কৃষিতে স্বনির্ভর দেশের উত্তরের জেলা ঠাকুরগাঁও। এ জেলার মাটি উর্বর হওয়ায় অন্যান্য জেলার তুলনায় যেকোনো ফসল উৎপাদন হয় বেশি। ধান, পাট, গম, ভুট্টা, আখসহ সব ধরনের ফসলের আবাদ বেশ ভালো হয় এখানে ।

কিন্তু এবার বর্ষা মৌসুমেও বৃষ্টির দেখা নেই। তাই উল্টো চিত্র দেখা দেয় ঠাকুরগাঁওয়ে। কৃষক সময় মতো আমন ধান রোপণ করতে না পারলে ধানের উৎপাদন কমে যাওয়া সহ কৃষিতে বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কা করছিল জেলা কৃষি অধিদপ্তর। আমন মৌসুমে ঠাকুরগাঁওয়ে প্রয়োজনীয় পরিমাণ বৃষ্টিপাত না হওয়ায় দুশ্চিন্তায় সময় পার করছিল কৃষকেরা৷ তবে সে দুশ্চিন্তা থেকে অনেক কৃষকের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য আমন ধানের জমিতে সম্পূরক সেচের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড ঠাকুরগাঁও জেলা৷

পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেওয়া তথ্য মতে, এ বছর পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাস্তবায়িত ভুল্লি বাঁধ সেচ প্রকল্পের ৮০০ হেক্টর, টাংগন বাঁধ সেচ প্রকল্পের ৪ হাজার ৪৫০ হেক্টর, বুড়ি বাঁধ সেচ প্রকল্পের ১ হাজার ৭২০ হেক্টর জমি সহ জেলার সকল সেচ প্রকল্পের মাধ্যমে ১১হাজার ৬৬৫ হেক্টর জমিতে সম্পূরক সেচ প্রদানের উদ্যাগ গ্রহন করেছে পাউবো।

বাণিজ্য প্রতিদিনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

পানি উন্নয়ন বোর্ড ঠাকুরগাঁওয়ের উপ-প্রধান সম্প্রসারণ অফিসার রফিউল বারী বলেন, পাউবো’র এই উদ্যোগের মাধ্যমে ১১হাজার ৬৬৫ হেক্টর জমিতে ৫৮হাজার ২৭৫ মেট্রিক টন ধান উৎপন্ন হবে, যার মুল্য প্রায় ১১৫ কোটি টাকা। এতে আনুমানিক ৮১ কোটি টাকার জ্বালানি সাশ্রয় হবে। জেলা অফিসের আওতায় ৮৯ টি কৃষক পানি ব্যবস্থাপনা দল রয়েছে। এতে ভূল্লী বাঁধ সেচ প্রকল্পের ১হাজার, টাংগন বাঁধে ৬হাজার ও বুড়ি বাঁধ সেচ প্রকল্পে ২ হাজার কৃষক সুবিধা পাচ্ছেন৷

বুড়ি বাঁধ সেচ প্রকল্পের আওতায় উপকারভোগী কৃষক মোজাম্মেল হক বলেন, যে পরিমাণ বৃষ্টি দরকার ছিল তা পাওয়া যায়নি। বর্ষা মৌসুমে চলছে খরা। পাউবো’র সম্পূরক সেচের মাধ্যমে আমন জমিতে পানি দিতে পারছি। এতে ভালো ফসল হবে আশা করছি৷ হতাশাও দূর হয়েছে আমাদের।

ভূল্লি বাঁধ সেচ প্রকল্পের সভাপতি আসাদুজ্জামান বলেন, আমাদের বাঁধের আওতায় এক হাজার কৃষক সম্পূরক সেচ পাচ্ছেন। আমরা আমন ধান নিয়ে অনেক বেশি দুশ্চিন্তার মধ্যে ছিলাম৷ আর এবার বৃষ্টির নেই। ভূল্লী বাঁধের সম্পূরক সেচের মাধ্যমে আমি ও স্থানীয় অনেক কৃষক আমনের জমিতে সেচ দিতে পারছেন।

জেলার টাংগন, বুড়ি ও ভুল্লি বাঁধ সেচ প্রকল্পের পূণর্বাসন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক, প্রকৌশলী মোখলেসুর রহমান বলেন, আমন জমিতে সেচ প্রকল্পের মাধ্যমে কৃষকেরা দারুণ ভাবে লাভবান হচ্ছেন৷

পানি উন্নয়ন বোর্ড ঠাকুরগাঁওয়ের উপ-প্রধান সম্প্রসারণ অফিসার রফিউল বারী বলেন, আমরা সবসময় কৃষকদের জন্য কাজ করে যাচ্ছি৷ খরা মোকাবেলায় আমরা আমন ধানের জমিতে সম্পূরক সেচের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি৷ আমরা মনে করছি এর মাধ্যমে কৃষকেরা কৃষিতে স্বস্তি ফিরে পেয়েছেন৷