ঋণের টাকা পরিশোধের জন্য ঢাকায় রিকশা চালাতে গিয়ে কোটাবিরোধী আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে লাশ হয়ে ফিরলো শেরপুরের বকুল মিয়া(২৭)।

বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) উত্তরা আজমপুর রেইগেইটে কোটাবিরোধী আন্দোলনে তিনি গুলিবিদ্ধ হন । পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

বকুল মিয়া শেরপুর জেলার শ্রীবরদী উপজেলার গরজরিপা ইউনিয়নের চাউলিয়া বাজারের সামছুল হকের ছোট ছেলে।

বাণিজ্য প্রতিদিনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

জানা যায়, গত ১২ জুলাই বকুল শেরপুর থেকে কাজের সন্ধানে ঢাকার দক্ষিণখান যান। সেখানে ভাড়ায় রিকশা চালাতেন তিনি। গ্রামে কাজ না থাকায় ঢাকায় রিকশা চালাতে যাওয়া ছাড়া উপায়ও ছিলোনা তার। চার সদস্যের পরিবারে সেই ছিল উপার্জনের একমাত্র ব্যক্তি।

এলাকাবাসী জানান, নিহত রিকশাচালক বকুল কোনো রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিল না।

নিহত বকুল মিয়ার স্ত্রী মনিকা বেগম বলেন, এক ছেলে এক মেয়েকে নিয়ে আমাদের সংসার ভালোই যাচ্ছিল। গেল ঈদের পর থেকে কাজ-কাম কম থাকায় ধার দেনা করে আমাদের সংসার চলতো। ধারের টাকার পরিমাণটা বেশি হয়ে যাওয়ায় তা পরিশোধ করার জন্য আমার জামাই রিকশা চালাতে যায়। কিন্তু ঋণের টাকা তার আর পরিশোধ করা হইলনা, কোটাবিরোধী আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে তার মৃত্যু হয়। আমি আগে জানলে আমার জামাইরে ঢাকায় যাইতে দিতাম না।

বৃহস্পতিবার(১৮ জুলাই) সকালেও আমার সাথে কথা হয়। বিকেলে খবর আসে গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে মারা গেছে।

পরে আত্মীয়-স্বজনদের সাথে যোগাযোগ করে ঢাকা থেকে লাশ বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। আমার স্বামীর মৃত্যুতে আমার ছেলে মাহাদী হাসান শুভ (১২) ও মেয়ে বুসরাত জান্নাত মিতু (০৫)কে ভরণ-পোষণ পড়ালেখা করানো অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

ওই এলাকার হুমায়ুন কবির বলেন, পরিবারটা এখন একদম অসহায়। বকুল কাজ করে তাদের সংসার চালাইতো এখন ওর ছেলে-মেয়েকে কে দেখবে? দুইজনই মাদরাসায় পড়ে। ঢাকায় গেল কাজ করতে, কেমনে কী হইল লাশ হয়ে ফিরল।

এ বিষয়ে শ্রীবরদী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাইয়ুম খান সিদ্দিকী বলেন, আমি ঢাকা থেকে লাশ আসার বিষয়টি খোঁজ নিয়েছি। সে ঢাকায় রিকশা চালাত।

গরজরিপা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল বলেন, বকুলের পরিবারের সাথে আমার কথা হয়েছে। এই পরিবারটি একদম গরিব। এক ছেলে এক মেয়ে আছে তাদের। আমি ব্যক্তিগত ভাবে তাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করব এবং বকুল মিয়ার ছেলে শুভ যে মাদরাসায় পড়ে আমি সেই মাদরাসার সভাপতি সেজন্য তার পড়ালেখার যে খরচ সেটা আমি দেব।

এসকে