হেলিকপ্টার ভেঙে পড়া নিছকই দুর্ঘটনা নাকি ষড়যন্ত্র তথা নাশকতা। ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির মৃত্যুর ঘটনায় এমন শত প্রশ্ন উঠছে। সবারই সন্দেহের তীর ইসরায়েলের দিকে। বিশেষত অধিকাংশের আঙুল দেশটির গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের প্রতি।

প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম নিউজ উইক ও টাইম ম্যাগাজিনের প্রতিবেদনে বলা হয়, রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টার ভেঙে পড়াকে নিছক দুর্ঘটনা বলে আখ্যা দিতে রাজি নন বেশিরভাগ আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ।

লেজার রশ্মি বিচ্ছুরণের সাহায্যে হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত করানো হয়েছে বলেও তত্ত্ব উঠে এসেছে। যার সব হয়েছে ইরানের সুপ্রিম লিডার আয়াতোল্লাহ আলি খোমেইনির পুত্রকে প্রেসিডেন্ট পদে বসানোর চক্রান্ত হিসেবে। অর্থাৎ গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব সামনে এসেছে।

বাণিজ্য প্রতিদিনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

শিয়া অধ্যুষিত দেশ ইরানের দীর্ঘ শত্রুতা রয়েছে ইসরায়েলের সঙ্গে। ফলে প্রেসিডেন্ট রাইসির হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার পেছনে বেনজামিন নেতানিয়াহুর দেশের হাত রয়েছে বলে অনেকে মনে করছেন। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, পুরোনো হেলিকপ্টার, রক্ষণাবেক্ষণের অভাব, খারাপ আবহাওয়ার কারণে দুর্ঘটনা ঘটেছে। তবে অধিকাংশ মানুষ এক্ষেত্রে ইসরায়েলি ষড়যন্ত্র খুঁজছেন।

গত এপ্রিলে প্রেসিডেন্ট রাইসির নেতৃত্বেই ইসরায়েলের ওপর হামলা চালায় ইরান। ইসরায়েলবিরোধী হিসেবে দাবি করা ইহুদি বিজ্ঞানী বেনজামিন রুবিনস্টাইন বলেন, আমরা ইসরায়েলের ষড়যন্ত্র তত্ত্ব উড়িয়ে দিতে পারি না। এজন্য তদন্ত হওয়া উচিত। তবে সত্য প্রকাশ্যে আসবে।

সর্বপ্রথম ইরানের সরকারি সংবাদমাধ্যমে এক ব্যক্তি ইসরায়েলের ষড়যন্ত্র থিওরির কথা উল্লেখ করে বিতর্ক তৈরি করেন। দেশটির শিক্ষাবিদ তথা বিশেষজ্ঞ ফোয়াদ ইজাদি বলেন, সাধারণত বৈরি আবহাওয়া অথবা যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। কিন্তু আরও কিছু বিষয় থাকে, যা গোপন থেকে যায়।

ইসরায়েল ও মোসাদের হাত থাকার দিকেই ইঙ্গিত করেন তিনি। শিক্ষাবিদের ভাষ্যমতে, আজারবাইজানে ইসরায়েল ও মোসাদের উপস্থিতি সেদেশের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ করেছে। প্রতিবেশী দেশ থেকে টার্গেট করা হচ্ছে না তো? ভেবে দেখতে হবে।

অনেক সোশ্যাল অ্যাক্টিভিস্টের দাবি, হেলিকপ্টারের পাইলট বিক্রি হয়ে গিয়েছিলেন। তিনটি হেলিকপ্টার ইরান থেকে আজারবাইজানের উদ্দেশে রওনা হলেও ফিরল কেবল দুটি। ইরানের প্রেসিডেন্টসহ বাকি ৯ জনের হেলিকপ্টারটিই কীভাবে একমাত্র খারাপ আবহাওয়ার শিকার হলো?

তবে আন্তর্জাতিক মহলে একাধিক তথ্য এবং থিওরি ছড়িয়ে পড়লেও এই দুর্ঘটনাকে হত্যা বলে উল্লেখ করেনি ইরান। ঘন কুয়াশা এবং একনাগাড়ে বৃষ্টিপাতের জেরে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া তৈরি হয়েছিল। সেই সঙ্গে উল্কাপাত ঘটেছিল। তারই শিকার রাইসির হেলিকপ্টার। এমনটাই দাবি করেছে ইরান প্রশাসন।