কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় প্রেমের জেরে রায়হান (২৬) হত্যা মামলায় প্রেমিকার আমৃত্যু ও ৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সাথে তাদেরকে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।

বুধবার (১৩ এপ্রিল) দুপুরের দিকে কুষ্টিয়া অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. তাজুল ইসলাম এ রায় দেন। রায় ঘোষণার সময় আদালতে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা উপস্থিত ছিলেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের পিপি অনুপ কুমার নন্দী।

আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি শিখা খাতুন কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার ভুরকাপাড়া গ্রামের আব্দুল মান্নানের মেয়ে।

বাণিজ্য প্রতিদিনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার ভুরকাপাড়া গ্রামের মৃত জলিল সরদারের ছেলে আব্দুল মান্নান (৬০), মান্নানের ছোট ভাই সাদু সরদার (৪৬), একই গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে সাজুল সরদার, মৃত শওকত সরদারের ছেলে বজলু সরদার ওরফে বজু এবং রাজন আলীর স্ত্রী আজমিরা খাতুন (৩২)। আমৃত্যু ও যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তদের সবাই ভুরকাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা।

আদালত সূত্র জানায়, আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি শিখার সাথে ভেড়ামারা উপজেলার জুনিয়াদহ খন্দকার পাড়া এলাকার মীর শহীদুলের ছেলে রায়হানের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। প্রেমের সম্পর্ক শিখার পরিবার মেনে না নেওয়ায় পূর্বপরিকল্পিতভাবে ২০১৬ সালের ৬ অক্টোবর রাতে রায়হানকে ফোন করে ডেকে নিয়ে যায় শিখা। ওই রাতেই আসামিরা রায়হানকে এলোপাথাড়ি মারপিট করে হত্যা করে লাশ গুম করে। এরপর থেকে রায়হানের পরিবার তার মোবাইল বন্ধ পায়। খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে পরের দিন ৭ অক্টোবর দুপুর আড়াইটার দিকে ভেড়ামারা উপজেলার জুনিয়াদহ পালপাড়া মাঠের মধ্যে থেকে রক্তাক্ত জখম রায়হানের মরদেহ উদ্ধার করে ভেড়ামারা থানা পুলিশ। সেদিন মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। পূর্বপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ৯ অক্টোবর নিহতের বাবা মীর শহীদুল আসামিদের বিরুদ্ধে ভেড়ামারা থানায় এজাহার দায়ের করেন।

মামলার তদন্ত শেষে তদন্তকারী কর্মকর্তা আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। এরপর আদালত এ মামলায় সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে ১৩ এপ্রিল রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন। আদালতে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের উপস্থিতিতে এই রায় ঘোষণা করা হয়। রায় ঘোষণার পর পরই দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে পুলিশ পাহারায় জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।

আদালতের পিপি অনুপ কুমার নন্দী বলেন, রায়হান হত্যা মামলায় দোষী প্রমাণিত হওয়ায় একজনকে আমৃত্যু ও ৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সাথে তাদের সবাইকে ল ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।