সর্বশেষ
২১ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ |
২১ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ |
গত এক বছর ধরে উচ্চ সুদে আমানত সংগ্রহ করছে ব্যাংকগুলো। আমানতের সুদহার বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ। কিন্তু তারপরও মানুষের হাতে নগদ টাক রাখার প্রবণতা কমছে না। এমনকি ৯ মাস ধরে মানুষের হাতে নগদ টাকা বা ব্যাংকের বাইরে থাকা টাকার পরিমাণ ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে। সর্বশেষ চলতি বছরের জুলাই মাসেও ব্যাংকের বাইরে থাকা মানুষের হাতে নগদ টাকার পরিমাণ বেড়েছে ১ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা। আর গত নয় মাসে (নভেম্বর-জুলাই) মানুষের হাতে থাকা নগদ টাকার পরিমাণ বেড়েছে ৪৫ হাজার ৬৮৬ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। জানা যায়, মানুষ ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নেওয়ার পর যা আর ব্যাংকে ফেরত আসে না, তা-ই ব্যাংকের বাইরে থাকা টাকা হিসেবে পরিচিত।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গেল জুলাই মাস শেষে মানুষের হাতে নগদ টাকা বা ব্যাংকের বাইরে থাকা টাকার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৯১ হাজার ৬৩০ কোটি ৪ লাখ টাকা। আর আগের মাস জুন শেষে মানুষের হাতে নগদ টাকার পরিমাণ ছিল ২ লাখ ৯০ হাজার ৪৩৬ কোটি ৫ লাখ টাকা। সেই হিসাবে এক মাসে ব্যাংকের বাইরে নগদ টাকার পরিমাণ বেড়েছে ১ হাজার ১৯৩ কোটি ৯ লাখ টাকা।
২০২৩ সালের জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ধারাবাহিক কমছিল ব্যাংকের বাইরে থাকা টাকার পরিমাণ। কিন্তু নভেম্বর থেকে আবার বাড়তে শুরু করে। যেটা চলতি বছরের জুলাই পর্যন্ত অব্যাহত আছে।
প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, গত বছরের অক্টোবরে ব্যাংকের বাইরে মানুষের হাতে নগদ টাকার পরিমাণ ছিল ২ লাখ ৪৫ হাজার ৯৪৩ কোটি টাকা। পরের মাস নভেম্বরে সেটা বেড়ে দাড়ায় ২ লাখ ৪৮ হাজার ৪৪১ কোটি টাকা, ডিসেম্বরে ২ লাখ ৫৪ হাজার ৮৬০ কোটি, জানুয়ারিতে ২ লাখ ৫৭ হাজার ২৯৫ কোটি, ফেব্রুয়ারিতে ২ লাখ ৫৭ হাজার ৫৭৪ কোটি, মার্চে ২ লাখ ৬১ হাজার ১৯৫ কোটি, এপ্রিলে বেড়ে দাঁড়ায় ২ লাখ ৭০ হাজার ৬৫৮ কোটি, মে মাসে ২ লাখ ৭০ হাজার ৬৫৮ কোটি, জুনে ২ লাখ ৯০ হাজার ৪৩৬ কোটি ও সর্বশেষ জুলাইয়ে বেড়ে দাড়ায় ২ লাখ ৯১ হাজার ৬৩০ কোটি টাকা। অর্থাৎ নয় মাসে ব্যাংকের বাইরে মানুষের হাতে নগদ টাকা বেড়েছে ৪৫ হাজার ৬৮৬ কোটি টাকা।
খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, বেশ কিছু কারণে মানুষের হাতে থাকা নগদ অর্থের পরিমাণ বেড়েছে। উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে মানুষের খরচ বেশি হয়। এজন্য বাংক থেকে টাকা তুলে হাতে রাখে। তারপর ব্যাংক খাতের সামগ্রিক পরিস্থিতির কারণে কিছু ব্যাংকের প্রতি মানুষের আস্থায়ও চির ধরেছে। ওই সব ব্যাংক থেকে আমানত তুলে নেন আমানতকারীরা। ফলে মানুষের হাতে নগদ অর্থের পরিমাণ বেড়ে যায়।
এদিকে, গত জুলাই মাসে মানুষের হাতে থাকা নগদ টাকার পরিমাণ বাড়লেও জুনের তুলনায় কমেছে বাজারে মুদ্রা সরবরাহ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত মে মাসে ব্যাংক খাতে ছাপানো টাকার স্থিতি (রিজার্ভ মানি) ছিল ৩ লাখ ৬০ হাজার ৭৫১ কোটি টাকা। জুনে রিজার্ভ মানির পরিমাণ বেড়ে হয়েছিল ৪ লাখ ১৩ হাজার ৬৪৪ কোটি টাকা। আর পরের মাস জুলাই শেষে রিজার্ভ মানির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৮৯ হাজার ৩১৭ কোটি টাকা। সেই হিসাবে হিসাবে এক মাসে রিজার্ভ মানির পরিমাণ কমেছে ২৪ হাজার ৩২৭ কোটি টাকা।
এএ
বাণিজ্য প্রতিদিনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন
