করোনাভাইরাসের অভিঘাতে সারাবিশ্বের অর্থনীতি  থমকে গেছে। ঠিক সেই কোভিড প্রকোপের মধ্যেও দেশের পুঁজিবাজারে চমক দেখিয়েছেন শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলামের নেতৃত্বে নতুন কমিশন। বিএসইসির এই নেতৃত্ব এক দুইবার নয় তৃতীয়বারের মতো বাংলাদেশের পুঁজিবাজারকে বিশ্বের সেরা উত্তীর্ণ করেছেন।

সম্প্রতি ফ্রন্টিয়ার জার্নালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রিটার্নের দিক দিয়ে তৃতীয়বারের মতো বাংলাদেশের পুঁজিবাজার বিশ্বের শীর্ষ তালিকায়।

এর আগে গেল বছরের আগস্টে প্রথমবারের মতো বিশ্বের সেরা হয়েছিলো বাংলাদেশের পুঁজিবাজার। এর কিছুদিন না যেতেই একই বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে সকল দেশকে পেছনে ফেলে রিটার্নের দিক থেকে দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বসেরা পুঁজিবাজারে তালিকায় আসীন হয় বাংলাদেশ।

বাণিজ্য প্রতিদিনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

ফ্রন্টিয়ার জার্নালের চিত্র অনুযায়ী দেখা যায়, মে মাসে বিশ্বসেরা বাংলাদেশের পুঁজিবাজার করোনাকালেও বিশ্বের অন্যান্য পুঁজিবাজারগুলোকে পেছনে ফেলে ফের তৃতীয়বার সেরা তালিকায় স্থান করে নিয়ে নতুন রেকর্ড গড়লো বাংলাদেশ।

প্রতিবেদনে বলা হয়, আলোচ্য সময়ে বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশের পুঁজিবাজার থেকে রিটার্ন পেয়েছে ৯ দশমিক ৪ শতাংশ। এছাড়া পাকিস্তান ৮ দশমিক ৫ শতাংশ এবং ভিয়েতনাম ৭ দশমিক ২ শতাংশ, চায়না ৬ দশমিক ৬ শতাংশ, ফিলিপাইনস ৫ দশমিক ৩ শতাংশ, কাজাকিস্তান ৪ দশমিক ৭ শতাংশ, শ্রীলঙ্কা ২ দশমিক ৫ শতাংশ, থাইল্যান্ড শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ, ইন্দোনেশিয়া শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ।

এর আগে গত বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে বাংলাদেশের বিনিয়োগকারীরা রিটার্ন পেয়েছে ২৪ দশমিক ৪ শতাংশ, পাকিস্তান ১৯ দশমিক ৪ শতাংশ এবং শ্রীলঙ্কা ১৭ দশমিক ০ শতাংশ।

বিশ্লেষকরা বলছেন, অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম এর নেতৃত্বাধীন নতুন কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে বাজার ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বাজারমুখী হচ্ছেন। ফলে বাজারে সূচক ৬ হাজার পয়েন্ট অতিক্রম করে রেকর্ড গড়েছিল। আর এমন বাজার থেকে বিনিয়োগকারীরা ভালো রিটার্ন পেয়েছেন। এছাড়া বর্তমান কমিশন বাজারের উন্নয়নে নানা ধরনের উদ্যোগ হাতে নিয়েছে।

প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে বহুজাতিক, সরকারি ও দেশি-বিদেশি ভালো মৌলভিত্তিক কোম্পানি তালিকাভুক্তির চেষ্টা করে যাচ্ছে। একই সঙ্গে বাজারে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে কাজ করছে কমিশন। এসব কাজের মাধ্যমে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ধরে রাখতে পারলে ভবিষ্যতেও সেরা তালিকায় স্থান ধরে রাখতে পারবে বাংলাদেশ।

দেশের পুঁজিবাজার বিশ্বের শীর্ষ স্থানে অবস্থান করছে এ বিষয়ে বিএসইসির চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম জানান, আমি কমিশনে যোগ দেওয়ার পর পুঁজিবাজারের প্রধান সমস্যাগুলো খুঁজে বের করেছি। এরই মধ্যে অনেক সমস্যা সমাধান হয়েছে এবং কিছু সমাধানের পথে।

‘আমার যোগ দেয়ার পর প্রধান চ্যালেঞ্জ ছিল বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করা। কোভিড-১৯ মহামারির মধ্যেও বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরানোর মাধ্যমে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ব্রড ইনডেক্স মে মাসে বড় ধরনের উত্থান হয়েছে। ফলে বিশ্ব সেরা পারফর্মেন্স সূচকগুলোতে শীর্ষে অবস্থান করছে বাংলাদেশ।

‘বাংলাদেশে ব্যাংক সুদের হার কম, রপ্তানি ও রেমিট্যান্সে ইতিবাচক ধারার কারণে রিটার্নের দিক দিয়ে সেরা তালিকায় পৌঁছেছে।’