রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় প্রক্সিকাণ্ডে যুক্ত থাকার অভিযোগে জালিয়াতি চক্রের মূল হোতা ছাত্রলীগের এক নেতা হাসিবুল ইসলাম শান্তকে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

বুধবার রাতে নগরীর কাটাখালি এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়। পরে তাকে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের ডেপুটি কমিশনার বিজয় বসাক।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হাসিবুল ইসলাম শান্ত বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক ও নাটোর জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। তিনি রাবির ইতিহাস বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। গ্রেপ্তারের পর তার কাছ থেকে অসংখ্য এডমিট কার্ড পেয়েছে পুলিশ। এর পূর্বেও শান্তর বিরুদ্ধে ভর্তি বাণিজ্য, সিট বাণিজ্যের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে।

বাণিজ্য প্রতিদিনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

এদিকে মঙ্গলবার ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় প্রক্সি দিতে গিয়ে আটক হয়েছে রাবির লোক প্রশাসন বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের স্বপন হোসাইন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ১০১৫-১৬ সেশনের শিক্ষার্থী এনামুল হক।

এদিকে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বিজয় কুমার বসাক জানান, ‘গতকাল আটক প্রক্সিদাতাদের তথ্য অনুযায়ী আমরা নগরীর কাটাখালি এলাকা থেকে শান্তকে গ্রেপ্তার করি। তিনি ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী। আমাদের কাছে সকল অপরাধীই অপরাধী। সে যেই রাজনৈতিক মতাদর্শের হোক না কেন।

রাবি প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, গতকাল মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এদিন পরীক্ষায় জালিয়াতি ও অন্যের হয়ে প্রক্সি দেওয়ার অভিযোগে ৭জনকে আটক করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, হাসিবুল ইসলাম শান্ত প্রক্সিদাতাদের সঙ্গে ৫০-৬০ হাজার টাকার বিনিময়ে অন্যের হয়ে পরীক্ষা দেওয়ার চুক্তি করেন। গতকাল মঙ্গলবার আটক প্রক্সিদাতাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তারা এ তথ্য জানান।

বুধবার সকালে ছাত্রলীগ নেতা শান্তসহ ১৬ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। নগরীর মতিহার ও চন্দ্রিমা থানায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষে মামলাগুলো দায়ের করেন রেজিস্ট্রার অধ্যাপক আবদুস সালাম। তাদের মধ্যে ৯জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু জানান, আমরা কিছুক্ষণ আগে বিষয়টি জানলাম। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত যেই থাকুক না কেন অবশ্যই তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।