চট্টগ্রাম নগরীর কাঁচাবাজারে এবার বৃষ্টির প্রভাব পড়েছে। টানা তাপদাহের পর বৃষ্টির প্রভাবে সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতিটি সবজির দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ২০ থেকে ৩০ টাকা। বিক্রেতাদের অভিযোগ, বিভিন্ন আড়তে দেশের মোকাম থেকে উৎপাদিত সবজির সরবরাহ কমে যাওয়ায় বাড়তি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। শনিবার (১১ মে) চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন বাজারে এমন তথ্য পাওয়া যায়।

নগরীর বাজাগুলোতে দেখা যায়, করলা আকার ভেদে বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৮০ থেকে ৯০ টাকা, পটল ৭০, ঢেঁড়স ৬০, বরবটি ৮০, শসা ৬০, পেঁপে ৫০, মূলা ৫০, বেগুন ৬০ থেকে ৭০ টাকা, ফুলকপি প্রতিটি ৬০ থেকে ৭০, কুমড়ার কেজি ৪০ থেকে ৫০ ও কাঁচা মরিচ স্থানভেদে ৮০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

অন্যদিকে, হাড়সহ গরুর মাংস কেজিপ্রতি ৭৫০ এবং হাড় ছাড়া ৯শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খাসির মাংসের কেজি ১ হাজার ৫০ থেকে ১১শ টাকা। ফার্মের ডিম ডজন প্রতি ১৪০ টাকা, হাঁসের ডিম ১৮০, দেশি মুরগির ডিমের হালি ৮৫ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।

বাণিজ্য প্রতিদিনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

এক সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দাম স্থানভেদে বেড়েছে কেজিপ্রতি ২০-৩০ টাকা। যেখানে দুই সপ্তাহ আগে তীব্র গরমের কারণে হিট স্ট্রোকের ভয়ে মুরগি ব্যাপারীরা বিক্রি করেছিলেন ১৮০ থেকে ১৯০ টাকায়। নগরীর কর্ণফুলী মার্কেট মুরগির বাজারে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২১০ থেকে ২২০ টাকায়। সোনালি ৩৬০ থেকে ৩৭০ এবং দেশি মুরগি কেজি প্রতি ৬৪০ থেকে ৬৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে, সপ্তাহের ব্যবধানে সরবরাহ কমে যাওয়ায় সব ধরনের মাছ বিক্রি হচ্ছে বাড়তি দামে। কাজীর দেউড়ি বাজারে ৫শ গ্রাম ওজনের ইলিশ মাছ কেজিপ্রতি ১ হাজার ২শ টাকা। প্রতি কেজি মৃগেল ৩৫০ থেকে ৪৫০, পাঙাশ ২২০ থেকে ২৪০, চিংড়ি ৯০০ থেকে ১ হাজার ৩শ, বোয়াল ৫শ থেকে ৯শ, কাতল ৪শ থেকে ৬শ, পোয়া ৪শ থেকে ৬শ, পাবদা ৪শ থেকে ৫শ, তেলাপিয়া ২২০-৩শ, কই ২২০ থেকে ২৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

অন্যদিকে, পাইকারি পর্যায়ে পোল্ট্রি মুরগির ডিম (লাল) প্রতি পিস ১১ টাকা ৩০ পয়সা, সাদা ডিম ১০ টাকা ৭০ পয়সা দরে বিক্রি হচ্ছে। ফলে খুচরা পর্যায়ে দেখা দিয়েছে এর প্রভাব। নগরীর বিভিন্ন অলিগলির মুদির দোকানে ডিমের ডজন প্রতি দাম দাঁড়িয়েছে ১৪০ টাকা। বিষয়টিকে অস্বাভাবিক বলছেন খোদ পাইকারি বাজারে ডিম বিক্রেতারা।

কাজীর দেউড়ি বাজারের সবজি বিক্রেতা মো. আজম বলেন, আড়তে প্রতিদিন সবজি আসার পরিমাণ কমে যাচ্ছে। গত সপ্তাহের তুলনায় আড়তদাররা সবজির সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে।

পাইকারি ডিম বিক্রেতা খালেদ বলেন, এখন মুরগির ডিমের চাহিদা বাড়তি। স্কুল-কলেজ খোলা, তার ওপর এখন বিয়ের মৌসুম চলছে। যে কারণে ডিমের চাহিদা বেড়েছে। ফলে পোল্ট্রি ফার্ম থেকে নিয়ে এসে সরবরাহকারীরা এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতিটা ডিমের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে ৪ টাকা। বিষয়টা অস্বাভাবিক।

চট্টগ্রাম ডিম ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল শুক্কুর বলেন, ইতিমধ্যে ডিম সরবরাহকারীদের মধ্যে অনেকে কোল্ড স্টোরেজ ডিম সংরক্ষণের কাজ শেষ করেছে। সামনে নিম্ন ও নিম্নমধ্যবিত্তের মানুষদের আমিষের চাহিদা মেটাতে বেগ পেতে হবে।

রিয়াজউদ্দিন বাজার আড়তদার কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফারুক উদ্দিন বলেন, তীব্র তাপদাহ ও ভারি বর্ষণের প্রভাবে দেশের বিভিন্ন মোকাম থেকে সবজির সরবরাহ কমে যাচ্ছে। মাঠ পর্যায়ে কৃষকের ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ফলে দাম বাড়তি।

তিনি আরও বলেন, ঢাকার তুলনায় এখনো চট্টগ্রামে সবজির দাম হাতের নাগালে আছে। কারণ বিভিন্ন উপজেলার উৎপাদিত সবজি চট্টগ্রামের চাহিদায় যোগান দিচ্ছে।

এসকে