ফরিদপুরের সালথায় পূর্বশত্রুতার জের ধরে এক কৃষকের বাড়িতে খাবারে বিষক্রিয়ার ঘটনা ঘটেছে। খাবার খেয়ে অসুস্থ হয়ে একই পরিবারের ৮ জন ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এরমধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

এ ঘটনায় সোমবার (৮ জুলাই) দুপুরে ওই কৃষকের পরিবারের পক্ষ থেকে সালথা থানায় একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। এর আগে শনিবার (৬ জুলাই) রাত ৮ টার দিকে উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের কাঁঠালবাড়িয়ার যুগিডাঙ্গা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

বিষক্রিয়ায় অসুস্থতরা হলেন, ডালিয়া বেগম (৩৫), ডালিয়ার মেয়ে যুথী (১৬), একই পরিবারের পপি (২৫), হৃদয় (১৬), ফাতেমা (০৮), মিম (৯), অনিতা (২২) ও রাজিব (২০)।

বাণিজ্য প্রতিদিনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

এলাকাবাসী ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত শনিবার উপজেলার কাঁঠালবাড়িয়ার যুগিডাঙ্গা গ্রামের কৃষক জয়নাল মাতুব্বরের বাড়িতে আত্মীয়-স্বজনদের আম-কাঁঠাল ও পিঠার দাওয়াত করা হয়। এসময় পূর্ব বিরোধের জের ধরে সম্রাট মাতুব্বর (৩৬) নামের এক প্রতিবেশী ওই পরিবারের গরুর গোশতের মধ্যে কৌশলে বিষ প্রয়োগ করে বলে দাবি কৃষক জয়নালের পরিবারের। এরপর রাত ৮ টার দিকে পরিবারের সবাই মিলে রাতের খাবার খাওয়ার আধাঘণ্টা পর একে একে ৮ জন মাথা ঘুরে অসুস্থ হয়ে পড়েন।

পরে এলাকাবাসী তাদের উদ্ধার করে রাত ১১ টার দিকে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। হাসপাতাল থেকে একটু সুস্থ হওয়ার পর রোববার বাড়িতে গেলে ফের অসুস্থ হওয়ায় সোমবার (৮ জুলাই) দুপুরে আবার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন তারা। এঘটনার পর থেকে পরিবারটি আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে।

তবে বিষপ্রয়োগের অভিযোগের ব্যাপারে বক্তব্য জানতে সুম্রাট মাতুব্বরের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। তার মোবাইল নাম্বার বন্ধ পাওয়া যায়।

এদিকে খাবারে বিষক্রিয়া দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন সুম্রাট মাতুব্বরের ভাবী রুমা বেগম।

তিনি বলেন, রাতের আঁধারে কে বা কারা খাবারে বিষ দিয়েছেন তা একমাত্র আল্লাহই বলতে পারবেন। যারা খাবারে বিষ দেওয়ার কথা বলছেন তারাও তো আমাদের আত্মীয়। কেনই বা সম্রাট খাবারে বিষ দিতে যাবে। ওই রাতে খাবারে কে বিষ দিয়েছে সেটা তো কেউই দেখেনি। আমিও চাই যে খাবারে বিষ দিয়েছেন তার বিচার হোক।

গট্টি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. হাবিবুর রহমান লাভলু বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। আমি রোগীদের হাসপাতালে দেখতে যাবো। এর সাথে যারা জড়িত তাদের কঠোর বিচার দাবি করছি।

সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ফায়েজুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায় কেউ কোন অভিযোগ দায়ের করেননি। তবে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠাচ্ছি।

ফরিদপুরের সহকারী পুলিশ সুপার (নগরকান্দা-সালথা সার্কেল) মো. আসাদুজ্জামান শাকিল বলেন, ঘটনাটি জানা নেই। তারপরও বিষয়টি খোঁজখবর নিয়ে পরবর্তীতে বিস্তারিত তথ্য জানানো সম্ভব হবে।

এএন