সবাই প্রস্তুত থাকো এই যে নকশা চলছে আগামী ঈদের পরে ভোলাহাট নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উম্মে তাবাসসুমকে গামছা পরিয়ে এই উপজেলা থেকে বিদায় করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলা চেয়ারম্যান মো. রাব্বুল হোসেন।

তিনি বলেন, এখানে আওয়ামীলীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ লাড়াই করে টিকে আছে। তাই এখানে ভয় দেখানোর কিছু নেই। কিভাবে তুমি আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যানকে সরিয়ে জামায়াত বিএনপির লোককে বসানোর চেষ্টার করছো, এটা তোমাকে ঈদের পরে ঠিক দেখানো হবে। তোমার ১৪ গুষ্টি নাম ভুলিয়ে দেয়া হবে।

গত সোমবার বিকেল ৫ টার দিকে ভোলাহাট উপজেলার মেডিকেলমোড়ে ভোলাহাট উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের ডাকে শান্তি সমাবেশ তিনি এমন বক্তব্য দেন। ২ মিনিট ৪৩ সেকেন্ডের প্রকাশিত ভিডিওটিতে পুরো সময়জুড়ে ইউএনও কে নিয়ে বিষোদগার করেন।

বাণিজ্য প্রতিদিনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

উপজেলা চেয়ারম্যান মো. রাব্বুল হোসেন বলেন, আমাকে বরখাস্ত করার জন্য উৎপাত চলছে। আমার কর্মচারী চালকের ওভারটাইম বেতন দেওয়া হচ্ছেনা। শুধু জামায়াত-বিএনপি নয় প্রশাসনে বসে শেখ হাসির নামে যারা চলছে বর্তমান ইউএনও ষড়যন্ত্রের সাথে যুক্তু। এখানে দাঁত ভাঙা জবাব কেউ দেখেনি, সবাই চুপচাপ আছে ইনশাআল্লাহ ঈদের পরে সেই রুপ দেখতে পাবে। আওয়ামীলীগের চেয়ারম্যানকে সরানোর পাঁয়তারা করছো। ঈদের পরে তোমার চৌদ্দ গুষ্টির দাঁত ভেঙে দেওয়া হবে।

তিনি আওয়ামীলীগ নেতাদের উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনারা এই ইউএনওকে কন্ট্রোল করুন, তা না হলে বিদায় করুন। ঈদের পরে জামায়াত বিএনপির আন্দোলন তীব্রতর হলে এই ইউএনও ভোলাহাটের মাটিতে থাকলে আমাদের আওয়ামীলীগ যুবলীগ ছাত্রলীগের অর্ধেক নেতাকর্মীকে কারাগারে থাকতে হবে।

উপজেলা চেয়ারম্যান হুঁশিয়ারি করে বলেন, সামনে ২৫ তারিখের মধ্যে কোন স্টেপ না নেওয়া হলে যতগুলো প্রকল্পের কাজ চলছে আমিও কোন চেয়ারম্যান মেম্বারের প্রকল্পে স্বাক্ষর করবো না।

সমাবেশে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন-উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক ইয়াসিন শাহ,উপজেলা যুবলীগের সিনিয়র সহসভাপতি ও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান গরিবুল্লাহ দবিরসহ ছাত্র লীগ,যুবলীগসহ সহযোগি সংগঠনের নেতা কর্মীরা। এতে সভাপতিত্ব করেন-উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রেজাউল করিম বাবলু। উপজেলা চেয়ারম্যান একজন নারী নির্বাহী কর্মকর্তাকে নিয়ে এমন অশালিন বক্তব্য দেয়ায় ভোলাহাট উপজেলায় টক অবদ্যা টাউনে পরিনত হয়েছে।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে চাইলে ভোলাহাট উপজেলা চেয়ারম্যান মো: রাব্বুল হোসেন বলেন, ভোলাহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিরুদ্ধে অনেক অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। তবে গামছা পরিরে বিদায় করার ঘোষণা আমি দেইনি। এই ভিডিওটি এডিট করা হতে পারে।

প্রতিবাদ সভায় সভাপতিত্ব করেন, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রেজাউল করিম বাবু। তিনি মুঠাফোনে বলেন, চেয়ারম্যান ইউএনওকে হুমকি দিবে বিষয়টি কারও জানা ছিলনা। প্রকাশ্যে হুমকি দেয়া ঠিক হয়নি।

অনেক চেষ্টার করেও যোগাযোগ করা যায়নি ভোলাহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উম্মে তাবাসসুমের সঙ্গে। সকাল থেকে দুপুর থেকে ৫ টা পর্যন্ত তাকে একাধিকবার কল দেয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি। এমনকি ক্ষুদে বার্তা পাঠালেও সাড়া দেননি তিনি।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামীলীগরে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মুহা: জিয়াউর রহমান বলেন, একজন উপজেলা চেয়ারম্যানের কাছ থেকে প্রকাশ্যে নারী ইউএনওকে হুমকি দেয়া দল সমর্থন করেনা। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখব।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আহমেদ মাহবুব-উল-ইসলাম বলেন, চেয়ারম্যানের বক্তব্য দেয়ার ভিডিওটি আমাদের নজরে এসেছে। বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।