নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে গৃহবধূ ফারজানা আক্তার হত্যাকাণ্ডের বিচার ও হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে নিহতের পরিবার, স্বজন ও এলাকাবাসী।

বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) বেলা ১২ টায় নোয়াখালী জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।

নিহত ফারজানা আক্তার (২২) সুবর্ণচর উপজেলার চরবৈশাখী গ্রামের বসির উল্যার মেয়ে।

বাণিজ্য প্রতিদিনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মানবন্ধনে নিহতের পরিবারের স্বজনরা অভিযোগ করে বলে, ৫-৬ বছর আগে চরকলমি গ্রামের সিরাজুল ইসলামের বড় ছেলে জহিরুল ইসলামের সাথে পারিবারিক ভাবে তার বিয়ে হয়। জহির স্থানীয় বাজারে স্টিলের আলমারির ব্যবসা করেন। ব্যবসার সুবাদে তার দোকানে আসা একাধিক নারী গ্রাহকের সাথে সে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। ফারজানা স্বামীর মোবাইলে একটি মেয়ের সাথে তার যৌথ ছবি দেখতে পান। এ নিয়ে প্রতিবাদ করলে স্বামী ফারজানাকে মারধর করে। স্বামীর পরকীয়ার বিষয়টি তার জানানোর কারণে স্বামীসহ পরিবারের অপরাপর সদস্যরা ফারজানাকে হত্যা করে আত্মহত্যার নাটক সাজায়। এমনকি মৃত্যুর খবরও তার পরিবারের সদস্যদের দেয়া হয়নি।

নিহত গৃহবধূ ফারজানার বাবা বশির উল্যাহ বলেন, আমার মেয়েকে বিয়ে দেয়ার পর থেকে মেয়ের জামাই বিভিন্ন সময় আসাদের থেকে যৌতুক হিসেবে সাড়ে ৩ লাখ টাকা নিয়েছে। সে ব্যবসার কথা বলে সবশেষ আরো ৫ লাখ টাকা দাবি করে। এতো টাকা আমি দিতে না পারায় বিভিন্ন সময় জামাই জহিরুল আমার মেয়ের উপর নির্যাতন চালাতো। পাশাপাশি সে অন্য নারীর সাথে পরকীয়ার জড়িত ছিলো। এবিষয়ে প্রতিবাদ করায় আমার মেয়েকে তারা মেরে ফেলেছে। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।হত্যার ঘটনায় আমরা হত্যা মামলা দায়ের করলেও আসামিদের কাউকেই এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ।

মানববন্ধনে হত্যা ও নির্যাতনের ঘটনায় জড়িত সকলের দ্রুত গ্রেপ্তারসহ প্রত্যেকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন স্বজনরা ও এলাকাবাসী। পরে পুলিশ সুপার বরাবর মামলার কপি হস্তান্তর করে আসামীদের গ্রেফতারের অনুরোধ জানানো হয়।

এসময় নারী অধিকার জোট নোয়াখালীর সভাপতি লায়লা পারভীন, নৃ-বিজ্ঞানী ও লেখক রেহনুমা আহমেদ, সংস্কৃতি ও সমাজকর্মী মাহফুজ হক মিলা, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইসাবা শুহরাত নারী অধিকার কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রণব চৌধুরী বলেন, আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। তাদের কাউকে এলাকায় পাওয়া যায় নি।

নোয়াখালী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, আমি দ্রুত আসামিদের গ্রেপ্তারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছি। এ ঘটনা অভিযুক্ত সবাইকেই আইনের আওতায় আনা হবে।

প্রসঙ্গত, গত ১৩ জুন দিবাগত রাতে উপজেলার চরএলাহী ইউনিয়নের চরকলমি গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।

এসকে