Top
সর্বশেষ

বাঁশ শিল্পের উপর নির্ভর বালিয়াডাঙ্গীর ৫০ পরিবার

১১ জানুয়ারি, ২০২২ ২:৪৬ অপরাহ্ণ
বাঁশ শিল্পের উপর নির্ভর বালিয়াডাঙ্গীর ৫০ পরিবার
মো. আব্দুল লতিফ, ঠাকুরগাঁও :

ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার বড়বাড়ি ইউনিয়নের রায়পাড়া গ্রামের প্রায় ৫০টি পরিবার বাঁশের তৈরি পণ্য বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। কিন্তু বর্তমানে প্লাস্টিকের পণ্য বাজার দখল করায় ও বাঁশের মূল্য বৃদ্ধির কারণে বাঁশের তৈরি পণ্য প্রতিযোগিতায় টিকতে পারছেনা। তাছাড়া করোনাকালীন এই পরিবারগুলো কোন সহযোগিতা না পাওয়ায় তাদের অবস্ধা এখন শোচনীয়। মানবেতর জীবন অতিক্রম করছেন তাঁরা।

গ্রামের বাঁশমালী গোলাপ রায়ের স্ত্রী দীপ্তি রাণী বলেন, বাঁশের তৈরি পণ্য এখন আর আগের মত বিক্রি হয়না। আমরা কোন রকমে বেঁচে আছি। করোনার সময়ে আমরা কোন সহযোগিতাও পাইনি। দিপ্তী রাণী জানান, ঐ এলাকার ৫০টি পরিবার বাঁশের তৈরি চাটাই, খাঁচা, কুলা, পাখা, ডালি, ভাঁড়, ঝাড়ু, হাস-মুরগি রাখার খাঁচাসহ নানা পণ্য তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করেন।

এর আগে করোনাকালীন লকডাউন হওয়ায় পণ্য তৈরির পর বাজারে বিক্রি করতে পারেনি কেউই। ফলে খুব কষ্টে দিন পার করতে হয়েছে তাঁদের। ৭০ বছর বয়সী বাঁশমালী নিরলা রানী বলেন, ‘আগে বাঁশের দাম কম ছিল। ৫০০ টাকার বাঁশ কিনে সেই বাঁশ দিয়ে পণ্য তৈরি করে দেড় হাজার টাকা বিক্রি করা যেত। কোনো কোনো সময় দুই হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি করেছি। কিন্তু এখন আর সেই দিন নেই।’

বাঁশের তৈরি পণ্য বিক্রি করেই ছেলে-মেয়েকে পড়ালেখা করাচ্ছেন গোলাপ রায়। তাঁর স্বপ্ন পড়ালেখা শেষ করে সন্তানেরা চাকরি করবে। তিনি বলেন, ‘ছেলে-মেয়েরা লেখাপড়া শিখে আমাদের পূর্ব পুরুষদের এই পেশা থেকে তাঁরা আমাদের মুক্তি দেবে।’

তিনি বলেন, প্লাস্টিকের বিভিন্ন পণ্য সামগ্রী বাজার দখল করেছে। ফলে কমে গেছে বাঁশের তৈরি পণ্যের চাহিদা। তাছাড়া প্লাস্টিক পণ্যের দাম বাঁশের তৈরি পণ্যের চেয়ে অনেক কম। বাঁশমালী খুদিরাম সাহা বলেন, ‘বাঁশের তৈরি পণ্য ছাড়া অন্য কোনো কাজ জানা নেই। তাই পেটের দায়ে বাধ্য হয়ে এটা ছাড়তে পারছিনা। সরকারিভাবে প্রশিক্ষণ ও আর্থিক সহায়তা দিলে এ এলাকার পরিবারগুলো আরও ভালো পণ্য তৈরি করে এলাকার অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে।’

বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. যোবায়ের হোসেন বলেন, ‘প্রতিটি পেশার মানুষকে এগিয়ে নিতে আমরা কাজ করছি। আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে বাঁশমালীদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য প্রশিক্ষণ প্রদানের ব্যবস্থা করব।’

শেয়ার