প্রতিষ্ঠার ৪৫ পেরিয়ে ২২শে নভেম্বর ৪৬ বছরে পদার্পণ করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি)। তবে চার দশকেও এখন পর্যন্ত প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীবান্ধব হতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয়টি। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে প্রতি বছর এখানে নির্দিষ্টসংখ্যক আসনে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী ভর্তি হয়। কিন্তু প্রয়োজনীয় শিক্ষা উপকরণের অভাব, ভবনগুলোতে লিফ্‌ট ও র‌্যাম্পের (ঢালু পথ) ব্যবস্থা না থাকা, অন্ধ শিক্ষার্থীদের জন্য ব্রেইল সিস্টেম ও অডিও বুকসহ নানা সুবিধার অভাবে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হচ্ছেন।

তথ্যমতে, একাডেমিক ও দাপ্তরিক প্রয়োজনে শিক্ষার্থীদের নিয়মিত যাতায়াত করতে হয় ক্যাম্পাসে এমন ভবনের সংখ্যা অন্তত ২০টি। প্রতিষ্ঠাকালীন থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী ভর্তি হলেও ভবনগুলো নির্মাণের সময় তাদের কথা বিবেচনায় রাখেনি কর্তৃপক্ষ। কোনো ভবনেই রাখা হয়নি লিফ্‌ট ও র‌্যাম্পের ব্যবস্থা। বর্তমানে পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ের একটিমাত্র ভবনে লিফট থাকলেও তা কার্যত অচল। শিক্ষার্থীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে কয়েকটি একাডেমিক ভবনে শুধুমাত্র গ্রাউন্ড ফ্লোরে কিছু র‌্যাম্প তৈরি করা হলেও সেগুলো এতটাই খাড়া যা প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের ব্যবহারের অনুপযোগী। তাছাড়া প্রশাসন ভবন, টিএসসিসি ও লাইব্রেরিসহ শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন দরকারে যেতে হয় এমন ভবনগুলোতে কোনো র‌্যাম্প করা হয়নি। এছাড়া এসব শিক্ষার্থীদের সহায়তার জন্য কোনো অফিসিয়াল সহকারীও নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন অবকাঠামোগত পরিবেশের কারণে চলাচলে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয় প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের। এছাড়া ভবনের শৌচাগারগুলোও তাদের ব্যবহারের উপযোগী নয়। এছাড়া হলে সিট পাওয়ার জন্য প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদেরকেও গণরুমের সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত হতে হয় বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।

প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, র‌্যাম্প না থাকায় ইচ্ছা থাকলেও তারা লাইব্রেরি ও ল্যাবরেটরিসহ গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোতে যেতে পারেন না। উপর তলায় ক্লাস থাকায় অনেককেই নিচে হুইলচেয়ার রেখে হামাগুড়ি দিয়ে সিঁড়ি বেয়ে ক্লাসে যেতে হয়। প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের অধিকাংশই দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে আসে। এসব অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক বাজেটে যথেষ্ট বরাদ্দ থাকা উচিত।

বাণিজ্য প্রতিদিনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

ছাত্র-উপদেষ্টা ড. ওবায়দুল ইসলাম বলেন, প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য যথাযথ পরিবেশ থাকাটা প্রয়োজন। আর আর্থিকভাবে অসচ্ছলদের বিষয়ে কর্তৃপক্ষের সহযোগী মনোভাব প্রয়োজন। শিক্ষার্থীরা তাদের সমস্যা ও দাবিগুলো লিখিত আকারে দিলে তা সমাধানের জন্য ভিসি’র কাছে সুপারিশ করা হবে। এদিকে নতুন যে ভবনগুলো তৈরি হচ্ছে সেগুলোতে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য লিফ্‌ট এবং র‌্যাম্প রাখা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) একেএম শরীফ উদ্দিন।

ভিসি অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধকতা যাদের আছে তাদের জন্য বিশেষ সুবিধা ও নারীদের জন্য কমনরুমের সুবিধা নিশ্চিত করা হবে।

এনজে