Top
সর্বশেষ

যশোরের রাজারহাটে জমেনি বৃহত্তম চামড়ার মোকাম

২৫ জুলাই, ২০২১ ১১:৪৮ পূর্বাহ্ণ
যশোরের রাজারহাটে জমেনি বৃহত্তম চামড়ার মোকাম
যশোর প্রতিনিধি :

খুলনা বিভাগের সর্ববৃহৎ চামড়ার মোকাম যশোরের রাজারহাট এবার জমেনি। ঈদের পর প্রথম হাট ছিল গত কাল (২৪ জুলাই) শনিবার। এদিন চামড়ার দাম ছিল কম। আর হাটে চামড়ারও উঠেছিল অল্প পরিমাণ। ঢাকার ট্যানারি মালিকরা বকেয়া টাকা না দেয়ায় কাঙ্খিত পরিমাণ চামড়া কিনতে পারেনি ব্যবসায়ীরা। আবার শনিবার প্রচুর বৃষ্টিপাত হওয়ায় এবং কঠোর বিধিনিষেধের কারণে চামড়ার দাম কমে গেছে। আর যেসব খুচরা ব্যবসায়ীরা মোকামে চামড়া তুলেছিলেন তাদের অনেকের পুঁজি বাঁচেনি। দক্ষিণাঞ্চলের বৃহত্তর চামড়ার হাট যশোরের রাজারহাট। এখানে দেশের বিভিন্ন এলাকার ব্যবসায়ীরা চামড়া বেচাকেনা করেন।

তবে এবছর জমেনি চামড়ার হাট। ব্যবসায়ী কম হওয়ায় চামড়ার দাম পাচ্ছেন না ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা।দূর- দূরান্ত থেকে চামড়া নিয়ে এসে হতাশা নিয়ে ফিরেছেন তারা। তেমনি এক জন সাতক্ষীরার সোহেল হোসেন। তিনি ২৫০ পিস চামড়া নিয়ে এসেছিলেন এ হাটে। এর মধ্যে ছিল ১৫০ পিস গরুর চামড়া ও ১০০ পিস ছাগলের চামড়া। তিনি বলেন ৫০ পিস ছাগলের চামড়া সাত টাকা করে বিক্রি করেছেন। যেখানে তার ক্রয়মূল্য ২৫ টাকা করে। তাছাড়া গরুর চামড়ার দিকে কোন ব্যাপারির নজরই পড়েনি। কেউ বলেনি চামড়া কত করে বিক্রি করবা। হাটে বড় ব্যবসায়ীরা আসেনি। স্থানীয়রা কিছু কিনছেন। তাও খুবই কম দামে। খুলনার পাইকগাছা থেকে স্বপন বৈরাগী নামে আরেক জন এনেছিলেন এক হাজার পিস চামড়া। তিনি বিভিন্ন এলাকা থেকে বাড়ি বাড়ি ঘুরে এ চামড়া সংগ্রহ করেছিলেন। দাম না পেয়ে হাটে রেখে গেছেন কিছু চামড়া।তিনি বলেন আমরা চামড়ার বিক্রির অর্থ দিয়েই সংসার চালায় ।

এভাবে চামড়ার দাম চলতে থাকলে আমাদের পরিবার নিয়ে পথে নামতে হবে। সরকার যদি এই চামড়া ব্যবসায়ীদের দিকে সুনজর না দেয় তবে ব্যবসায়ীরা তো পথে নামবেই। সাথে হারিয়ে যাবে চামড়া শিল্প। একই উপজেলার নির্মল সরকার নামের অপর এক ব্যবসায়ী এলাকা থেকে দুই হাজার পিস চামড়া ক্রয় করেছেন। যশোরের রাজার হাট বাজারে এক হাজার পিস নিয়ে এসেছিলেন। তবে দাম নেই বলে অভিযোগ তার। তিনি বলেন আমারা বাড়ি বাড়ি থেকে পিস প্রতি ২০ থেকে ৩০ টাকা করে ছাগলের চামড়া ক্রয় করেছি। লবন ও যাতায়াত খরচ সহ প্রায় ৪০ টাকা করে পড়েছে। এখন দাম পাচ্ছি পাঁচ টাকা করে। গরুর চামড়া ৩০০ থেকে ৪০০ ও কিছু চামড়া ৫০০ করেও কেনা হয়েছে। তবে এই চামড়া ২০০ থেকে ৩০০ টাকার বেশি দাম উঠছে না। এভাবে চললে আমাদের বিপদের শেষ থাকবে না। জেলা চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সহসভাপতি শেখ হাসানুজ্জামান হাসু বলেন যশোরের রাজারহাট চামড়া বাজারে দীর্ঘদিন ধরে প্রায় পাঁচ শতাধিক ব্যবসায়ী চামড়া কেনাবেচা করছে। তবে এবছর হারিয়ে গেছে অনেকে। সবাই ট্যানারি মালিকদের কাছে লাখ লাখ টাকা পাবে।

তাদের পাওনা টাকা না পেয়ে চামড়া কিনতে চাচ্ছে না তারা। প্রায় তিন বছর যাবত টাকা নিয়ে ঘুরাচ্ছেন ট্যানারি মালিকরা। আজ কাল বলে এতো দিনেও টাকা পরিশোধ করেনি তারা। তাছাড়া কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যে বাইরের ব্যবসায়ীরা বাজারে আসতে চাচ্ছে না। একারণে চামড়ার দাম কম। বড় ব্যবসায়ী না থাকায় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা চামড়া বিক্রি করতে পারছেন না। দামও পাচ্ছেন না। কৃষি বিপনণ অধিদপ্তরের জেলা বাজার কর্মকর্তা সুজাত হোসেন খান বলেন যশোরের রাজারহাট বাজারে গরু ছাগল মিলে প্রায় ২৫ হাজার পিস চামড়া শনিবারের হাটে উঠেছিল। এর মধ্যে ছোট গরুর চামড়া ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা, মাঝারি ৪০০ থেকে ৪৫০, বড় ৮০০ থেকে ৯০০ ও ছাগলের চামড়া ২০ থেকে ৫০ টাক করে বিক্রি হয়েছে।

শেয়ার