টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে এমপি ও মেয়র গ্রুপের নেতাকর্মীরা পাল্টাপাল্টি বিক্ষোভ মিছিল করেছেন। এতে শহরে উত্তেজনা ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। এই ঘটনায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা রয়েছে। মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে স্থানীয় সংসদ সদস্য তানভীর হাসান ছোট মনিরের সমর্থকরা উপজেলা পরিষদ চত্তর থেকে একটি মিছিল ভূঞাপুর-তারাকান্দি সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে ভূঞাপুর বাজার হয়ে পুনরায় উপজেলা পরিষদ চত্তরে গিয়ে শেষ হয়।

বিক্ষোভ মিছিলে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম বাবু, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সৈয়দ মাসুদুল হক টুটু, গোবিন্দাসী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দুলাল হোসেন চকদার, অর্জুনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহবুব খান, জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য আজহারুল ইসলাম আজহার, নিকরাইল ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন সরকার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফুল ইসলাম আরজু ও খন্দকার জাহিদ হাসান, উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি হযরত আলী, যুবলীগ নেতা পাকির আলী, সেলিমসহ ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও কৃষকলীগের নেতাকর্মীরা। পরে সংক্ষিপ্ত পথসভায় বক্তারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাসুদুল হক মাসুদকে বহিস্কারের দাবি করেন।

অপরদিকে বেলা ১২টার দিকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌরসভার মেয়র মাসুদুল হক মাসুদের সমর্থকরা পৌরসভা থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ভূঞাপুর-তারাকান্দি সড়ক হয়ে উপজেলা পরিষদ এলাকায় যাওয়ার পথে আইনশৃংঙ্খলা রক্ষার্থে পুলিশ তাদের বাঁধা দেয়। পরে নেতাকর্মীরা অগ্রণী ব্যাংকের সামনে সংক্ষিপ্ত পথসভা করেন। বিক্ষোভ মিছিলে উপস্থিত ছিলেন নিকরাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাসুদুল হক মাসুদ, জেলা পরিষদের সদস্য খায়রুল ইসলাম তালুকদার বাবলু, গোবিন্দাসী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আমিনুল ইসলাম আমিন, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল বাছেদ মন্ডল, অলোয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিকুল ইসলাম বাদলসহ কৃষক, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

বাণিজ্য প্রতিদিনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

এসময় বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়রের উপর হামলার নির্দেশ দাতা এমপি ছোট মনির। তাকে ভূঞাপুরে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। হামলার বিচার না হলে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে অবস্থান কর্মসূচী পালন করা হবে। এদিকে আওয়ামী লীগের দুইগ্রুপের পাল্টাপাল্টি বিক্ষোভ কর্মসূচীকে ঘিরে স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। যেকোন সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা রয়েছে। এই ঘটনায় এলাকায় বিশৃঙ্খলা এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

এর আগে গতকাল সোমবার এমপি প্রার্থী ও ভূঞাপুর পৌরসভার মেয়র মাসুদুল হক মাসুদ গোপালপুর উপজেলার আলমনগর এলাকায় শীতবস্ত্র ও লিফলেট বিতরণ করতে গেলে এমপির সমর্থকদের সাথে সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। পরে মেয়রের গাড়ি বহরের কয়েকটি গাড়ি ও মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। এতে সাংবাদিকসহ দু’পক্ষের ১২জন আহত হন।

স্থানীয় সংসদ সদস্য তানভীর হাসান ছোট মনির বলেন, ভূঞাপুরের সভাপতি বিদ্রোহী নির্বাচন করাদের নিয়ে গোপালপুরে প্রোগ্রাম করতে গেলে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সাথে এ দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছে। তার বিরুদ্ধে নির্দেশের অভিযোগ মিথ্যা ও অপরাজনীতির অংশ।

ভূঞাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরিদুল ইসলাম বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ের করা হয়েছে। দুইপক্ষের বিক্ষোভ মিছিল শেষে তাদেরকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।

গোপালপুর থানার ওসি মোশারফ হোসেন বলেন, গোপালপুরের ঘটনায় মঙ্গলবার পর্যন্ত কোন পক্ষ থেকেই থানায় অভিযোগ কিংবা মামলা দায়ের করা হয় নি।