মানিকগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট কার্যালয়ে ভুয়া পরিচয় ব্যবহার করে পাসপোর্ট করতে এসে ধরা পড়েছে এক রোহিঙ্গা নারী। সেই সাথে ওই রোহিঙ্গা নারী সাথে আসা এক পুরুষ রোহিঙ্গা ব্যক্তিকেও আটক করা হয়েছে।

আজ মানিকগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক নাহিদ নেওয়াজ জানান, দুপুরে পাসপোর্টের জন্য ফিঙ্গার প্রিন্ট নেওয়ার পর দেখা যায় পাসপোর্ট আবেদনকারী নারী একজন রোহিঙ্গা। তার নাম হুমায়রা (১৬)। তার পিতার নাম হামিদুল্লাহ। তিনি কক্সবাজারের উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা। তিনি তার প্রকৃত নাম, ঠিকানা আড়াল করে ভুয়া পরিচয় ব্যবহার করে পাসপোর্ট করতে এসেছিলেন।

পাসপোর্টের আবেদনের জন্য মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর উপজেলার চান্দহর ইউনিয়নের চর চান্দহর গ্রামের খলিলুর রহমান ও রাশিদা খাতুনের মেয়ে তাসনিম বেগম নামে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সনদ তৈরী করেছিলেন। এছাড়াও এই নাম-পরিচয় ব্যবহার করে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার সোনাতানি ইউনিয়ন পরিষদ থেকে জন্মসনদ তৈরি করেন।

বাণিজ্য প্রতিদিনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

এদিকে ওই নারীর সাথে আসা ব্যক্তির নাম আবু তাহের। তার পিতার নাম মোহাম্মদ ইলিয়াস। তিনি নিজেকে রোহিঙ্গা হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন। তিনি ২০০৮ সালে বাংলাদেশে এসেছেন এবং বর্তমানে তিনি চকরিয়ায় থাকেন বলে জানিয়েছেন। রোহিঙ্গা নারীকে অনৈতিক কাজে সহায়তার কারণে তাকেও আটক করা হয়েছে। পরবর্তীতে তাদের দুজনকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

অপরদিকে চান্দহর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শওকত হোসেন বাদল জানিয়েছেন, ‘আমার স্বাক্ষর স্ক্যান করে বসিয়ে ভুয়া নাম, পরিচয়, ঠিকানা ব্যবহার করে সনদ তৈরী করা হয়েছে। আমিও তাদের বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা করবো।’

রোহিঙ্গা নারীর সাথে থাকা রোহিঙ্গা আবু তাহের বলেন, ‘আটক রোহিঙ্গা নারী হুমায়রা আমার চাচী। দুই বছর আগে টেলিফোনে সোদি প্রবাসী রোহিঙ্গা মোহাম্মদ আবু তালেবের সাথে চাচীর বিয়ে হয়েছে। স্বামীর কাছে যাওয়ার জন্য তিনি পাসপোর্ট করতে এসেছেন। সাদ নামের পাসপোর্ট অফিসের এক দালালের মাধ্যমে আবেদন করা হয়েছে। এক লাখ টাকা চুক্তি হয়েছে। ইতোমধ্যে ৬০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। বাকি ৪০ হাজার পরে দেওয়ার কথা। সবই হয়ে গেছে। ফিঙ্গার প্রিন্ট দিতে গিয়ে ধরা পড়েছে।’

মানিকগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রউফ সরকার বলেন, ‘পাসপোর্ট আঞ্চলিক কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক নাহিদ নেওয়াজ দুজন রোহিঙ্গা ব্যক্তিকে আটক করে আমাদের কাছে হস্তান্তর করেছে এবং একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। তা‌দের বিরু‌দ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।