শাকিব খানের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ নিয়ে মুখ খুলেছেন তার অস্ট্রেলিয়ান আইনজীবী উপল আমিন। সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশিত ৩ মিনিট ২৪ সেকেন্ডের একক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেছেন, শাকিবের বিরুদ্ধে প্রযোজক রহমত উল্ল্যাহর আনিতি অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা।

উপল আমিন জানিয়েছেন, তিনি অস্ট্রেলিয়ার সিডনির সেন্ট জর্জ গোয়েন্দা কার্যালয়ের বিভাগীয় প্রধানের সঙ্গে কথা বলেছেন। গোয়েন্দা শাখার কর্মকর্তা মাইকেল বাগ তাকে শাকিব খানের ব্যাপারে চারটি বিষয় নিশ্চিত করেছেন।

এর মধ্যে আছে—১. শাকিব খানের নামে কখনও কোনো মামলা হয়নি অস্ট্রেলিয়ায়। ২. শাকিব খানকে কখনও কোনো ব্যাপারে অস্ট্রেলিয়াতে গ্রেফতার করা হয়নি। ৩. যেহেতু তিনি গ্রেফতার হননি, সেহেতু উনার পালানোর কথা আসেই না। এ ব্যাপারে পুলিশের তদন্ত শেষ এবং এই বিষয়টি পুরোপুরি নিষ্পত্তি করে দেওয়া হয়েছে। ৪. শাকিব খানের নামে কখনও কোনো অ্যারেস্ট ওয়ারেন্ট ছিল না।

বাণিজ্য প্রতিদিনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

উপল আমিন তার ভিডিওতে বলেন, ‘কখনও তার (শাকিব খান) নামে কোনো অ্যারেস্ট ওয়ারেন্ট ছিল না, মামলা ছিল না, তাকে কখনও গ্রেফতার করা হয়নি। তাহলে অস্ট্রেলিয়া থেকে তার তো পালানোর কোনো প্রশ্নই আসে না।’

ভিডিওর শুরুতে উপল আমিন বলেছেন, ‘অভিযোগ তো মানুষ করতেই পারে। কিন্তু বিষয়টা হচ্ছে, অভিযোগ করার পর কী হয়েছিল? নারী সহপ্রযোজক ও রহমত উল্ল্যাহ শাকিব খানের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ দিয়েছিল সিডনি অস্ট্রেলিয়াতে, এই বিষয় তো শাকিব খান অস্বীকার করেননি। এই যে রহমত উল্ল্যাহ মিডিয়ার কাছে এসে বলছেন, শাকিব খানের বিরুদ্ধে অভিযোগ হওয়ার পর তাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তার নামে মামলা করা হয়েছিল। তিনি নাকি দুবার অস্ট্রেলিয়াতে মামলা থেকে পালিয়ে গিয়েছিলেন। অস্ট্রেলিয়াতে যে কেউ পুলিশ স্টেশনে গিয়ে যেকোনো ব্যাপারে একটা রিপোর্ট করলে, তাকে একটা ইভেন্ট নম্বর দেওয়া হয়। বাংলাদেশে জিডি বলা হয়। আর আমাদের অস্ট্রেলিয়াতে ইভেন্ট নম্বর বলা হয়। দুটি জিনিস কিন্তু একই। এখন একটা ইভেন্ট নম্বর পাওয়া, মানে এই নয় যে কারও নামে কোনো মামলা দেওয়া হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘রহমত উল্ল্যাহ যে এই কথাগুলো বলেছেন, এটা আমার কাছে যথেষ্ট সন্দেহজনক মনে হয়েছিল। আমি শাকিব খানের অস্ট্রেলিয়ান আইনজীবী হিসেবে এই ব্যাপারগুলো চেক করেছি পুলিশের সঙ্গে। আমি সেন্ট জর্জ ডিটেকটিভ অফিসে ওদের হেড অব ডিপার্টমেন্টের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেছি। ডিটেকটিভ সার্জেন্ট মাইকেল বাগের সঙ্গে কথা বলেছি এবং তিনি আমাকে কয়েকটি বিষয়ে নিশ্চিত করেছেন।’

ভিডিওর একপর্যায়ে উপল আমিন এ–ও বলেছেন, ‘আমি শাকিব খানের অস্ট্রেলিয়ায় নিযুক্ত আইনজীবী আপনাদের বলতে চাইছি যে বাংলাদেশে তার বিরুদ্ধে যা প্রোপাগান্ডা চলছে, আমি মনে করি, তা সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যমূলক। আমার ক্লায়েন্ট শাকিব খানের জনপ্রিয়তা নষ্ট করার জন্য এই চক্রান্ত চলছে। শাকিব খানের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ রহমত উল্ল্যাহ এনেছেন, এটা একটা অর্থনৈতিক চক্রান্ত। এটা একটা ফাইন্যান্সিয়াল কন্সপিরেসি। আমার ক্লায়েন্টের কাছ থেকে টাকা আদায়ের জন্য রহমত উল্লাহ এই কাজটা করেছেন।’

কথায় কথায় উপল আমিন বললেন, ‘আমার ক্লায়েন্ট শাকিব খান ২০১৬ সালে অস্ট্রেলিয়ায় এসেছিলেন এবং ২০১৮ সালেও এসেছিলেন। অস্ট্রেলিয়ায় দুবারই—কোনোবারই তাকে গ্রেফতার করা হয়নি। তিনি কখনও পালিয়ে যাননি। আমি অস্ট্রেলিয়া থেকে আপনাদের যা বলছি, এটা সম্পূর্ণ অস্ট্রেলিয়ার আইনের ভিত্তিতে কথা বললাম। আমার ক্লায়েন্ট শাকিব খান নির্দোষ—এ ব্যাপারে আমি একটা কনফার্মেশন লেটার পাব অস্ট্রেলিয়ান পুলিশ অথরটির কাছ থেকে এবং সেটাও আপনাদের দেখাব। রহমত উল্ল্যাহ যে অভিযোগ করেছেন, এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা। তার উচিত, এই অভিযোগগুলো প্রত্যাহার করা।’

এর আগে শাকিব খানের বিরুদ্ধে গেল ১৫ মার্চ প্রযোজক রহমত উল্ল্যাহ লিখিত আকারে বিস্তর অভিযোগ জমা দেন প্রযোজক-পরিবেশক, পরিচালক, শিল্পী সমিতি ও ক্যামেরাম্যান সমিতিতে।

সেই অভিযোগকে পুরোপুরি মিথ্যা বলে জানিয়েছেন শাকিব খান। রহমত উল্ল্যাহকে ভুয়া প্রযোজক দাবি করে তিনি গুলশান থানায় মামলা করতে যান। কিন্তু পুলিশ তার মামলা নেয়নি। পরে তিনি ডিবি কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ করেন।