Top

তামাকে উর্বরতা নষ্ট, বিঘায় কমেছে ৫-৬ মণ ধান

২৪ নভেম্বর, ২০২২ ২:০৪ অপরাহ্ণ
তামাকে উর্বরতা নষ্ট, বিঘায় কমেছে ৫-৬ মণ ধান
মো, লাজু মিয়া, লালমনিরহাট :

তামাক চাষের কারণে জমির উর্বরতা নষ্ট হচ্ছে। এতে কমেছে ফসল উৎপাদন। লালমনিরহাটে তামাক চাষের কারণে প্রতি হেক্টর জমি থেকে ধানের ফলন প্রায় ৩০ মণ কম পাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন কৃষকরা। বিঘায় অন্তত ৫-৬ মন ধান কম হয়েছে। চিন্তিত হয়ে পড়েছেন চাষিরা।

চাষিদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, প্রতি বছর লালমনিরহাটে ১৮-১৯ হাজার হেক্টর জমিতে তামাক চাষ করা হয়। যদিও কৃষি বিভাগের দাবি, তামাক চাষের জমির পরিমাণ ৮-৯ হাজার হেক্টর।

আদিতমারী উপজেলার সারপুকুর গ্রামের মকবুল হোসেন (৪৫) জানান, তামাক চাষের জমি থেকে বিঘা জমিতে আমন ধান লাগিয়েছিলেন। এর মধ্যে তামাক চাষের জন্য ব্যবহৃত ৫ বিঘা জমি থেকে তিনি ৪৬ মণ ধান পেয়েছেন। অর্থাৎ এক বিঘা জমি থেকে ধান পেয়েছেন ৯ মণের কিছুটা বেশি। বাকি ৩ বিঘা জমি থেকে পেয়েছেন ৪৪ মণ ধান। অর্থাৎ প্রয়োজন হয়। এ কারণে মাটি কিছুটা পুষ্টিহীন হয়ে বিঘায় উৎপাদন হয়েছে ১৫ মণের কিছুটা বেশি। পড়ে এবং তা অন্য ফসল উৎপাদনে ক্ষতির কারণ মকবুল হোসেন বলেন, প্রায় এক যুগ ধরে প্রতি হয়। তবে এসব জমিতে তামাক উৎপাদন বছর ৫ বিঘা জমিতে তামাক চাষ করি। এসব সন্তোষজনক বলে তিনি জানান।

জমিতে অন্য ফসল উৎপন্ন হয় তবে ফসলের একই এলাকার নারায়ণ চন্দ্র বর্মণ (৬৫) ৩০ বছর উৎপাদন তুলনামূলক কম। তামাক চাষে প্রচুর সার ধরে ৮ বিঘা জমিতে তামাক চাষ করছেন। তিনি

বলেন, তামাক চাষের জমিতে ধানের উৎপাদন বিঘা প্রতি ৫-৬ মণ কম হয়। তামাক চাষ করা হয় না, এমন জমি থেকে বিঘা প্রতি ১৪-১৬ মণ আমন ধান উৎপাদিত হয়। আমার তামাক চাষের জমি থেকে ধান উৎপাদিত হয় ৮-১০ মণ। তারপরও আমরা তামাক চাষ করি, কারণ তামাক কোম্পানিগুলো নির্ধারিত মূল্যে তামাক কেনে, আর একসঙ্গে টাকা পরিশোধ করে।

কালীগঞ্জ উপজেলার বানিনগর গ্রামের সোলেমান আলী (৬০) বলেন, তামাক গাছের শিকড়গুলো মাটির গভীরে চলে যায়। এ কারণে তামাক গাছ প্রচুর পরিমাণে মাটির পুষ্টিগুণ শোষণ করে নেয়। তামাক উৎপাদনে প্রচুর পরিমাণে সারের ব্যবহার করতে হয়। এ কারণে তামাক চাষের জমিতে ধানসহ অন্য ফসলের উৎপাদন তুলনামূলক কম হয়ে থাকে। তার মোট ১১ বিঘা জমির মধ্যে ৮ বিঘা জমিতে তিনি গত প্রায় ২৫ বছর ধরে তামাক উৎপাদন করছেন। এ বছর তিনি ৩ বিঘা জমি থেকে ধান পেয়েছেন ৪৪ মণ। আর তামাক চাষের ৮ বিঘা জমি থেকে ধান পেয়েছেন ৭০ মণ। তামাক চাষ বাদ দিলেও এই জমিকে স্বাভাবিক করতে কমপক্ষে ৭-৮ বছর সময় লাগবে বলে জানান তিনি। লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক হামিদুর রহমান বলেন, একই জমিতে বারবার তামাক চাষের কারণে মাটির পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়ে যায়। এ কারণে এসব জমিতে ধানসহ অন্য ফসলের উৎপাদন আশানুরূপ পাওয়া যায় না। কৃষকরা সাময়িক লাভের আশায় তামাক চাষ করে মাটির পুষ্টিগুণকে নষ্ট করছে।

তামাক চাষের জমিতে ধানের উৎপাদন ৫-৬ মণ কম হয় উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, আমরা কৃষকদের তামাক চাষে নিরুৎসাহিত করছি। তামাক চাষের ক্ষতিকর দিক নিয়ে তাদের সচেতন করছি।

শেয়ার