সিরাজগঞ্জের সলঙ্গায় র‍্যাব-১২ সদর দপ্তরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের হাতে অস্ত্র জমা দিয়ে চরমপন্থী সংগঠনের সক্রিয় তিন শতাধিক সদস্য আত্মসমর্পণ করেছেন। আত্মসমর্পণকারী চরমপন্থী সংগঠনগুলো হলো-পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টি (এমএল) (লাল পতাকা), পূর্ব বাংলা সর্বহারা পার্টি (এমবিআরএম) ও পূর্ব বাংলা সর্বহারা পার্টি (জনযুদ্ধ)। গত রোববার দুপুরে র‍্যাব-১২ সদর দপ্তরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের হাতে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের ৭ জেলার ৩১৫ জন চরমপন্থী ২১৬টি অস্ত্র জমা দিয়ে আত্মসমর্পণ করেন। আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, বর্তমান সরকার আত্মসমর্পণকারী চরমপন্থীদের পূর্ণবাসনের জন্য কাজ করছে। তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে আইনগত সহযোগীতাসহ স্বাভাবিক জীবনযাপন করার প্রয়োজনীয় সহযোগীতা করা হবে।

তিনি আরো বলেন, এ অনুষ্ঠানে আসার আগে প্রধানমন্ত্রী আমাকে বলেছেন, আপনারা যারা অন্ধকার পথ ছেড়ে আত্মসমর্পণ করে আজ আলোর পথে ফিরে আসছেন তাদের আর্থিক সহযোগিতাসহ সার্বিক সহযোগিতা করা হবে। ১৯৯৯ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে ‘সন্ত্রাসের জীবন ছাড়ি, আলোকিত জীবন গড়ি’ স্লোগানে অনেক সর্বহারা চরমপন্থী আলোর পথে ফিরে আসে। কেউ যদি মনে করেন আমরা দেশের চরাঞ্চল বা দুর্গম এলাকায় বসে অপরাধ করবো। আমাদের কেউ ধরতে পারবে না। তাহলে তারা বোকার স্বর্গে বাস করছেন। তাদের আলোর পথে ফেরাতে সরকার নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে এবং আর্থিক সহযোগিতা থেকে শুরু করে কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেয়া হচ্ছে। আপনারা জানেন প্রধানমন্ত্রী সুন্দরবনকেও দস্যু মুক্ত ঘোষণা করেছেন। র‍্যাব নানাবিধ ভালো কাজ করে আস্থা অর্জন করেছে।

এ জন্যই চরমপন্থীরা আত্মসমর্পণের জন্য র‍্যাবের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। র‍্যাব আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার পাশাপাশি মাদক ও সন্ত্রাস নির্মূলে কাজ করে যাচ্ছে। উত্তর, পশ্চিম ও দক্ষিণাঞ্চলের সিরাজগঞ্জ, পাবনা, বগুড়া, মেহেরপুর, কুষ্টিয়া, রাজবাড়ী ও টাঙ্গাইলের বিভিন্ন এলাকার চরমপন্থী ৩ শতাধিক সদস্য ২ শতাধিক অস্ত্র ও বিপুল পরিমাণ গোলাবারদসহ এ অনুষ্ঠানে আত্মসমর্পন করেন। তাদের অন্ধকার থেকে আলোতে ফেরাতেই র‍্যাবের উদ্যোগে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে র‌্যাবের মহাপরিচালক অতিরিক্ত আইজিপি এম খুরশীদ হোসেনের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি বেনজীর আহমেদ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান, পুলিশ মহা-পরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, ডিআইজি (রাজশাহী রেঞ্জ) মোঃ আব্দুল বাতেন, র‌্যাব-১২ অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মারুফ হোসেন, তানভীর শাকিল জয় এমপি, অধ্যাপক ডা. হাবিবে মিল্লাত মুন্না এমপি, ডা. আব্দুল আজিজ এমপি, তানভীর ইমাম এমপি, মেরিনা জাহান কবিতা এমপি, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ বিশ্বাস, জেলা প্রশাসক মীর মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান,পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মন্ডল বিপিএম (বার), পিপিএম (বার), জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা কে.এম হোসেন আলী হাসান,সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সামাদ তালুকদারসহ র‍্যাব ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বাণিজ্য প্রতিদিনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

এরপর বিকেলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার কার্যালয়ের দ্বিতীয় তলায় বঙ্গবন্ধু কর্ণার উদ্বোধন করেন এবং পুলিশ সুপার কার্যালয়ে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন। এ সময় পুলিশের আইজিপি, ডিআইজি, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও বিভিন্ন মিডিয়ার সাংবাদিকসহ জেলা পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।