২২ বছর আগে ২০০০ সালে নোয়াখালী সদর উপজেলার অশ্বদিয়া ইউনিয়নের দিনমনির হাট এলাকার নিজ বাড়ি থেকে ঘুরতে রাস্তায় বের হন ১৪ বছর বয়সী ফারজানা আক্তার (ছদ্মনাম)। ঘুরতে ঘুরতে এক পর্যায়ে নিজের বাড়ির রাস্তা হারিয়ে ফেলেন তিনি। পড়াশোনা না জানায় এবং ঠিকমতো ঠিকানা বলতে না পারায় আর বাড়ি ফিরে আসতে পারেননি ফারজানা। তার পরিবারের লোকজন অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাকে কোথায় ও পাননি।

‘নিখোঁজ ফারজানা মারা গেছেন অথবা পাচারকারী লোকজন পাচার করেছে’ এলাকার লোকজনের দেওয়া এমন তথ্যের কারনে তাৎক্ষণিক ভাবে কোন আইনগত ব্যবস্থা নেয়নি তার পরিবার।

এদিকে হারিয়ে যাওয়া ফারজানা বেঁচে থাকার আশায় এক ব্যক্তির মাধ্যমে অন্যের বাসায় গৃহ পরিচারিকার কাজ নেয়। এত বছর ধরে সে রাজশাহী, চট্টগ্রাম ও নোয়াখালীতে বিভিন্ন বাসায় গৃহ পরিচালিকার কাজ করতে থাকে।

বাণিজ্য প্রতিদিনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

অন্যদিকে তার পরিবারের লোকজন বিভিন্ন মাধ্যমে তাকে খুঁজতে থাকে। কিছুদিন আগে ফারজানার ভাই মোঃ শহিদ উল্লাহর কাছে খবর আসে তার বোনের মতো চেহারা দেখতে এক নারী নোয়াখালীর সোনাপুর এলাকার একটি বাসায় গৃহপরিচারিকার কাজ করে। এমন তথ্যের ভিত্তিতে গত শনিবার (২ এপ্রিল) সুধারাম মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন শহিদ উল্লাহ। এছাড়া সোমবার (৪ এপ্রিল) র‌্যাব-১১, সিপিসি-৩ কার্যালয়ে সাধারণ ডায়েরিসহ হাজির হয়ে মৌখিক ভাবে অভিযোগ করেন তিনি।

অভিযোগের ভিত্তিতে নিখোঁজ ফারজানার পরিবারের লোকদের ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় সোমবার (৪ এপ্রিল) দিবাগত রাত ১০ টা থেকে ১১ টা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে সোনাপুর জিরো পয়েন্ট এলাকা থেকে ফারজানা আক্তার কে উদ্ধার করে র‌্যাব।

র‌্যাব-১১, সিপিসি-৩ নোয়াখালী ক্যাম্পের কোম্পানী কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খন্দকার মো. শামীম হোসেন উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, অভিযোগ পাওয়ার মাত্র ২৪ ঘন্টার মধ্যে উদ্ধার শেষে ফারজানা আক্তারকে তার ভাই মোঃ শহীদ উল্লাহর কাছে হস্তান্তর করা হয়।

‘র‌্যাব প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে আইনশৃঙ্খলার সামগ্রিক উন্নয়ন ও অপরাধের উৎস উদঘাটনে কাজ করে যাচ্ছে এবং এর ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে’ বলেও জানান তিনি।

এদিকে দীর্ঘ ২২ বছর পর হারিয়ে যাওয়া বোনকে ফিরে পেয়ে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন ভাই মোঃ শহীদ উল্লাহ। তিনি বলেন, বোনকে ফিরে পেয়ে আমি ও আমার পরিবারের প্রত্যেক সদস্য অনেক খুশি।