ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আদিবাসী জনগোষ্ঠীকে মূলধারায় নিয়ে আসার লক্ষ্যে নির্মিত ৪টি আদিবাসী বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়য়ের ২ বছর যাবৎ সম্মানীভাতা বন্ধ হয়ে রয়েছে। ফলে শিক্ষকগণ মানবেতর জীবন যাপন করছেন। বিদ্যালয়গুলির অর্থায়ন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে করা হয়েছে। তবে দীর্ঘদিন ধরে সম্মানী বন্ধ থাকায় শিক্ষকেরা দুঃশ্চিন্তায় পড়েছেন। এতে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে বিদ্যালয়গুলোর ভবিষ্যৎ।

সদর উপজেলার কালিতলা দিলজান আদিবাসী বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কৃষ্ণপুর আদিবাসী বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ ৪টি বিদ্যালয়ে গিয়ে জানা যায় আদিবাসীদের শিক্ষার মান বৃদ্ধি ও সবার জন্য শিক্ষা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সদর উপজেলায় ৪টি বিদ্যালয় নির্মাণ করা হয়। শিক্ষকও নিয়োগ দেওয়া হয়। প্রতিটি শ্রেণিতে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী পাঠদান শুরু করে। বর্তমানে অন্যান্য সরকারি বিদ্যালয়ের সাথে পাল্লা দিয়ে আদিবাসী বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থীরাও এগিয়ে যাচ্ছে। প্রথম দিকে বিনা পারিশ্রমিকে শিক্ষকেরা পাঠদান চালিয়ে আসার পর ২০১৯-২০২০ সালে প্রত্যেককে ৫ হাজার টাকা করে সম্মানী প্রদান করা হয়। পরবতর্তিতে ২০২১ সাল থেকে অদ্যাবধি শিক্ষকদের সম্মানী বন্ধ রয়েছে। এতে তারা চরম হতাশায় ভুগছেন। সদর উপজেলার মাদারগঞ্জ কৃষ্ণপুর আদিবাসী বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়টি আদিবাসী পল্লীর খুব কাছে অবস্থিত। প্রথমে কোন রকমে কাঁচা ঘরে বিদ্যালয় চালু হয়। ২০১৯-২০ অর্থ বছরে নতুন বিল্ডিং নির্মিত হয়। বর্তমানে ৪/৫ টি কক্ষ রয়েছে বিদ্যালয়টিতে। শিক্ষক রয়েছেন ৪ জন। শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৫০ জন। চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী একজন। বর্তমানে প্রধান শিক্ষক হিসেবে মো. সুজন, সহকারী শিক্ষক হিসেবে লাভলী বেগম, সারমিন আকতার, ফেন্সি বেগম ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী হিসেবে এজবেলা কর্মরত রয়েছেন। ওই দিন ৫ম শ্রেণির ক্লাস রুমটিতে ৩০-৩৫ জন শিক্ষার্থীকে পাঠদান করতে দেখা যায়।

উল্লিখিত ৪টি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকগণ জানান, ২০১৯-২০ সালে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসের মাধ্যমে রুপালী ব্যাংকের একাউন্টের মাধ্যমে তারা সম্মানী ভাতা পেয়েছেন। কিন্তু দীর্ঘ ২ বছর থেকে পাঠদান চালিয়ে আসলেও সম্মানী ভাতা বন্ধ রয়েছে। এ ব্যপারে তারা প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।

বাণিজ্য প্রতিদিনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মাদারগঞ্জ কৃষ্ণপুর আদিবাসী বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির কয়েকজন শিক্ষার্থীর অভিভাবক জানান, আদিবাসী জনগোষ্ঠীকে মূল শ্রোতধারায় নিতে এ বিদ্যালয়গুলোর গুরুত্ব অপরিসীম। তাই যেহেতু প্রধানমন্ত্রীর অর্থায়নে এ বিদ্যালয়গুলো শুরু হয়েছে সেহেতু শিক্ষকদের সম্মানী ভাতার ব্যাপারে পদক্ষেপ গ্রহন করা জরুরি।

১২ জুন রোববার ওই ৪টি বিদ্যালয়ের ১৬ জন শিক্ষক জেলা প্রশাসক মো. মাহবুবুর রহমানের সাথে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় সম্মানী ভাতা বন্ধ থাকার বিষয়টি জানালে তিনি সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু তাহের মো. সামসুজ্জামানকে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য বলেন।

এ ব্যাপারে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তাহের মো. সামসুজ্জামান বলেন, যেহেতু এটি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অর্থায়নে পরিচালিত হতো। বর্তমানে অর্থায়ন বন্ধ রয়েছে তাই সম্মানী ভাতা শিক্ষকোরা পাচ্ছেন না। পুণরায় অর্থায়ন চালু হলে শিক্ষকেরা আবার সম্মানী ভাতা পাবেন।