জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) পাওনা টাকা চাওয়ায় আ ফ ম কামাল উদ্দীন হলের লন্ড্রিম্যান মাহবুব আলমকে বেধড়ক মারধর করার অভিযোগ উঠেছে।
রবিবার (২৭ মার্চ) দিবাগত রাত আড়াইটায় হলের লন্ড্রি রুমে তাকে মারধর করা হয় বলে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর মৌখিক অভিযোগ করেন।
অভিযুক্তরা হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের ৪৪তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ফরহাদ হোসেন, প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী জাহিদুজ্জামান শাকিল ও অর্থনীতি ৪৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী জিসান আহমেদ রনি। তারা সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের আ ফ ম কামাল উদ্দীন হলের আবাসিক ছাত্র ও শাখা ছাত্রলীগের কর্মী।
লন্ড্রিম্যান মাহবুব আলম জানান, ‘করোনার শুরু থেকে এখন পর্যন্ত হলের ছাত্রদের কাছে প্রায় ১০ হাজার টাকা পাওনা হয়। আমি পাওনা টাকা চাইলে তারা গড়িমসি করেন। ফলে ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে হলে লন্ড্রির কাজ করবো না বলে প্রাধ্যক্ষ স্যারকে লিখিতভাবে জানাই।’
‘পরে গত ২৬ মার্চ প্রাধ্যক্ষ স্যার হলে লন্ড্রি কাজ না করার নির্দিষ্ট কারণ জানতে চান তখন সাহস করে প্রাধ্যক্ষ স্যারকে পাওনা টাকার কথা বলি। তখন প্রাধ্যক্ষ স্যার হলের এক সিনিয়র ছাত্রলীগ নেতাকে আমার পাওনা টাকা আদায় করে দিতে বলেন।’
তিনি আরো জানান, ‘রবিবার রাতে আন্তর্জাতক সম্পর্ক বিভাগের ৪৫ ব্যাচের সামিউল জয় ভাই রুমে ডেকে আমার পাওনা টাকা পরিশোধ করেন। আর আমাকে গালি দিয়ে হল ছেড়ে চলে যেতে বলেন। এরপর লন্ড্রি রুমে ফিরে এসে কাজ শুরু করি।’
‘পরে রাত আড়াইটার দিকে ফরহাদ, শাকিল ও রনি ভাই আসেন। তারা বলেন, ‘তুই কোন হাত দিয়ে বকেয়া টাকা লিখছিস’। আমি চুপ করে থাকায় রনি ভাই দরজার হাতল দিয়ে আমার ডান হাতে আঘাত করেন। এরপর বাকি দুইজনও মারধর শুরু করেন। পরে তারা শিক্ষার্থীদের বকেয়ার লিস্ট নিয়ে চলে যান।’
নাম না প্রকাশের শর্তে হলের এক আবাসিক শিক্ষার্থী বলেন, ‘রাতে হলের লন্ড্রিম্যান মাহবুব আলমকে মারধর করা হয়েছে বলে শুনেছি। তার পিঠে ও হাতে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।’
তবে মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করে অভিযুক্ত ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘লন্ড্রিম্যান মাহবুবকে মারধরের কোন ঘটনা হলে ঘটেনি। সে এইসব বানিয়ে বলেছে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর ও আ ফ ম কামাল উদ্দীন হলের প্রাধ্যক্ষ আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান বলেন, মাহবুব আমাকে ফোন দিয়ে এমন ঘটনা জানিয়েছে। সে হল ছেড়ে দিবে বলেছে। আমি হলে গিয়ে বিষয়টি দেখবো।