সম্প্রতি মুক্তি পাওয়া ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ নিয়ে বিতর্কের অন্ত নেই। ভারতের একাধিক রাজ্যে নিষেধাজ্ঞা, সমালোচনার মুখোমুখি হয়েও রমরমিয়ে ব্যবসা করেছে। এবার সেই সিনেমা নিয়েই বিস্ফোরক নাসিরুদ্দিন শাহ। সপাট জানালেন, ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ দেখবেন না তিনি। দেখার ইচ্ছাও নেই। অনেক কিছু পড়েছেন সিনেমাটি নিয়ে। সেটাই যথেষ্ট তার কাছে।

ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ানোর অভিযোগে একাধিকবার বলিউড সিনেমাকে কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হয়েছে। প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে ছবির গল্পও। গতবছর ‘দ্য কাশ্মির ফাইলস’ নিয়ে কম বিতর্ক হয়নি। সেই উদাহরণের তালিকায় নতুন সংযোজন ‘দ্য কেরালা স্টোরি’। বিতর্কের পালে ভর করে বক্স অফিসে জমিয়ে ব্যবসা করলেও প্রচারমূলক সিনেমার তকমা কিন্তু এই দুটি সিনেমার ক্ষেত্রেই জুটেছে।

উপরন্তু ধর্মকে হাতিয়ার করে যেভাবে ভারতের রাজনীতি প্রভাবিত হচ্ছে কিংবা ভোটবাক্স ভরা হচ্ছে, সেই বিষয়েও এযাবতকাল বহু বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বরা মুখ খুলেছেন। আর ধর্মীয় বিদ্বেষ যখন সিনেমার গল্প হয়ে ধরা দেয়, তখন আমজনতার মজ্জায় হিংসা ঢোকানো যে খুব একটা কঠিন হয় না, সেই কৌশল অনুশীলন ভারতে অনেক আগে থেকেই চালু! এবার সেই প্রেক্ষিতেই বিস্ফোরক কথা নাসিরুদ্দিন শাহের মুখে।

বাণিজ্য প্রতিদিনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

তার মন্তব্য, “বর্তমানে সিনেমাগুলোতে যা দেখানো হচ্ছে, তা পুরোপুরি ‘ইসলামোফোবিয়া’। অবশ্যই এটা চিন্তার কারণ। কেরামতির সঙ্গে এহেন বিদ্বেষমূলক ভাবনা আজকাল জোর করে ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে মানুষের মনে। মুসলিম বিরোধিতা করাটা যেন হালফিলের ফ্যাশন। ‘ভিড়’, ‘আফওয়া’, ‘ফারাজ’-এর মতো সিনেমাগুলো বক্স অফিসে চলছে না। তবে ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ দেখতে যাচ্ছেন দর্শকরা। আমি দেখিওনি এই ছবি। ইচ্ছাও নেই। অনেক কথা পড়ে ফেলেছি ইতোমধ্যেই এই সিনেমা নিয়ে।”

এখানেই অবশ্য থামেননি তিনি। নির্দিষ্ট কোনো রাজনৈতিক দলের বন্দনার জন্য সিনেমাকে যেভাবে হাতিয়ার করা হচ্ছে, তার বিরুদ্ধেও সুর চড়ালেন নাসিরুদ্দিন শাহ। কোনোরকম রেয়াত না করেই মোদি-সরকারকে বিঁধে বলিউডের প্রবীণ অভিনেতার মন্তব্য, ‘এই যে ট্রেন্ডটা চলছে, তা নিঃসন্দেহে মারাত্মক। হিটলার জমানায় নাৎসি জার্মানের যে পরিস্থিতি হয়েছিল, আমরা সেই পথেই এগোচ্ছি। পরিচালকদের জোর করে হিটলার-বন্দনার জন্য সিনেমাকে হাতিয়ার করা হচ্ছিল সেইসময়ে। যা সহ্য করতে না পেরে তখন বহু খ্যাতনামা পরিচালকরা জার্মানি ছেড়ে হলিউডে চলে যান। সেখানে ছবি করেন। এবার এ দেশেও সেই একই বিষয় ঘটছে।’

বলাই বাহুল্য, এ প্রসঙ্গে নাসিরুদ্দিন যে বিজেপি সরকারকে খোঁচা দিয়েছেন তা সহজে অনুমেয়। তবে তিনি আশা করছেন, খুব তাড়াতাড়ি এই পরিস্থিতির অবসান হবে। ঘৃণা ছড়ানো বন্ধ হবে।