গাজীপুরের শ্রীপুরে পুলিশের ধাওয়া খেয়ে শীতলক্ষা নদীতে ঝাপ দিয়ে মামুন (২৫) নিখোঁজ রয়েছেন। স্বজনদের দাবী আত্মরক্ষার জন্য নদীতে ঝাপ দিয়ে পানিতে ডুবে তার মৃত্যু হয়েছে। রাতে শ্রীপুর থানা পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করলেও মামুনের সন্ধান করতে পারেনি। ঘটনার ১৭ঘন্টা পরও তার সন্ধান পায়নি পরিবার।

ঘটনা ঘটেছে রোববার (৩ এপ্রিল) বিকেলে উপজেলার বরমী ইউনিয়নের বরামা গ্রামের শীতলক্ষা নদীর রায়েদ গুদারা ঘাটের পাশে। নিখোঁজ মামুন উপজেলার বরামা গ্রামের মো. নূরুল ইসলামের ছেলে।

মামুনের স্বজনরা জানান, রবিবার বিকেল পৌনে চারটারদিকে মামুন বাড়ির অদূরের দোকান থেকে ইফতার আনতে যায়। পথেই শ্রীপুর থানার উপসহকারী পরিদর্শক শাকিল আহম্মেদের সাথে দেখাহয়। এসময় পুলিশ মামুুনকে ধরতে চেষ্টা করে। নিজেকে পুলিশের হাত থেকে রক্ষা করতে দৌড় দেয় সে। পুলিশও তাকে পিছু ধাওয়া করে। মামুন প্রায় ৩০ ফুট গভীর নদীর ভিতর পড়েযায়।

বাণিজ্য প্রতিদিনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

পুলিশের ধাওয়া খেয়ে নদীতে ডুবে মারাগেছে মামুন। এমন খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। রাতেই শ্রীপুর থানা পুলিশের টিম এবং ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনা স্থল পরিদর্শন করেন। আশপাশ এলাকায় খোঁজা খুজি কওে তার সন্ধান করতে পারেননি।

মামুনের বড় ভাই মাসুম অভিযোগ করে বলেন, শ্রীপুর থানার উপসহকারী পরিদর্শক (এ.এস.আই) শাকিল আহাম্মদ সহ আরও ২/৩জন সাদা পোষাকের পুলিশ ইনফরমার রৌশনকে সাথে নিয়ে মামুনকে ধরতে আসেন। মামুন দৌড়ে পালানোর সময় পুলিশ তার পিছু ধাওয়া করে। নদীর পাশে ঝুপের ভিতর পুলিশ মামুনকে মারপিট করে। এ সময় মামুন প্রায় ৩০ফুট গভীর নদীতে পড়ে যায়।

সাঁতরে নদী পার হবার সময় সে মাঝ নদীতে তলিয়ে যায়। নদীর পারে আসা স্থানীয়রা মামুনের তলিয়ে যাবার দৃশ্য দেখে বাক রুদ্ধ হয়ে পরেন। মাসুম বলেন, পাড়ে দাড়িয়ে তিনি দেখেছেন মাঝ নদীতে দুই হাত দিয়ে বাঁচার চেষ্টা করতে করতেই তার ভাই তলিয়ে গেছে।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, উপসহকারী পরিদর্শক (এ.এস.আই) শাকিল আহাম্মদ ইতিপূর্বে একাধিকবার মামুনকে আটক করেছেন। মামলাও দিয়েছেন। এতে মামুনের মনে পুলিশ আতংকছিল। তাইসে পুলিশ দেখে আতরক্ষার জন্য দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেছিল। পুলিশ মারপিট করে তাকে নদীতে ফেলে দেয়। সাতরে নদী পার হবার সময় মাঝ নদীতে সে তলিয়ে যায়।

শ্রীপুর থানার উপসহকারী পরিদর্শক (এ.এস.আই) শাকিল আহাম্মদ অভিযেগ অস্বীকার করে বলেন, মামুন শ্রীপুর থানার ২৬ (৬) ২১ নং দস্যুতা মামলার গ্রেফতারী পরোয়ানা ভূক্ত পলাতক আসামী। রবিবার বিকেলে তিনি গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মামুনকে গ্রেফতার অভিযান চালান । এসময় মামুন পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে দৌড়ে পালিয়ে যায়।

শ্রীপুর থানার উপপরিদর্শক কামরুজ্জামান বলেন, খবর পেয়ে ঘটনা স্থলে গিয়ে জানতে পারেন একজন লোক নদীর পানিতে ডুবেগেছে। তাকে খুঁজে সন্ধান করতে পারেননি।

শ্রীপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাহফুজ ইমতিয়াজ ভূইয়া জানান, মামুন গ্রেফতারী পরোয়ানা ভূক্ত পলাতক আসামী। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ তাকে ধরতে অভিযান চালায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে সে দৌড়ে পালাতে গিয়ে নদীতে পরে যায়।

এদিকে সোমবার(৪এপ্রিল) সকাল নয়টারদিকে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ১৭ঘন্টায় ও সন্ধান মেলেনি মামুনের।