দীর্ঘ ছয় বছর পর বগুড়ার শিবগঞ্জের লাবলু হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এ ঘটনার মূল আসামি ফরিদা বেগম (৪৫) কে গাজীপুর থেকে এবং তার সহযোগী সোনাতল উপজেলার মৃত আমজাদের ছেলে গফুর (৪০) কে গ্রেফতার করা হয়েছে।

গ্রেফতারকৃত ফরিদা শিবগঞ্জের ফজর উদ্দিনের মেয়ে এবং লাবলুর সাবেক স্ত্রী। মূলত লাবলুর উপর ক্ষিপ্ত হয়েই তাকে খুন করে সাবেক স্ত্রী ফরিদা ও তার সহযোগীরা। মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটার দিকে পিবিআই বগুড়ার পুলিশ সুপার আকরামুল হোসেন তার নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য তুলে ধরেন।

এর আগে ২০১৬ সালের ১১ জুলাই শিবগঞ্জের বৃষ্ণপুর এলাকার একটি মেহগনি বাগানে গরু ব্যবসায়ী লাবলুর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় শিবগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করে লাবলুর স্ত্রী নূর জাহান খাতুন। পরে মামলার তদন্ত ভার পায় পিবিআই বগুড়া ।

বাণিজ্য প্রতিদিনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

পুলিশ সুপার আকরামুল হোসেন বলেন, এটি একটি পূর্ব পরিকল্পিত হত্যাকান্ড। লাবলু ও ফরিদার মধ্যে পরকিয়ার সম্পর্ক ছিল যা ফরিদার স্বামী মিনু বেপারী জানতে পারে এবং তালাক প্রদান করে। তালাক প্রাপ্ত হওয়ার পর লাভলু ফরিদা বেগমকে বিয়ের ৬ (ছয়) দিন পরেই তালাক প্রদান করে।

তালাক প্রদানের পরেও লাভলু আসামী ফরিদাকে জিম্মি করে নিয়মিত শারীরিক সম্পর্ক করত। যার ফলে ফরিদা বেগমের মনে ডিসিস্ট লাবলুর উপর ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। লাভলুর কারণে পূর্বের স্বামীর দ্বারা তালাক প্রাপ্ত ও জিম্মি করে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনসহ বিভিন্ন কারণে লাবলুর উপর আসামী ফরিদা বেগম প্রতিশোধ প্রবণ হয়ে উঠেন এবং তাকে মেরে ফেলার পরিকল্পনা করেন।

২০১৬ সালের ১০ মে রাত ৯টার দিকে শারীরিক সম্পর্কের লোভ দেখিয়ে আসামী ফরিদা বেগম লাবলু সরকার কে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে শিবগঞ্জের বৃষ্ণপুর গ্রামে একটি মেহগনি বাগানে আসতে বলে। এই স্থানে লাবলু ও আসামী ফরিদা এর আগেও অনেক বার শারীরীক সম্পর্ক স্থাপন করেছে। লাবলু ওই স্থানে আসার পর পরিকল্পনা অনুযায়ী আসামী ফরিদা বেগম তার অন্যান্য সহযোগীদের সহায়তায় হাত পা চেপে ধরে শ্বাসরোধ করে লাবলু কে হত্যা করে ওই স্থান ত্যাগ করে এবং এক পর্যায়ে আসামী ফরিদা বেগম নিজ এলাকা ছেড়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে পলাতক থাকেন।

পরে ২৪ এপ্রিল সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে গাজীপুরের জয়দেবপুর থেকে ফরিদাকে গ্রেফতার করে পিবিআই। পরে পরে তিনি ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। জবানবন্দিতে হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্ত থাকার বিষয় ও ঘটনার বর্ণনা দেন তিনি। একই সঙ্গে হত্যাকাণ্ডে জড়িত অন্যদের নাম প্রকাশও করেন ফরিদা। তার জবানবন্দি অনুযায়ী ৪০ বছরের আব্দুল গফুর নামে আরও একজনকে গ্রেফতার করা হয়।

পুলিশ সুপার আরও বলেন, ফরিদা বেগম ও আব্দুল গফুর কে আদালতে পাঠানো হয়েছে। এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত অন্যদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে।