খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন বলেছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন অসাম্প্রদায়িক চিন্তা-চেতনার মানুষ। তাঁর অন্যতম আর্দশ ছিলো সহনশীলতা ও সত্যবাদিতা। তিনি দেশ ও দেশের মানুষকে ভালোবাসতেন। দেশের মানুষও বঙ্গবন্ধুকে ভালোবাসতেন। তিনি জনমানুষের ভালোবাসার এই প্রতিদান তাঁর জীবন দিয়ে প্রমাণ করেছেন।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০২তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি’র বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, ’৭৫ এর ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর দেশে যে কালো অধ্যায়ের সৃষ্টি হয়; তা বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর আস্তে আস্তে দূর হয়। দেশ ঘুরে দাঁড়ায়। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ শুধু মুখে বললে হবে না, অন্তরে ধারণ করতে হবে। তাঁর আদর্শ ও চেতনা ধারণ করেই দেশকে এগিয়ে নিতে হবে।

বাণিজ্য প্রতিদিনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

আয়োজনে মুখ্য আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন একুশে পদকপ্রাপ্ত সমাজসেবী ও আইনজীবী এস এম আব্রাহাম লিংকন।

তিনি তার বক্তব্যে বলেন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন একজন আপদমস্তক দেশপ্রেমিক ও প্রতিবাদী রাজনীতিবিদ। তিনি জানতেন বাঙালির স্বাধিকার প্রতিষ্ঠা, সার্বভৌমত্বের জন্য তাদেরকে সংগঠিত করার কোনো বিকল্প নেই। এ উপলব্ধিতে তিনি পর্যায়ক্রমে গণতান্ত্রিক যুবলীগ, ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করেছেন। বঙ্গবন্ধু তখন আপোষ করলে পাকিস্তানের সরকার প্রধান হতে পারতেন, কিন্তু তিনি তা চাননি। তিনি বাংলার মানুষের মুক্তি চেয়েছেন, স্বাধীনতা চেয়েছেন। তাই তার স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠায় আমাদের ধর্ম নিরপেক্ষ হতে হবে এবং দেশপ্রেম লালন করতে হবে।

আইন স্কুলের ডিন প্রফেসর ড. মো. ওয়ালিউল হাসানাত এর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর খান গোলাম কুদ্দুস। সভায় আরও বক্তব্য রাখেন শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. তরুণ কান্তি বোস ও অফিসার্স কল্যাণ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক দীপক চন্দ্র মন্ডল।

আলোচনা সভা শেষে দিবসটি উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠিত শিশু চিত্রাংকন প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ করা হয়।

এর আগে সকাল ৯টায় শহিদ তাজউদ্দীন আহমদ ভবনের সামনে উপাচার্য কর্তৃক জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে দিবসের কর্মসূচি শুরু হয়। পরে তাঁর নেতৃত্বে একটি শোভাযাত্রা প্রশাসন ভবনের সামনে থেকে শুরু করে হাদী চত্বর ঘুরে কালজয়ী মুজিব প্রাঙ্গণে এসে শেষ হয়।

এসময় বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ‘কালজয়ী মুজিব’ এর বেদীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে উপাচার্য প্রথম শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল, বিভিন্ন ডিসিপ্লিন, আবাসিক হলসমূহ, শিক্ষক সমিতি, অফিসার্স কল্যাণ পরিষদ ও কর্মচারীবৃন্দের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করা হয়।

পরে আইন ডিসিপ্লিন কর্তৃক প্রকাশিত দেয়ালিকা ‘বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন, শিশুর জীবন হোক রঙিন’ উদ্বোধন করেন উপাচার্য।
এছাড়া অন্যান্য কর্মসূচি হলো বাদ যোহর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ ও প্রশাসন ভবন সংলগ্ন মসজিদে দোয়া, কেন্দ্রীয় মন্দিরে প্রার্থনা, দিনব্যাপী ব্লাড গ্রুপিং, বঙ্গবন্ধুর জীবনভিত্তিক আলোকচিত্র প্রদর্শনী, বিকেলে মুক্তমঞ্চে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও সন্ধ্যায় প্রদীপ প্রজ্বালন।

এছাড়া দিবসটি উপলক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইনগেট, মেইনগেট থেকে হাদী চত্বর পর্যন্ত রাস্তা, প্রশাসন ভবন, ক্যাফেটেরিয়া, হলসমূহ এবং উপাচার্যের বাসভবন আলোকসজ্জা করা হয়েছে।