ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ফলিত পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তি বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শরীফুজ্জামান শোভন নামের এক শিক্ষার্থীকে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। পূর্ব শত্রুতার জের ধরে সহপাঠীরা মারধর করেছেন বলে জানা গেছে। গত রোববার সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ঝাল চত্বরে এ ঘটনা ঘটে। মারধরের ঘটনায় আহত হলে ভুক্তভোগী শোভনকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে নেওয়া হয়। পরে দুপুরে প্রক্টর ও ছাত্র উপদেষ্টা বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছে মারধরের শিকার ওই শিক্ষার্থী।

প্রত্যক্ষদর্শী ও অভিযোগ পত্র সূত্রে জানা যায়, শোভন ক্লাস করার পর আনুমানিক সাড়ে ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডায়না চত্বরের দিকে যায়। সে সময় ইংরেজি বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের মাসুদের নেতৃত্বে হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সজিব ও বাংলা বিভাগের তৌহিদসহ ১০-১২ জনের একটি সংঘবদ্ধ দল তার উপর অতর্কিত হামলা করে। এ সময় তাকে কিল ঘুষি ও লাথি মেরে রাস্তায় ফেলে দিয়ে মাথায় আঘাত করতে থাকে তারা। এতে মাথায় মারাত্নক আঘাত পায় শোভন। এ ছাড়া তার নাক মুখ ও হাতের আঙ্গুলে মারাত্মক জখমসহ রক্তপাত হয়। মারধরের সময় অভিযুক্তরা শোভনের হাতঘড়ি, চশমা ও মানিব্যাগ কেড়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ পত্রে উল্লেখ রয়েছে। এ ছাড়া তাকে ক্যাম্পাসে দেখলে মেরে ফেলার হুমকিও দেওয়া হয় বলে জানান ভুক্তভোগী শোভন।

জানা গেছে, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে প্রতিশোধ নিতে শোভনের উপর হামলা চালায় অভিযুক্তরা। গত ২৫ মে ফলিত পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তি বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শরীফুজ্জামান শোভনের সাথে একই বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ওলিউর রহমান ওলির সাথে মতের অমিলের কারণে মনোমালিন্য হয়। এক পর্যায়ে তাদের মাঝে ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে। এতে ওলি ক্ষুব্ধ হয়ে মাসুদ, তাওহীদ তালুকদার ও সজিব আহমেদসহ বেশ কয়েকজন বন্ধুকে ডাকে শোভনকে মারার জন্য। পরে শোভন ও তার বন্ধুরা তাদেরকে প্রতিহত করে। এতে তারা প্রতিশোধ নেয়ার জন্য উদগ্রীব হয়ে পড়ে।

বাণিজ্য প্রতিদিনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী শরিফুজ্জামান শোভন বলেন, “গত ২৫ মে আমার ক্লাসমেট ওলিউর রহমানের সাথে ব্যক্তিগত কার্যকালাপ ও মতের অমিলের কারণে ধাক্কাধাক্কি হয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে মাসুদ রানা ও তার হলের বন্ধুদের নিয়ে ওলি আমাকে মারার জন্যে আসে৷ কিন্ত আমি ও আমার বন্ধু সাকিব তাদেরকে প্রতিহত করি। পরে বিষয়টি মিটমাট হয়ে যায়। কিন্তু আজ মাসুদ আমাকে একা পেয়ে তার বন্ধু তৌহিদ ও সজিবসহ আরো ১০ থেকে ১২ জনকে সাথে নিয়ে আমাকে অতর্কিত হামলা করে লাথি, ঘুষি মেরে মাথায়, হাতে ও মুখে জখম করেছে।”

বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসাকেন্দ্রের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. ওয়াহিদুল হাসান জানান, “কিল-ঘুষির আঘাতে মাথায় সে প্রচুর আঘাত পেয়েছে এবং মাথা ফুলে গেছে। মাথায় বড় কোন সমস্যা হয়েছে কিনা এর জন্য সিটি স্ক্যান করার পরামর্শ দিয়েছি।”

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত তাওহীদ তালুকদার ও মাসুদের সাথে একাধিকবার মুঠোফোন যোগাযোগের চেষ্টা করলেও যোগাযোগ সম্ভব হয়নি। আরেক অভিযুক্ত সজিব আহমেদ বলেন, এ ব্যাপারে আমি কিছু জানি না। মারামারির সময় আমি হলে ছিলাম। আমার গেস্টের জন্য নাস্তা আনতে একবার ঝাল চত্বরে গিয়েছিলাম, তখন মারামারি হয়েছে কিনা জানি না। আমার পরশুদিন সেমিস্টার ফাইনাল, আমি এখন পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছি।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, “শোভনের নিকট থেকে আমরা লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি আমলে নেওয়া হয়েছে। আগামীকাল ছাত্র উপদেষ্টা ও প্রক্টর অফিসের যৌথ সভা ডাকা হয়েছে। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”