বাগেরহাটের সুবিধাবঞ্চিত ৪৫৫ জন রোগীর চোখের অপারেশন বিনামূল্যে সম্পন্ন হয়েছে। এসব চোখের রোগীরা ফিরে পেয়েছেন তাদের চোখের আলো। ঢাকা মেগা সিটি লায়ন্স ক্লাবের সভাপতি ড. শেখ ফরিদুল ইসলামের আর্থিক সহযোগিতায় পরিচালিত এই চক্ষু শিবিরে বাগেরহাট, মোংলা, রামপাল, ফকিরহাট, মোড়েলগঞ্জ, শরণখোলা ও খুলনার বটিয়াঘাটা, দাকোপসহ আশপাশ জেলা-উপজেলা থেকে আসা রোগীদের মধ্য থেকে ছানি অপারেশনের জন্য ৫৩০ জন রোগীকে বাছাই করা হয়েছিল। সেখান থেকে এখন পর্যন্ত ৪৫৫ জন রোগীর চক্ষু চিকিৎসা সম্পন্ন হয়েছে।

রোববার (১৪ জুলাই) দুপুরে অপারেশনসহ লেন্স সংযোজনের পর চোখের আলো ফিরে পেয়ে এসব দরিদ্র মানুষ ঢাকা থেকে বাগেরহাটে নিজ বাড়িতে ফিরেছে।

‘অন্ধত্ব প্রতিরোধ করুন’ এ স্লোগান নিয়ে গত মে মাসের ১৭ তারিখ দিনব্যাপী বাগেরহাটের রামপালের বড়দিয়া হাজী আরিফ মাদ্রাসায় বিনামূল্যে চক্ষু শিবিরের এ আয়োজন করা হয়েছিল। পরে বাছাইকৃত ৫৩০ জন ছানি রোগীদের মধ্যে ২৫ মে থেকে ১৩ জুন পর্যন্ত ঢাকায় ৩৭৩ জনকে ‘ডাস আই হাসপাতাল’ এ বিনামূল্যে অপারেশন, লেন্স সরবরাহ, ঔষধ ও সেবা দেওয়া হয়।

বাণিজ্য প্রতিদিনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

অন্যদিকে চক্ষু শিবিরে নেত্রনালী ও মাংস বৃদ্ধি অপারেশনের জন্য বাছাইকৃত ১২৩ জন রোগীর মধ্যে থেকে ৮২ জন রোগীকে খুলনার স্বাস্থ্যসেবা ক্লিনিকে ৩০ জুন থেকে ১১ জুলাই পর্যন্ত অপারেশন সম্পন্ন করা হয়েছে। সব মিলিয়ে এ বছরে মোট ৪৫৫ জন রোগীর অপারেশন সম্পন্ন হয়েছে।

চোখের চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফিরে আসা জেলার মোংলা উপজেলার নারিকেলতা গ্রামের মধুমালা বলেন, অপারেশন করার আগে চোখে ঝাপসা দেখতাম। এখন চিকিৎসা নেওয়ার পর পূর্বের মত আলো ফিরে পেয়েছি। বিনামূল্য চিকিৎসা পাওয়ায় খুশি হয়েছি।

রামপালের ঝনঝনিয়া গ্রামের মান্না মিয়া বলেন, চোখের নেত্রনালী অপারেশন করার মত কোন সামর্থ্য ছিল না। তবে বিনামূল্যে চিকিৎসা পেয়ে খুবই আনন্দিত। এখন চোখে আর কোনো সমস্যা নেই।

ঢাকা মেগা সিটি লায়ন্স ক্লাবের সভাপতি লায়ন ড. শেখ ফরিদুল ইসলাম বলেন, হত-দরিদ্র মানুষের পক্ষে ব্যয় বহুল চক্ষু চিকিৎসা করা সম্ভব নয়। তারপরও একটি ক্লাবের পক্ষেও এত রোগীদের প্রতি বছর অপারেশন করানো অত্যন্ত কঠিন কাজ। তাই সমাজের বৃত্তশালী মানুষের কাছে অনুরোধ এই সেবার কাজে আমাদের পাশে দাঁড়ান। অন্যান্য লায়ন্স এবং রোটারি ক্লাবের কাছে আমাদের আবেদন বাগেরহাটের রামপাল-মোংলার এই প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের জন্য কয়েকটি চক্ষু ক্যাম্প করার ব্যবস্থা করুন।

উল্লেখ্য, ২০০৯ সাল থেকে শুরু করে প্রতি বছর এই অঞ্চলের সুবিধা বঞ্চিত মানুষের জন্য ঢাকা মেগাসিটি লায়ন্স ক্লাব চক্ষু শিবিরের আয়োজন করে আসছে। এ পর্যন্ত ৬ হাজারের অধিক ছানি, নেত্রনালী ও মাংস বৃদ্ধি রোগীর অপারেশনের মাধ্যমে সুস্থতা ও অন্ধত্বের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে। সেবা প্রাপ্ত শিশুরা বা ছাত্ররা তাদের লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছে, কর্মক্ষম রোগীরা তাদের সংসারে আয়-রোজগার করে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। বৃদ্ধরাও আমৃত্যু চোখের আলোতে চলাফেরা করতে পারছেন।

এএন