ব্যবসায়ীদের দাবির প্রেক্ষিতে চলতি বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত বৃহৎ শিল্প, এসএমই, কৃষি ঋণসহ সব ধরনের ছোট বড় ঋণ পরিশোধে সুবিধা দিল বাংলাদেশ ব্যাংক।

বুধবার রাতে (২২ জুন) বাংলাদেশ ব্যাংকের এক সার্কুলারে এ নির্দেশনা দেয়া হয়।

সার্কুলারে বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে পুনরায় কোভিড এর সংক্রমণ বৃদ্ধি, দেশের উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে সৃষ্ট বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি এবং বিশ্বে যুদ্ধাবস্থার কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচামালসহ বিভিন্ন পন্যের দাম বৃদ্ধি ও পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ায় ঋণগ্রহীতাদের ঋণের টাকা পুরোপুরি পরিশোধে অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছেন। তাই কেন্দ্রীয় ব্যাংক এমন নির্দশনা দিয়েছে।

বাণিজ্য প্রতিদিনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

এর আগে করোনার সময়ে ২০২০ সালে ঋণের এক টাকা পরিশোধ না করেও খেলাপি থেকে মুক্তি পেয়েছে ব্যবসায়ীরা। পরে ২০২১ সালে পুরোপুরি সুবিধা তুলে ১৫ শতাংশ পরিশোধ করলে খেলাপি করা যাবে না নির্দেশনা দেয়া হয়। চলতি বছরের শুরু থেকে এই ঋণ সুবিধা তুলে দেয়া হয়। তবে সম্প্রতি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আবারও ঋণ সুবিধা চায় ব্যবসায়ীরা। তাদের দাবির প্রেক্ষতিে আবারও এই সুবিধা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

এতে বলা হয়েছে, বৃহৎ শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিতরণকৃত (টার্ম লোন) ঋণ যেগুলো ১ এপ্রিল থেকে আনক্লাসিফাইড আছে যেসব ঋণের বিপরীতে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত ন্যূনতম ৫০ শতাংশ, জুলাই -সেপ্টেম্বর পর্যন্ত  ৬০ শতাংশ এবং অক্টোবর হতে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৭০ শতাংশ পরিশোধ করলে ঋণ খেলাপি করা যাবে না।

এতে আরও বলা হয়েছে, সিএমএসএমই ও কৃষি খাতে বিতরণকৃত টার্ম ঋণের যেগুলো অশ্রেণিকৃত অবস্থায় রয়েছে, সেসব ঋণ চলতি বছরের এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত নূন্যতম ২৫ শতাংশ, জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ন্যূনতম ৩০ শতাংশ এবং অক্টোবর হতে ডিসেম্বর  ন্যূনতম ৪০ শতাংশ পরিশোধ করা হলে উক্ত ঋণসমূহ শ্রেণিকরণ করা যাবে না।

এছাড়া ১ এপ্রিলে পর্যন্ত বৃহৎ শিল্প ও সিএমএসএমই ও কৃষি খাতে ডিমান্ড লোন আনক্লাসিফাই ছিল তার ডিসেম্বর ২২ এর মধ্যে ৩ কিস্তিতে পরিশোধিত হলে সেই ঋণও খেলাপি হিসেবে দেখানো যাবে না।

সুবিধাপাপ্ত কিস্তিসমুহের বাকি টাকা এ ঋণ মেয়াদ শেষ হওয়ার পরবর্তী এক বছরের একই কিস্তিতে পরিশোধ করতে হবে বলে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

এছাড়া ইসলামী ব্যাংকসমূহ তাদের বিনিয়োগের ক্ষেত্রে একই নীতিমালা অনুসরণ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। একইসঙ্গে সুবিধাপ্রাপ্ত ঋণের সুদ/মুনাফা বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক পরবর্তিতে নির্দেশনা দিবে।

সার্কুলারে বন্যা কবলিত জেলাসমূহ ( সুনামগঞ্জ , সিলেট , মৌলভীবাজার , হবিগঞ্জ , নেত্রকোনা , কিশোরগঞ্জ , শেরপুর , জামালপুর , রংপুর , লালমনিরহাট , কুড়িগ্রামসহ) বন্যা কবলিত জেলায় কৃষি খাতে বিতরণকৃত ঋণের চলতি বছরের এপ্রিল থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত কোন টাকা পরিশোধিত না করলে খেলাপি করা যাবে না এমন নির্দেশনা দেয়।

এছাড়া ওই অঞ্চলে সিএমএসএমই খাতে বিতরণকৃত (টার্ম লোন) চলতি বছরের এপ্রিল হতে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়কালে প্রদেয় কিস্তিসমূহের ন্যূনতম ২৫% চলতি বছরের মধ্যে পরিশোধ করলে খেলাপি থেকে মুক্তি পাবে।