পানিবাহিত রোগ থেকে নগরবাসীকে রক্ষা করার জন্য নিয়মিত পানির মান পরীক্ষা করে জনগণকে জানানো এবং বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করার সুপারিশ জানিয়েছেন সমাজের সচেতন নাগরিকরা।

সোমবার (১৮ এপ্রিল) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে বারসিক ও পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) আয়োজিত ‘ডায়রিয়া সংকট মোকাবিলা ও সুপেয় পানি নিশ্চিতকরণ’ শীর্ষক এক নাগরিক সংলাপে তারা এ সুপারিশ জানান।

নাগরিক সংলাপ থেকে আরও কয়েকটি সুপারিশ জানান তারা। সুপারিশগুলো হলো- নগরের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে বিনামূল্যে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের ক্ষেত্রে বেশি প্রাধান্য দিতে হবে; এ বছর ডায়ারিয়া-কলেরার প্রাদুর্ভাব কেন বেশি তা পরীক্ষা করে জনগণকে দ্রুত সচেতন করতে হবে; যে এলাকা থেকে ডায়রিয়া রোগী বেশি আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে আসছে সেখানকার পানি পরীক্ষা করে কারণ বের করে তা স্থানীয়দের জানাতে হবে। ওয়াসা এবং স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিদের দ্রুত সেখানে বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করতে হবে; ডায়রিয়া ও কলেরা আক্রান্ত রোগীকে বিনামূল্যে চিকিৎসা ব্যবস্থা করতে হবে। আর্থিক অবস্থা বিবেচনায় তাদেরকে ক্ষেত্র বিশেষে আর্থিক সহযোগিতার ব্যবস্থা করতে হবে; নগরে ওয়াসার পানি সরবরাহ করা লাইন যখন কোনো আবাসিক ভবনে প্রবেশ করবে, সেখানকার পানির মান নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ওয়াসা এবং স্থানীয় সরকারকে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে এবং খোলা রাস্তায়, ছোট দোকানে খাবার বিক্রেতাদের পানি বিশুদ্ধ রাখার জন্য নজরদারি বাড়াতে হবে।

বাণিজ্য প্রতিদিনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

নাগরিক সংলাপে বাপার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিহির বিশ্বাস বলেন, বর্তমানে আইসিডিডিআরবিতে খালি শয্যা নেই, এটা একটা ভয়াবহ ব্যাপার। ওয়াসার উদাসীনতা আমাদের ব্যথিত করেছে। ওয়াসা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছে না, যে কারণে তারা পানি ফুটিয়ে খাবেন আর আমাদের ল্যাবে কিছু পাওয়া যায়নি বলে দায় সারছে। কিন্তু অন্যান্য জায়গায় বিভিন্ন জীবাণুর অস্তিত্ব পাওয়া যাচ্ছে। সরকারের নীতি নির্ধারণী জায়গাগুলো থেকে নাগরিক অধিকারকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানো হচ্ছে। মানুষকে মর্যাদা দেওয়া হচ্ছে না।

সবাইকে পানির পরিমিত ব্যবহারে আরও সচেতন হওয়ারও আহ্বান জানিয়ে পবার চেয়ারম্যান আবু নাসের খান বলেন, সরকারকে সবচেয়ে বেশি ট্যাক্স দেন নিম্নআয়ের মানুষ। কিন্তু তারাই নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তাই সরকারকে নিম্নআয়ের মানুষদের সমস্যাগুলোকে আরও গুরুত্ব দিয়ে দেখা দরকার।

পবার সাধারণ সম্পাদক ও বিশিষ্ট পরিবেশবিদ প্রকৌশলী মো. আব্দুস সোবহান বলেন, নিরাপদ পানির অধিকার সাংবিধানিক কিন্তু রাষ্ট্র সেই দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করছে না। যে কারণে ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন সমস্যা হচ্ছে। আমাদের ওয়াসার এমডি হাসতে হাসতে বলেন পানি ফুটিয়ে খেতে, এটা খুবই দুঃখজনক ও নিন্দনীয় বক্তব্য। আমাদের দেশে অধিকাংশ প্রকল্প গ্রহণ হয় বাস্তবিক সমীক্ষা ছাড়াই। তাইতো বিশাল প্রকল্প নেওয়া হয়, কোটি কোটি টাকা খরচ হয় কিন্তু তার সুফল মানুষ পায় না।

নাগরিক সংলাপে অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী বাস্তুহারা লীগের সাধারণ সম্পাদক লায়ন রাশেদ হাওলাদার, নগর গবেষক মো. জাহাঙ্গীর আলম, বারসিকের সমন্বয়ক ফেরদৌস আহমেদ উজ্জল, বস্তিবাসী অধিকার সুরক্ষা কমিটির সভা প্রধান হোসনে আরা বেগম রাফেজা প্রমুখ।