জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর ও সাবেক এমপি ডা: সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, ছাত্রসমাজের আন্দোলনের জলস্রোতে ফ্যাসিবাদের বাঁধ ভেঙ্গে গিয়েছে। কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে জনতা একাকার হয়ে গেছে। আন্দোলনের মুখে বিগত সরকার শুধু পদত্যাগ নয়, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে।

রোববার (১ সেপ্টেম্বর) ফেনীর বন্যাদূর্গত এলাকা পরিদর্শন ও ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের মাঝে দলের পক্ষ থেকে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ শেষে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।

এছাড়া তিনি আরও বলেন, ফ্যাসিবাদ বিরোধী এই সংগ্রাম কোন দল বা কোন নেতার নেতৃত্বে হয়নি,সাধারণ ছাত্ররা করেছে।বিগত ৪টি নির্বাচনে ভোট না হওয়ায় আমাদের প্রতিবেশী একটি দেশের মদদপুষ্ট হয়ে এ ফ্যাসিবাদ আওয়ামী সরকার জন্ম নিয়েছে।এ দলটি জন্ম থেকে থেকে ফ্যাসিবাদ ছিলনা। জামায়াত ইলেক্টোরাল রাজনীতিতে বিশ্বাসী।প্রতিটি গণতান্ত্রিক নির্বাচনে জামায়াত ইসলামি সংসদে প্রতিনিধিত্ব করেছে।শুধুমাত্র যেগুলো নির্বাচনের নামে প্রহসন ছিল সেগুলো জামায়াত বয়কট করেছে।

বাণিজ্য প্রতিদিনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

জামায়াত নেতা তাহের আরও বলেন, এবারের বন্যাটি অপ্রত্যাশিত ও মানবসৃষ্ট।আমাদের প্রতিবেশি দেশ ভালোভেসে বেশি পানি দিয়েছেন। এটা আমরা হজম করতে পারিনি। ভারত আমাদের কল্যাণকামী হতে পারত। পানি ব্যবস্থাপনা পাকিস্তান আমলেও সমাাধান হয়নি, বাংলাদেশ সরকারও পারেনি। বর্তান দেশপ্রমিক সরকার ভারতের সাথে আলোচনা করে এটা সমাধানের দাবী জানাই। ভারতের সাথে আমরা বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ ও সমতার ভিত্তিক সুসম্পর্ক চাই। রাজনৈতিকভাবে ভারত একটি দলকে এককভাবে সাপোর্ট করায় বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।এরজন্যই সেই দলটিরও বর্তমান পরিনতির হয়েছে বলে আমরা মনে করি।

শহরের গ্র্যান্ড সুলতান কনভেনশন হলে দলটির জেলা আমীর এ.কে.এম শামছুদ্দীনের সঞ্চালনায় এসময় অন্যান্যের মাঝে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর কুমিল্লা মহানগর আমীর দ্বীন মোহাম্মদ, কেন্দ্রীয় মজলিশে সূরা সদস্য অধ্যাপক লিয়াকত আলী ভূঁইয়া ও এডভোকেট এসএম কামাল উদ্দিন,ফেনী জেলা নায়েবে আমীর আবু ইউসুফ, সেক্রেটারি মুফতি আবদুল হান্নান, প্রচার সম্পাদক আ.ন.ম আবদুর রহীম, রাজনৈতিক সম্পাদক আবু বক্কর ছিদ্দিক মানিক, ইসলামী ছাত্র শিবিরের শহর সভাপতি শরীফুল ইসলাম, সেক্রেটারি ওমর ফারুক, জেলা সভাপতি ইমাম হোসাইন প্রমূখ।

অন্যদিকে বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের তিন মেয়াদে দেশে সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত দল জামায়াত ইসলামি উল্লেখ করে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ডা: তাহের আরও বলেন, অন্যায়ভাবে জামায়াতের সকল নেতৃবৃন্দকে জুডিশিয়াল কিলিংয়ের মাধ্যমে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে। আদর্শিক দল হিসেবে আমরা এর প্রতিশোধ নেয়ার প্রয়োজন মনে করিনা।বিগত বিনা ভোটের সরকার বিডিয়ার বিদ্রোহের নামে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের, শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলাম অর্থাৎ ওলামাদের, সবশেষ গত ৪ আগস্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার পদত্যাগের এক দফা কর্মসূচীতে নির্বিচারে গণহত্যা চালানো হয়েছে।

ডা.তাহের বলেন, বাংলাদেশে আর কোন অপরাধ হতে দেবেননা।কেউ আইন হাতে তুলে নেবেন না।এখন দলীয় ও ব্যক্তি সার্থকে পরিহার করে মানুষের জন্য কাজ করতে হবে। জামায়াত ইসলামি দেশকে মালিক-চাকরের পরিবেশের অবসান করতে চায়।

ছাত্রশিবিরের সাবেক এই কেন্দ্রীয় সভাপতি আরও বলেন,আমরা চাই অবাধ-সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে শীর্ঘ্রই জনগনের সরকার গঠন হবে।বর্তমান অন্তবর্তী সরকার প্রতিটি বিষয়ে সংস্কারের কথা বলছেন।আমরা মনে করি মৌলিক কিছু বিষয়ে যুক্তিক সময়ের মধ্যে এ সংস্কার হওয়া প্রয়োজন। হিন্দুদের বহু সম্পদ অন্যের হাতে চলে গেছে। এরা কারা, খোঁজ নিয়ে দেখেন কোথাও জামায়াতে ইসলামীর একজনকেও পাবেন না।

এম জি