৯ নভেম্বর ২০২৪ টেক্সটাইল ট্যালেন্ট হান্ট সিজন ৮ এর সফল সমাপ্তির পর, টেক্সটাইল টুডে ইনোভেশন হাব টেক্সটাইল ট্যালেন্ট হান্ট (টিটিএইচ) সিজন ৯ এর গ্র্যান্ড লঞ্চিংয়ের আয়োজন করেছে। ৯ নভেম্বর, ২০২৪ ঢাকার প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে এই গ্র্যান্ড লঞ্চিং অনুষ্ঠিত হয়। টেক্সটাইল ট্যালেন্ট হান্ট সিজন ৯, প্রেজেন্টেড বাই সেন্ট্রো টেক্স লিমিটেড এবং পাওয়ার্ড বাই ইউরো ডাই-সিটিসি এর লক্ষ্য হল, সেক্টরে কর্মরত ব্যক্তিদের মধ্যে ইনভেশন কালচার ছড়িয়ে দেয়া এবং বৃহত্তরভাবে ব্যবসায় উদ্ভাবন করা। প্রফেসর ডক্টর মোহাম্মদ জুলহাস উদ্দিন, ভাইস চ্যান্সেলর, বুটেক্স টেক্সটাইল ট্যালেন্ট হান্ট সিজন ৯ গ্র্যান্ড লঞ্চিং ঘোষনা করেন। তিনি তারেক আমিন, প্রতিষ্ঠাতা এবং সিইও, টেক্সটাইল টুডে ইনোভেশন হাবকে অভিনন্দন জানান, দীর্ঘ সময় ধরে এই ধরনের উদ্ভাবনী অনুষ্ঠান পরিচালনা করার জন্য।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, মোহাম্মদ হাতেম, সভাপতি, বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিকেএমইএ); এনামুল হক খান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, অনন্ত কোম্পানি; ইঞ্জি. এহসানুল করিম কায়সার, আহ্বায়ক, ইনস্টিটিউশন অব টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যান্ড টেকনোলজিস্ট (আইটিইটি); মোফাজ্জল হোসেন পাভেল, সভাপতি, বাংলাদেশ গার্মেন্টস বায়িং হাউস অ্যাসোসিয়েশন (বিজিবিএ); আবরার হোসেন সায়েম, সভাপতি, বাংলাদেশ এপারেল ইউথ লিডার্স এসোসিয়েশন (বায়লা); এবং এটিএম মাহাবুবুল আলম চৌধুরী, নির্বাহী পরিচালক, মাসকো গ্রুপ। টিটিএইচ জাজেস প্যানেলের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. আইয়ুব নবী খান প্রো-ভিসি, বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অব ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনোলজি, এবং সদস্য সচিব মোহাম্মদ আব্বাস উদ্দিন (শিয়াক) সহ আরও অনেক বিশিষ্ট শিল্প নেতা, বিশেষজ্ঞ, কারখানার মালিক ও সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন। বস্ত্র এবং পোশাক শিল্প ক্রমাগত বিকশিত হচ্ছে। উদ্ভাবনী পণ্য, টেকসই অনুশীলন এবং সৃজনশীল সমাধানের চাহিদা বাড়ছে। এই কারণেই টেক্সটাইল আন্ডারগ্রাজুয়েটদের শিল্পে সফল হওয়ার জন্য উদ্ভাবনীতা অত্যাবশ্যক। শিল্পের দৃষ্টিভঙ্গি অনুসরণ করে, টেক্সটাইল টুডে ইনোভেশন হাব টেক্সটাইল ট্যালেন্ট হান্টের মাধ্যমে ব্যপক প্রভাব বিস্তারকারী উদ্যোগের মাধ্যমে ইনোভেশন মাস্টারমাইন্ড (ছাত্রদের) মেধা বিকাশের জন্য কাজ করে, যারা ভবিষ্যতে শিল্পকে নেতৃত্ব দেবে। প্রফেসর জুলহাস উদ্দিন বলেন, “টেক্সটাইল টুডে উদ্ভাবনকে অনুপ্রাণিত করছে। এর জন্য দরকার মেধাবী ছাত্রদের পাশাপাশি মেধাবী মেন্টর এবং বাজেট। এ জন্য বাজেট হওয়া উচিত ১ কোটি টাকা। “আমি আশা করি এই প্রোগ্রামটি শিল্পে উদ্ভাবনী সমাধান নিয়ে আসবে। এই বছর টেলেন্ট হান্ট প্রতিযোগিতায় ৩০০০ এরও বেশি ছাত্রছাত্রী অংশগ্রহণ করবে”বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

বিকেএমইএ-এর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম মাহবুব আলম চৌধুরীরকে লক্ষ্য করে বলেন, “বিদেশী এক্সপার্টদের ওপর নির্ভরতা কমাতে আমাদের তার মতো আরও উদ্ভাবনী নেতা দরকার। এবং টেক্সটাইল ট্যালেন্ট হান্ট শিল্পের জন্য এমন উদ্ভাবনী নেতা তৈরি করছে।” হাতেম টেক্সটাইল টুডে ইনোভেশন হাবকে বিজিএমইএ এবং বিকেএমইএর আরএন্ডডি সেলের সাথে বিভিন্ন দেশের আইন তদন্ত করে সরকারকে পরামর্শ দেওয়ার জন্য বিভিন্ন সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করার জন্যও আহ্বান করেন। আইটিইট-এর আহ্বায়ক ইঞ্জি. এহসানুল করিম কায়সার বলেন, “টেক্সটাইল ট্যালেন্ট হান্ট হল ভবিষ্যৎ নেতাদের গড়ে তোলার জন্য একটি উদ্ভাবনী প্রচেষ্টা এবং আইটিইট এই প্রোগ্রাম বাস্তবায়নে যথাসম্ভব সহায়তা করবে।”

বাণিজ্য প্রতিদিনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

বিজিবিএ-এর সভাপতি মোফাজ্জল হোসেন পাভেল বলেন, “আমরা যদি আমাদের শিক্ষার্থীদের সঠিক দিকনির্দেশনা এবং সংস্থান দেই, তাহলে আমরা প্রবাসীদের ওপর নির্ভরশীল কমাতে পারব এবং টেক্সটাইল ট্যালেন্ট হান্ট আমাদের ভবিষ্যত নেতা তৈরির জন্য এমন একটি কর্মসূচি।”তিনি বিজিবিএ এবং তার কোম্পানি ডংগি সোর্সিংয়ের পক্ষ থেকে পূর্ণ সহায়তার আশ্বাস দেন।

আবরার হোসেন সায়েম, সভাপতি, বায়লা বলেন, “টেক্সটাইল শিল্প গতিশীলতায় পরিপূর্ণ এবং চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে এবং প্রতিযোগিতামূলক হতে হলে উদ্ভাবন আবশ্যক।” প্রফেসর ড. আইয়ুব নবী খান বলেন, “বস্ত্র ও পোশাক শিল্পের জন্য একটি জ্ঞানভিত্তিক সম্প্রদায় গড়ে তোলা গুরুত্বপূর্ণ যা টেক্সটাইল টুডে ইনোভেশন হাব নিরলসভাবে করে যাচ্ছে। সরকার এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে এ প্রচেষ্টায় এগিয়ে আসতে হবে।”

অনন্ত কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এনামুল হক খান বলেন, “আমরা যখন টেক্সটাইল ও পোশাক রপ্তানি ১০০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার লক্ষ্যে কাজ করছি, বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছি। একদিকে পন্যের দাম কমছে অন্যদিকে শ্রমিকদের বেতন ও গ্যাস সংকট বাড়ছে। এই সমস্ত চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায়, টেক্সটাইল ট্যালেন্ট হান্টের উদ্ভাবনী প্রকল্পগুলি ১০০ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।”

টেক্সটাইল ট্যালেন্ট হান্টের সংগঠক তারেক আমিন বলেন, “টিটিএইচ উৎসাহী এবং চ্যালেঞ্জপ্রিয় শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ ও গ্রুমিং, আইডিয়া অডিশন, অ্যাপটিটিউড টেস্ট এবং নিবিড় তত্ত্বাবধানে গবেষণা বা উদ্ভাবনী প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে ইনোভেশন মাস্টারমাইন্ডে (আইএম) রূপান্তরিত করার জন্য খুঁজছে।” টিটিএইচ ৮ম সিজনের মতো, সিজন ৯-এ জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতার মাধ্যমে প্রায় ১০০ জন শিক্ষার্থীকে নির্বাচিত করা হবে। তারা প্রশিক্ষণ ও গ্রুমিং, আইডিয়া অডিশন, অ্যাপটিটিউড টেস্ট এবং নিবিড় তত্ত্বাবধানে গবেষণা বা উদ্ভাবনী প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে তাদের উদ্ভাবনী মাস্টারমাইন্ডে (IMs) রূপান্তরিত করা হবে। সারা দেশের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রায় ২০০০ শিক্ষার্থী প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করবে বলে আশা করা হচ্ছে। “এই ৯ম সিজনে, শিল্পকে ব্যাপকভাবে সম্পৃক্ত করার মাধ্যমে এবং একই সাথে, সমস্ত নেতৃস্থানীয় সরবরাহকারীদের সাথে সংযোগ স্থাপনের মাধ্যমে আমরা সমস্ত উদ্ভাবনী প্রকল্পগুলি সম্পাদন করব – যা শিল্পের দৈনন্দিন ব্যবহারিক এবং সমালোচনামূলক সমস্যার সমাধান হবে,” বলেন তারেক আমিন। টেক্সটাইল ট্যালেন্ট হান্ট টেক্সটাইল টুডে ইনোভেশন হাবের ৩০টিরও বেশি অংশীদার কারখানাকে শিল্পের নেতা/বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে শিল্পের উদ্ভাবনের প্রয়োজনে ৩০এর অধিক ‘প্র্যাকটিক্যালি টেস্টেড ইনোভেশন মডেল’ সম্পূর্ণ করতে নিযুক্ত করবে। যা বস্ত্র এবং পোশাক শিল্পকে তাৎক্ষণিক ফলাফল প্রদান করবে।

শিল্প নেতা/বিশেষজ্ঞ, শিক্ষাবিদ এবং টেক্সটাইল টুডে ইনোভেশন হাবের নিজস্ব সমন্বয়কারীরা এই প্রকল্পগুলি কার্যকর করার জন্য কাজ করবেন। সেরা ১০০ ইনোভেশন মাস্টারমাইন্ড ৩০ লাখ টাকা সমামানের প্রশিক্ষণ পাবেন। এবং তারা অতিরিক্ত ১২ লাখ টাকা পর্যন্ত বৃত্তিও পাবে। “প্রতিটি প্রকল্পে, ৩ জন ইনোবেশন মাস্টারমাইন্ড এই প্রকল্পগুলির সাথে যুক্ত থাকবে, সাথে থাকবেন শিল্প বিশেষজ্ঞ, শিক্ষাবিদ এবং টেক্সটাইল টুডে ইনোভেশন হাবের নিজস্ব সমন্বয়কারী। এভাবে প্রতিটি দল গঠন করা হবে। তাদের ফলাফল টেক্সটাইল টুডে ইনোভেশন হাব ইনোভেশন কনফারেন্স নামে একটি প্রদর্শনীর মাধ্যমে শিল্পের সাথে শেয়ার করা হবে,” তারেক আমিন যোগ করেন। প্রতিযোগিতার পর, গ্র্যান্ড ফিনালেতে গ্রুপ এবং ব্যক্তিগত উভয় বিভাগে চ্যাম্পিয়ন এবং প্রথম রানার আপ এবং দ্বিতীয় রানার আপদের মোট ৬,৫০,০০০ টাকা প্রাইজমানি দেওয়া হবে। ‘উদ্ভাবনশীলতা’কে সংহত করতে ইচ্ছুক যেকোনো শাখার যেকোনো স্নাতক স্তরের শিক্ষার্থীরা এই প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহন করেত পারবে। টেক্সটাইল ট্যালেন্ট হান্ট টেক্সটাইল টুডে ইনোভেশন হাবের একটি ফ্ল্যাগশিপ প্রোগ্রাম যা শিল্প জুড়ে উদ্ভাবনকে অনুপ্রাণিত করে। টেক্সটাইল ট্যালেন্ট হান্ট সিজন ৯ এর টাইটেল স্পন্সর সেন্ট্রো টেক্স লিমিটেড, পাওয়ার্ড বাই স্পন্সর ইউরোডাই-সিটিসি, প্লাটিনাম স্পনসর ডাইসিন গ্রুপ এবং সিএইচটি , ডায়মন্ড স্পন্সর আপনা অর্গানিকস প্রাইভেট লিমিটেড, প্রাইজ মানি স্পন্সর কোটস, গোল্ড স্পনসর সামিট ডাই কেম এবং স্পনসর ডেনিম সলিউশন যেখানে রিসার্চ পার্টনার ট্রান্সফার কেমিক্যালস, অ্যাসোসিয়েশন পার্টনার জিআইজেড এবং নেটওয়ার্ক পার্টনার টেক্সমেটা।

স্পন্সর প্রতিনিধিদের মধ্যে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন – নিকোলাস অ্যান্টন চিফ অপারেটিং অফিসার, সেন্ট্রো টেক্স লিমিটেড; আবদুল আজিজ আসুকিন, ডিরেক্টর, নেক্সাজেন স্পেশালিটিজ লি.; মোঃ রেজওয়ানুর রহমান, ডিরেক্টর, ডাইসিন গ্রুপ; ইঞ্জি. এএসএম হাফিজুর রহমান নিক্সন, নির্বাহী পরিচালক, আরএইচ কর্পোরেশন; আব্দুর রশিদ, কান্ট্রি ম্যানেজিং ডিরেক্টর, এসজিএস বাংলাদেশ লি.; তাসনিম তায়েব, হেড অব এনভায়রনমেন্টাল কমপ্লায়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি, কোটস (বাংলাদেশ ও পাকিস্তান); মোঃ আমিনুল ইসলাম, পরিচালক (বাংলাদেশ), ট্রান্সফার ইন্টারন্যাশনাল গ্রুপ; সন্দীপ দাভ, কান্ট্রি ম্যানেজার, আপনা অর্গানিকস প্রাইভেট লিমিটেড (বাংলাদেশ লিয়াজোঁ অফিস); সৈয়দ ইকবাল রিজভী, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, সমিট ডাই কেম লিমিটেড এবং এস এম সোহেল রানা, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ডেনিম সলিউশন লিমিটেড।

এনজে