Top
সর্বশেষ

আগামী বছর অস্থিতিশীল থাকতে পারে বৈশ্বিক পণ্যবাজার

৩১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ২:২৫ অপরাহ্ণ
আগামী বছর অস্থিতিশীল থাকতে পারে বৈশ্বিক পণ্যবাজার
নিজস্ব প্রতিবেদক :

পুনরায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। বাজারসংশ্লিষ্টদের ধারণা, আমদানিতে শুল্ক আরোপ করে তিনি বৈশ্বিক বাণিজ্যপ্রবাহ ব্যাহত করতে পারেন।

ডোনাল্ড ট্রাম্প পুনরায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন। বাজারসংশ্লিষ্টদের ধারণা, আমদানিতে শুল্ক আরোপ করে তিনি বৈশ্বিক বাণিজ্যপ্রবাহ ব্যাহত করতে পারেন। অন্যদিকে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিয়ে এখনো অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে। এসব কারণে ২০২৫ সালে অস্থিতিশীল থাকতে পারে বৈশ্বিক পণ্যবাজার। গতকাল এক প্রতিবেদনে বিভিন্ন ডাটা বিশ্লেষণ করে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

খাতসংশ্লিষ্টরা জানান, ট্রাম্প আমদানিতে শুল্ক আরোপ করে বৈশ্বিক বাণিজ্যপ্রবাহ ব্যাহত করতে পারেন। তবে শুল্ক আরোপ করলে সাধারণত বৃহৎ বাণিজ্যিক অংশীদাররা পণ্য বেচাকেনায় যথেষ্ট ছাড় দিয়ে থাকেন। এ সময় বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক নেতৃত্ব বজায় রাখে যুক্তরাষ্ট্র, যা বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধিতে সহায়ক। এমন পরিস্থিতি তৈরি হলে মূল্যস্ফীতি কমে যাওয়াসহ আর্থিক নীতি সহজ হয়।

অন্যদিকে অর্থনৈতিক প্রণোদনা পদক্ষেপ কার্যকর হলে চীনে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বজায় থাকবে, যার প্রভাব পড়তে পারে বিভিন্ন পণ্যের দামে। তবে এমন পরিস্থিতিতেও নিম্নমুখী থাকতে পারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের বাজার। কারণ যুক্তরাষ্ট্র থেকে সরবরাহ বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এছাড়া ট্রাম্প ইউক্রেন ও মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করলে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বজায় থাকতে পারে। ফলে লাভবান হবে তামার মতো ধাতব পণ্যের বাজার। যদিও রাশিয়া থেকে সরবরাহ বাড়লে জ্বালানি তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের বাজার আবার চাপের মুখে পড়তে পারে।

তবে বিপরীতমুখী পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসন প্যারিস জলবায়ু চুক্তি ও ন্যাটো থেকে বেরিয়ে আসার মতো চরম নীতি বাস্তবায়ন করলে বাণিজ্যপ্রবাহে বাধা তৈরি হবে। এমন পরিস্থিতিতে বিশ্বব্যাপী মুদ্রাস্ফীতি বেড়ে যেতে পারে। ফলে আর্থিক নীতি কঠোর করতে পারে অনেক দেশ। এ কারণে তামা ও লোহার মতো বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধির সঙ্গে সম্পর্কিত পণ্যের দাম আরো নিম্নমুখী হয়। এছাড়া জ্বালানি তেল ও এলএনজির চাহিদায়ও প্রভাব পড়ে।

অনেক বিশ্লেষক জানান, সরকারি প্রণোদনার কারণে চলতি বছরের শেষের দিকে চীনের অর্থনৈতিক সমস্যা আগের তুলনায় কিছুটা সমাধান হয়েছে। নির্মাণ খাতের কার্যক্রমও বেড়েছে। ২০২৫ সালে এ ধারা বজায় থাকলে ভোক্তা ব্যয় বাড়তে পারে। এর মধ্যে ট্রাম্পের নীতি সফলভাবে মানিয়ে নেয়ার পাশাপাশি ইউরোপ ও গ্লোবাল সাউথের দেশগুলোর সঙ্গে ভালো সম্পর্ক বজায় রাখলে তামা, আকরিক লোহা ও এলএনজির মতো পণ্যগুলোর চাহিদা বাড়তে পারে। তবে বিদ্যুচ্চালিত যানবাহনের ব্যবহার বাড়লে কমতে পারে জ্বালানি তেলের চাহিদা।

এদিকে ওপেক প্লাস (পেট্রোলিয়াম রফতানিকারক দেশগুলোর সংস্থা ওপেক ও রাশিয়াসহ অন্যান্য সহযোগী দেশ নিয়ে গঠিত) জ্বালানি তেল উৎপাদন কমিয়ে গত দুই বছর ব্যারেলে প্রায় ৭৫ ডলার দাম বজায় রেখেছে। তবে চলমান চাহিদার দুর্বলতা ও অন্যান্য দেশে উত্তোলন বাড়ার কারণে এ সংস্থার ঐক্যে চাপ তৈরি করতে পারে।

বাজার বিশ্লেষকরা আরো জানান, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য বিরোধ মোকাবেলায় চীন জ্বালানি রূপান্তরের দিকে মনোযোগ দিলে ২০২৫ সালে ঊর্ধ্বমুখী হয়ে উঠতে পারে তামা, লিথিয়াম ও রুপার মতো ধাতুর বাজার।

এনজে

শেয়ার