পূর্ব পরিচয়ের সূত্র ধরে সাবেক এক জেল কর্মকর্তাকে মাদক নিরাময় কেন্দ্রে ভর্তির ফাঁদ পেতে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে আনিকা তাসনিম ওরফে অনামিকা সরকার নামের একজন ভূয়া নারী ম্যাজিস্ট্রেটকে গ্রেফতার করেছে রংপুর পিবিআই সদস্যরা।

বৃহস্পতিবার (৫ আগস্ট) দুপুরে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন কার্যালয়ে এক সংবাদ সন্মেলনে এই তথ্য জানান পিবিআই এর রংপুর পুলিশ সুপার এবিএম জাকির হোসেন। সংবাদ সন্মেলনে তিনি জানান, ২ আগস্ট রংপুর নগরীর সিও বাজারের বাসা থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন রংপুর কারাগারের সাবেক সার্জেন্ট ইন্সট্রাক্টর আনজু মিয়া। এ ঘটনায় তার স্ত্রী রংপুর মেট্রোপলিটন কোতয়ালী থানায় সাধারণ ডায়েরী করেন।

ডায়েরীর সূত্র ধরে গত ৩ আগস্ট পিবিআই আনজু মিয়াকে নগরীর ডিসির মোড়ের সুস্থ জীবন নামে একটি মাদক নিরাময় কেন্দ্র থেকে উদ্ধার করে। সেখান তাকে উদ্ধারের পর তার কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বুধবার রাতে ভূয়া ম্যাজিষ্ট্রেট অনামিকাকে দিনাজপুরে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে রংপুর পিবিআই এর সদস্যরা।

বাণিজ্য প্রতিদিনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

পিবিআই এর এই কর্মকর্তা জানান, আনজুকে জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে ভূয়া ম্যাজিষ্ট্রেট আনিকা তাসনিম ওরফে অনামিকা ও তার চক্রের বিষয়ে নানা তথ্য। প্রায় ৬ মাস আগে সৈয়দপুর থেকে বিমানে করে ঢাকা যাওয়ার সময় আনজু মিয়ার সাথে পরিচয় হয় অনামিকার। এসময় অনামিকা নিজেকে দিনাজপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ম্যাজিষ্ট্রেট পরিচয় দেন। এরপর থেকে তাদের মধ্যে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ হতে থাকে।

পিবিআই পুলিশ সুপার সংবাদ সন্মেলনে জানান, পরিচয়ের সূত্র ধরেই ২ আগস্ট সকালে অনামিকা ফোনে আনজু মিয়াকে রংপুর জিলা স্কুলের সামনে ডেকে পাঠান। ফোন পেয়ে আনজু মিয়া জিলা স্কুলের সামনে এসে দেখতে পান অনামিকা একটি নোহা গাড়িতে বসে আছে।

আনজু মিয়া অনামিকার গাড়ির দিকে এগিয়ে আসলে গাড়ি থেকে নেমে ২-৩ জন লোক আনজুকে জোড়পুর্বক গাড়িতে তুলে নিয়ে ডিসির মোড় এলাকায় অবস্থিত সুস্থ জীবন মাদক নিরাময় কেন্দ্রে নিয়ে যায়। এরপর তার কাজ থেকে নগদ ৪৪ হাজার ২৫০ টাকা, হাতঘড়ি, স্বর্ণের আংটি, ড্রাইভিং লাইসেন্স ছিনিয়ে নেয়।

এসময় আনজু তাদের কাছে জানতে চান কেন আমাকে এখানে নিয়ে আসা হয়েছে। এসময় তারা বলেন, ম্যাজিষ্ট্রেট অনামিকার অনুরোধে আপনাকে মাদক নিরাময় কেন্দ্রে আনা হয়েছে। এরপর তারা টাকা ও জিনিসপত্র অনামিকার হাতে তুলে দেন এবং তাকে মাদক নিরাময় কেন্দ্রের ভেতরে পাঠান। এরই মধ্যে গাড়ি নিয়ে লাপাত্বা হয়ে যান অনামিকাসহ অন্যান্যরা।

এসপি জাকির হোসেন জানান, বিষয়টি আমরা জানতে পেয়ে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে আনজু মিয়াকে উদ্ধার ও ভুয়া নারী ম্যাজিষ্ট্রেট অনামিকা সরকাকে গ্রেফতার করি।

তিনি জানান, ভূয়া নারী ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয়দানকারী প্রতারক অনামিকা সরকার ও তার অন্যান্য সদস্যরা ছদ্মবেশে এভাবে মানুষকে পপ্রারণা করে আসছে। এদের নামে বিভিন্ন থানায় প্রতারণার মামলাও আছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে অনামিকাকে আদালতের মাধ্যমে রংপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।