যশোরের চৌগাছায় এশিয়ামহাদেশের সর্ববৃহত এক মাত্র তুলা গবেষণা কেন্দ্র ও বীজবর্ধন খামারটি জনবল সংকটে পড়েছে। ফলে খামারটির সকল কার্যক্রম ব্যাপকভাবে মুখ থুবড়ে পড়েছে। খামারটিতে ২৭টি কর্মকর্তা-কর্মচারীর পদ রয়েছে। যার মধ্যে বর্তমানে ১৭টি পদই শূন্য।

কর্তৃপক্ষের নিকট জনবল চেয়ে লিখিত আবেদন করলেও কোন ফল হয়নি। শূন্যপদগুলো পূরণে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। দায়িত্বরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জনবল পেতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

এলাকাবাসী ও তুলা চাষীরা জানান, ১৯৮০ সালে প্রয়াত রাষ্টপতি শহীদ জিয়াউর রহমান উপজেলার জগদীশপুর গ্রামে প্রায় ১ হাজার বিঘা জমি অধিগ্রহণের মাধ্যমে তুলা গবেষণা ও বীজবর্ধন খামারটি প্রতিষ্ঠা করেন। খামারটি প্রতিষ্ঠার ফলে তুলা উৎপাদন, গবেষণা কার্যক্রম ও তুলা চাষীদের প্রশিক্ষণ ছিল ব্যপকহারে।

বাণিজ্য প্রতিদিনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

স্থানীয় তুলা চাষীদের সাথে খামার কর্তৃপক্ষের গভীর সু-সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কিন্তু ধীরে ধীরে তুলা চাষ বন্ধের উপক্রম দেখা দিয়েছে। স্থানীয় কৃষকরা এখন আগের মতো তুলা চাষ করেন না। কৃষক মিজানুর রহমান, শফিউদ্দীন, আলম হোসেন জানিয়েছেন, এসব সমস্যার অন্যতম কারণ হচ্ছে খামারের জনবল সংকট।

তুলাফার্ম অফিস সুত্রে জানা যায়, খামারের গুরুত্বপূর্ণ ২৭টি পদ রয়েছে। যারমধ্যে দীর্ঘদিন যাবৎ ১৭টি পদ শূন্য রয়েছে। বর্তমানে উর্দ্ধতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তার ১ জন, এসও কর্মকর্তা ১ জন, ল্যাব এ্যাসিসট্যান্ট ২ জন, মাঠ সহকারী ৪ জন, ১ জন কম্পিউটার অপারেটর, ১ জন উচ্চমান সহকারী, ১ জন ক্যাশিয়ার, ১ জন এম এল এস এস, ২ জন নিরাপত্তা কর্মী, ১ জন ইলেট্রিশিয়ান, ১ জন ক্যাটল কিপার ও ১ জন পরিচ্ছন্ন কর্মীসহ মোট ১৭টি পদে জনবল দীর্ঘ শূন্য রয়েছে।

খামাটির প্রবেশ পথসহ খামারের ভিতরের সকল সড়ক এখন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। জনবল না থাকায় খামারে লাখ লাখ টাকার কৃষি যন্ত্রপাতি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। যা ধীরে ধীরে নষ্ট হয়ে অকেজো হয়ে পড়ছে। আগামী মার্চ মাসে কর্মরতদের মধ্য হতে আরো দুই জন অবসরে যাবেন। আরো ২ জন অবসর নেবার পর জনবল থাকবে মাত্র ৮ জন। সে ক্ষেত্রে খামারটি মূল কর্মকান্ড পরিচালনা করতে রিতিমত হিমশিম খেতে হবে তাদের।

কর্মকর্তারা জানান, শূন্য পদগুলোতে জনবল নিয়োগ হলে খামারটির কার্যক্রমে গতি ফিরে আসবে।  জগদীশপুর গ্রামের আশানুর রহমান জানান, এক সময় এই তুলা ফার্মটি দেখতে বিভিন্ন জেলা থেকে হাজার হাজার মানুষ এসে ভিড় করতেন। ফার্মের চারিদিকে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ-গাছালী ছিল।

ভেতরে ছিল ফুলের বাগান রাস্তাগুলো ছিল সুন্দর। কিন্তু বর্তমানে রাস্তাগুলোতে চলা দায়সহ নানা কারণে সেই দর্শনার্থীরা এসে আর ভিড় করেন না। তবে রাস্তা সংস্কার ও জনবল নিয়োগে খামারটি আবার আগের মতো প্রাণ ফিরে পাবে।

এ ব্যাপারে জগদিশপুর তুলা ফার্মের ব্যবস্থাপক শেখ আল মামুন বলেন, জনবল সংকট থাকায় ফার্মেও সকল কাজ করতে হিমশিম ক্ষেতে হচ্ছে। শূন্য পদগুলোতে জনবল চেয়ে বারবার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট লিখিত আবেদন করা হয়েছে। আমি আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে শুন্য পদে লোক নিয়োগ করা হবে। ফলে খামারটির কার্যক্রমে গতি ফিরে আসবে।