জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে এক মাঠে বহুতল ভবন নির্মাণ, অন্য মাঠে সংস্কারের দীর্ঘসূত্রীতার কারণে বন্ধ খেলাধুলা ও শরীর চর্চা। এমনকি মাঠের অভাবে বন্ধ রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্বেগে শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের জন্য আয়োজিত বার্ষিক ক্রিকেট টুর্নামেন্ট ও ফুটবল লীগগুলো। এমন অপরিকল্পিত ব্যাবস্থাপনায় ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ও বাধা উপেক্ষা করেই মুক্ত মঞ্চ নামে পরিচিত ‘ গাহি সাম্যের গান মঞ্চ’সংলগ্ন মাঠটিতে বহুতল প্রশাসনিক ভবন নির্মাণ শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তার অল্প কিছুদিন পরেই (মার্চ, ২০২২) বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘শেখ রাসেল’কেন্দ্রীয় খেলার মাঠের সংস্কার কাজ শুরু করে, যা এখনো চলমান রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের আর তৃতীয় কোন মাঠ এবং জিমনেসিয়াম না থাকায় দীর্ঘ দশ মাস যাবত খেলাধুলা, শরীর চর্চাসহ এবং অন্য সকল বৃহৎ কোন সামাজিক আয়োজন কারা সম্ভব হচ্ছেনা।

এ বিষয়ে কলা অনুষদের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের দ্বিতীয় শিক্ষার্থী তাসনিমুল মুবিন বলেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে কোন রকম মূল্যায়ন না করে একটি মাঠে ভবন নির্মান করা হল। বিশ্ববিদ্যালয়ের অবশিষ্ট একমাত্র খেলার মাঠটিও (শেখ রাসেল সেন্ট্রাল ফিল্ড) প্রায় এক বছর থেকে বন্ধ হয়ে আছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অদূরদর্শী পরিকল্পনার ফলেই খেলার মাঠ সংকটে পড়েছে সাধারণ শিক্ষার্থীর। সামাজিক অনুষদের ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের আরেক শিক্ষার্থী তানভীর আহমেদ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের মত একটি যায়গায় যদি খেলাধূলার জন্য উন্মুক্ত মাঠ না পাওয়া যায় এটা প্রশাসনের চরম ব্যার্থতা। দীর্ঘ সময় এমন অবস্থার ফলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা মাঠের খেলাধূলা থেকে মুখ ফিরিয়ে মাদকাসক্তির মত বিপথে পরিচালিত হতে পারে। এ বিষয়গুলো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের মাথায় রাখা উচিৎ ছিল।’

বাণিজ্য প্রতিদিনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শারীরিক শিক্ষা বিভাগের প্রধানে থাকা দ্বায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা জিয়া উদ্দিন মন্ডল জানান, মাঠ সংকটের কারণে আমাদের নিয়মিত বার্ষিক টুর্নামেন্টগুলো আয়োজন করতে পারছিনা। আন্তবিশ্ববিদ্যালয় ফুটবল এবং ক্রিকেট টুর্নামেন্টগুলোতে ভরাডুবির অন্যতম একটি কারণ হচ্ছে মাঠের অভাব। যার কারণে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলোয়াড়দের আমরা যথেষ্ট প্র্যাকটিস করাতে পারিনি। প্রশাসনের আছে আমরা অনুরোধ জানিয়েছি, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মাঠের সংস্কার কাজ শেষ করে আমাদের কাছে হস্তান্তর করে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকল্প পরিচালক জোবায়ের হোসেনের নিকট এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, খেলাধুলার জন্য আলাদা কোন মাঠ আছে কিনা সেটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের চিন্তার বিষয়। আমার কাজ বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রকল্পগুলো সঠিকভাবে এবং যথাসময়ে হচ্ছে কিনা তার দেখাশুনা করা। এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মাঠ সংস্কারের যে প্রকল্পটি তার আরো কিছুদিন রয়েছে। আমার চেষ্টায় আছে এই সময়ের মধ্যে মাঠের কাজ সম্পন্ন করতে।’