অপহরণ মামলার প্রধান আসামি কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সাবেক প্রচার সম্পাদক এইচ এম সজিবকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত সোমবার (২৫ এপ্রিল) ভোরে দৌলতপুর থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে মিরপুর উপজেলার সদরপুর ইউনিয়নের আমলা গ্রাম থেকে সজিবকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম জাবীদ হাসান।

গ্রেফতার এইচ এম সজিব মিরপুর উপজেলার আমলা এলাকার নজরুল ইসলামের ছেলে। তিনি কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সাবেক প্রচার সম্পাদক ছিলেন।

এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ২৩ এপ্রিল কক্সবাজার জেলার মো. জোহার (১৯) নামে একব্যক্তি দৌলতপুর উপজেলার বেগুনবাড়ী গ্রামে তার ধর্ম ভাই আবু আফফান, মামুন, ভুলা’র বাড়িতে ঘুরতে আসে। পরেরদিন ২৪ এপ্রিল দৌলতপুরের কল্যাণপুর বাজার জামে মসজিদ থেকে মাগরিবের নামাজ পড়ে বের হয়ে রাস্তায় উপস্থিত হলে একটি সাদা রংয়ের হাইচ গাড়ি এসে জোহরের সামনে থেমে যায় এবং গাড়ির দরজা খুলে জোহারকে জোরপূর্বক গাড়িতে উঠিয়ে নিয়ে যায়।

বাণিজ্য প্রতিদিনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

পরে সেখান থেকে জোহরকে তারা নিয়ে যায় মিরপুর থানার আমলা গ্রামের একটি বাড়িতে। সেখানে জোহারকে মারধর সহ নানা প্রকার শারীরিক নির্যাতন করে সজিব ও তার সহযোগীরা। পরে জোহারের মোবাইল ফোন থেকে তার বোন তাসলিমার সাথে যোগাযোগ করে বিকাশ বা রকেট নাম্বারে পাঁচ লক্ষ টাকা মুক্তিপন দাবি করা হয়।

এবং এর মধ্যে তাসলিমার কাছে মাঝে মধ্যে কল করে মোবাইল ফোন লাইনে থাকা অবস্থায় নির্যাতন চালনো হয় জোহারের উপর আর নির্যাতনের সেই চিৎকার শোনানো হয় বোন তাসলিমা ও তার পরিবারকে।

জোহারের পরিবার কোন দিশে না পেয়ে যোগাযোগ করে দৌলতপুরের ধর্ম ভাই মামুনের সাথে এবং তারা মামুনকে বলে যে, যত টাকা লাগে আমার ভাইকে উদ্ধার করেন।

এমন অবস্থায় মামুন যোগাযোগ করে দৌলতপুর থানা পুলিশের সাথে এবং পুলিশকে দেয় মোবাইল নাম্বারে সহ বিস্তারিত তথ্যদী।

এ তথ্যের ভিত্তিতে ২৫ এপ্রিল রাতে আমলা এলাকায় অভিযানে নামে দৌলতপুর থানা পুলিশ। অভিযানের একপর্যায় ভোর আনুমানিক চারটার দিকে অপহরণের মূলপরিকল্পনাকারী সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সজিবকে তার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে সজিব অপহরণ ও মুক্তিপনের বিষয়টি শিকার করে ও তার সাথে জড়িত আরও ছয়জনের নাম উল্লেখ করেন।

ঐ দিনেই সকাল সাতটার দিকে আমলা গ্রামের বিলের ধারে পুলিশ আবার অভিযান চালালে, পুলিশের উপস্থিত টের পেয়ে জোহারকে চোখ হাত বাধা অবস্থায় সজিবের সহযোগীরা ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। পরে জোহারকে দৌলতপুর থানা পুলিশ উদ্ধার করে।

দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম জাবীদ হাসান বলেন, ২৪ এপ্রিল রাতে জোহরকে অপহরণ করা হয়। ২৫ এপ্রিল ভোরে অপহরণকারীদের মূলহোতা সজিবকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। ২৫ এপ্রিল ভোরে জোহরকে উদ্ধার করা হয়।এঘটনায় দৌলতপুর থানায় জোহার নিজেই বাদী হয়ে সজিব সহ তার আরও ছয়জন সহযোগীর নামে একটি মামলা দায়ের করেছেন। যার মামলা নম্বর ৬৫/১১৬।