Top
সর্বশেষ

কুড়িগ্রামে ব্রি-২৮ ধান চাষে দিশেহারা কৃষক

০৭ মে, ২০২২ ৪:১২ অপরাহ্ণ
কুড়িগ্রামে ব্রি-২৮ ধান চাষে দিশেহারা কৃষক
শফিকুল ইসলাম বেবু, কুড়িগ্রাম :

কুড়িগ্রামের বিভিন্ন উপজেলায় এবছর বোরো আবাদে ব্রি-২৮ জাতের ধানে নেক ব্লাস্ট (শীষ মরা) রোগের আক্রমণে কৃষকরা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

অধিক ব্যায়ে কৃষকরা ব্রি-২৮ ধান আবাদ করলেও এই রোগের কারণে দিশেহারা হয়ে পরেছেন এখানকার চাষিরা। তারা বলছেন কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শেও ধানের শীষ মরা রোগ ঠেকাতে পারেননি তারা।

কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতি বিঘা জমিতে ব্রি-২৮ জাতের ধান আবাদ করতে সবমিলিয়ে ব্যয় হয় ৮-৯ হাজার টাকা। এদিকে ভালো ফলন হলে প্রতিবিঘা জমিতে ধান উৎপাদন হতো ১৮-২০ মণ। সেখানে এই ব্লাস্ট (শীষ মরা) রোগের কারণে বিঘাতে ১০ মণও হবে না ধান। তারা বলছেন, আগামীতে আর ব্রি-২৮ জাতের ধান আবাদ করবেন না।

কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সুত্রে জানা গেছে, জেলায় বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ১ লাখ ১৫ হাজার হেক্টর জমিতে। তবে আবাদ হয়েছে ১লাখ ১৬ হাজার ১২ হেক্টর জমিতে। তাদের তথ্যমতে এই ব্লাস্ট রোগের আক্রমণে ৭-৮ হেক্টর জমির ব্রি-২৮ জাতের ধানের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

সরেজমিনে জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ঘুরে দেখা গেছে ব্লাস্ট (শীষ মরা) রোগে ব্রি-২৮ জাতের ধান চিটা হয়ে যাওয়ার এমনি চিত্র দেখা গেছে।

কুড়িগ্রাম সদরের পাঁচগাছী ইউনিয়নের বানিয়া পাড়া গ্রামের আব্দুল খালেক নামের এক কৃষক বলেন, আমি ১ বিঘা জমিতে ব্রি-২৮ ধান লাগাইছি। বেশি অর্থেকে নষ্ট হয়ে গেছে। বিভিন্ন প্রকার ঔষধ দিয়েও কোন কাজ হয়নি। কৃষি বিভাগও জানেনা এই রোগের চিকিৎসা। এবার যা হইছে হইছে আগামীতে আর আমি ব্রি-২৮ ধান আবাদ করবো না। এক এক করে ২-৩ বার মাইর খাইলাম আর না।

একই এলাকার কফিয়াল বলেন, আমিও ১৬ শতক জমিতে ব্রি-২৮ ধান লাগাইছি ধান হয় নাই, শুধু চিটা আর চিটা। যেসময় এই রোগটা হয় অনেকের সাজেশনে কত প্রকার ঔষধ যে জমিতে প্রয়োগ করছি কোন কাজ হয় নাই। কৃষি বিভাগের লোকজনও আমাদের কোন উপকার করতে পারে নাই। গত ২-৩ বছর থেকে ব্রি-২৮ ধান চাষ করে ক্ষতি হচ্ছে। এবারেই যা আবাদ করছি আর না।

কাশেম আলী নামের আরও এক কৃষক বলেন, আমিও একবিঘা জমিতে ২৮ ধান চাষ করছি। আমারও জমির ধানে এই রোগ ধরছে। ধানে এই রোগ হলে গরু ছাগলও এই খড় খেতে চায় না।

কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কৃষি কর্মকর্তা মোঃ জয়নাল আবেদীন জানান, আপনারা জানেন ব্রি-২৮ ধান আগাম চাষ করা হয়। যখন ফলন আসে সেসময় বৃষ্টির কারণে বিচ্ছিন্ন কিছু যায়গায ক্ষতি হয়েছে। তবে সবমিলিয়ে ৭-৮ হেক্টর জমির ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কিন্তু কৃষকরা যদি সময় মত নেন ব্লাস্ট রোগের ঔষধ প্রয়োগ করতো তাহলে ক্ষতিটা কম হতো।

 

 

শেয়ার