, উজ্জল ও শহীদকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেন। বাকি ৬ জনকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন আদালত।

এরপর পুলিশ মনির চৌধুরী, উজ্জ্বল ও মোশারফ হোসেনকে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করলে আসামী মনির চৌধুরী উচ্চ আদালতে আপিল করলে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল সাতজনকেই যাবজ্জীবন সাজা প্রদান করেন।

পরবর্তীতে আসামী উজ্জ্বল উচ্চ আদালতে আপিল করে বেকসুর খালাস পায়। চার বছর পূর্বে জেল হাজতে মৃত্যুবরণ করেন অপর আসামী মোশাররফ হোসেন। এছাড়া মনির চৌধুরী বর্তমানে জেল হাজতে আছেন।

লে. কমান্ডার আরিফ হোসেন জানান, ‘ঘটনার পর থেকেই বিপ্লব দীর্ঘ ২৩ বছর ধরে পলাতক ছিলেন। আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় জাতীয় পরিচয় পত্রে বাবা ও মায়ের নাম ঠিক রেখে নিজের নাম বিপ্লবের পরিবর্তে শহিদুল ইসলাম ব্যবহার করতেন। এছাড়া গ্রেফতার এড়াতে সে ক্রমাগত পেশা পরিবর্তন করে আসছিলেন। প্রথমদিকে, সে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় দোকানের কর্মচারী, ইলেকট্রিক মিস্ত্রী ও পরবর্তীতে পরিবেশ অধিদপ্তরের আগারগাঁও অফিসে প্রতারনামূলক দালালি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। গ্রেফতার বিপ্লবকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলেও জানান র‌্যাবের ওই কর্মকর্তা।