ইন্দোনেশিয়ায় করোনার ভ্যাকসিনে বয়স্কদের চেয়ে তরুণদের অগ্রাধিকার দেবে দেশটির সরকার। এই নীতির সমালোচনা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্বাস্থ্যের আগে অর্থনীতিকে প্রাধান্য দিয়ে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তারা বলছেন, করোনায় সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা বয়স্করা টিকা না পাওয়ায় মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে।

বুধবার থেকে ইন্দোনেশিয়ায় করোনার টিকা দেয়া শুরু করেছে সরকার। প্রথম পর্যায়ে ১০ লাখ ৩০ হাজার স্বাস্থ্যকর্মীকে চীনের প্রতিষ্ঠান সিনোভ্যাক বায়োটেক উদ্ভাবিত টিকা করোনাভ্যাক দেয়া হবে।

বাণিজ্য প্রতিদিনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

এছাড়া এই পর্যায়ে বিনামূল্যে টিকা পাবেন আরও ১ কোটি ৭০ লাখ নাগরিক। এদের মধ্যে রয়েছেন পুলিশ, সেনাবাহিনী, শিক্ষক ও আমলারা।

মার্চ পর্যন্ত প্রথম পর্যায়ের টিকা দেয়ার পর প্রাপ্তবয়স্কদের টিকা দেয়া শুরু হবে। দ্বিতীয় পর্যায়ে ১৮ কোটি ১০ লাখ কর্মক্ষম মানুষকে টিকা দেবে সরকার। এরা মোট জনসংখ্যার ৬৭ শতাংশ।

ইন্দোনেশিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপত্র ড. নাদিয়া উইকেকো আল জাজিরাকে বলেন, ‘টিকা দেয়ার জন্য আমরা বয়স্কদের বদলে কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীকে বেছে নিয়েছি। এদের বয়স ১৮ থেকে ৫৯ বছরের মধ্যে।’

তিনি বলেন, ‘বয়স্কদের জন্য সিনোভ্যাকের টিকাটির তিন ধাপের ট্রায়াল সম্পূর্ণ না হওয়ায় ঝুঁকি এড়াতে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।’

লন্ডন স্কুল অফ হাইজিনের ভ্যাকসিনোলজির অধ্যাপক কিম মুলহল্যান্ড বলেন, ‘আমরা জানি ইতোমধ্যে চীনে ও মধ্যপ্রাচ্যে বয়স্কদের টিকা দেয়া হয়েছে। তাদের দেয়া টিকা তরুণদের মতোই কাজ করেছে।’

তিনি বলেন, ‘ইন্দোনেশিয়ায় ট্রায়াল না হওয়ায় বয়স্কদের টিকা দেয়া যাবে না এমন দাবি গ্রহণযোগ্য নয়।’

সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশটিতে ৬০ বছরের বেশি বয়সী মানুষের সংখ্যা মোট জনসংখ্যার মাত্র ১০ শতাংশ। কিন্তু করোনায় এই জনগোষ্ঠীর মৃত্যু হারই সবচেয়ে বেশি, প্রায় ৩৯ শতাংশ।

ইন্দোনেশিয়ার ব্যাংকিং খাতের একজন কর্মকর্তা আজিব হামদানি বলেন, ‘কর্মক্ষম তরুণদের আগে টিকা দেয়ার সিদ্ধান্ত থেকে এটি পরিষ্কার যে অর্থনীতিকে প্রাধান্য দিয়েই এমন নীতি নেয়া হয়েছে।’

সরকার বলছে, সিনোভ্যাকের টিকার চেয়ে আরও নিরাপদ টিকা পেলে বয়স্কদের দেয়া হবে। তবে কবে নাগাদ সে ব্যাপারে কিছু বলা হয়নি।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় সবচেয়ে বেশি প্রায় সাড়ে ৮ লাখ করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে ইন্দোনেশিয়ায়। দেশটিতে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ২৪ হাজার মানুষের মৃত্যু ঘটেছে।