যশোরের মনিরামপুরে বোরহান কবির (১৯) নামে এক কলেজ ছাত্রকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। নিহত বোরহান মনিরামপুর হাসপাতাল সংলগ্ন মোহনপুর এলাকার আহসানুল কবিরের ছেলে।

রোববার (৭ ফেব্রুয়ারি) ভোরে তাকে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেয়ার পথে সে মারা যায়।

এর আগে শনিবার সকালে মনিরামপুর উপজেলার খালিয়া এলাকায় পিটিয়ে রক্তাক্ত করা হয় তাকে। এ ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে নাইম হোসেন নামে একজন কে আটক করেছে পুলিশ। আটক নাইম মনিরামপুর উপজেলার কৃষ্ণবাটি গ্রামের নুর ইমলামের ছেলে।

বাণিজ্য প্রতিদিনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

নিহত বোরহান মনিরামপুর সরকারি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র। ১৫-২০ দিন আগে ভয় পেয়ে বোরহান মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন বলে পরিবারের দাবি। স্থানীয়ারা জানান শনিবার সকাল পৌনে দশ টার দিকে সাইকেল চালিয়ে খালিয়ায় যাচ্ছিলেন বোরহান। সেময় রাজগঞ্জ -হেলাঞ্চি সড়কে নিজের মোটর সাইকেল চালিয়ে বাড়ি ফেরা পথে রাস্তায় মোটরসাইকেল থামিয়ে মোবাইলে কথা বলছিলেন নাইম। তখন বোরহান নিজের সাইকেল রেখে নাইমের কাছে মোটরসাইকেলের চাবি চান। বোরহান বলেন চাবি দেন আমি ঘুরে আসি। চাবি না দিলে বিষ খাইয়ে মেরে ফেলব। এই কথা শুনে ক্ষিপ্ত হয়ে রাস্তার পাশ থেকে লাঠি নিয়ে বোহানকে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে রাস্তার পাশে মসুরক্ষেতে ফেলে রাখে নাইম।

পরে স্থানীয়রা এসে বিষয়টি রাজগঞ্জ ক্যাম্পের পুলিশকে জানায়। খবর পেয়ে বেলা ১১ টার দিকে পুলিশ এসে বোরহান ও নাইমকে নিয়ে যায়। নিহতের বাবা আহসানুল কবির বলেন মোটরসাইকেল ছিনতাই করা নিয়ে নয় , সাইকেল রাখা নিয়ে কথা কাটাকাটি করে ২-৩ জন মিলে আমার ছেলেকে মারপিট করেছে। পরে পুলিশ ছেলেকে ধরে ফাঁড়িতে নিয়ে যায়। বোরহানের মাথা ফেটে রক্ত বের হলেও তাকে হাসপাতালে না পাঠিয়ে পুলিশ হাতকড়া পরিয়ে ক্যাম্পে বসিয়ে রাখে। খবর পেয়ে আমরা অ্যাম্বুলেন্সে নিয়ে তাকে আনতে যাই। তখনও পুলিশ তাকে ছাড়েনি।

আহসান কবির বলেন, ১৫-২০ দিন আগে ভয় পেয়ে আমার ছেলে মানসিকভাবে আসুস্থ হয়ে পড়েছে। তার চিকিৎসা চলছিল। আমরা পুলিশকে বলি সে মানসিক রোগী। পুলিশ মানতে চায়নি। পরে বাড়ি থেকে কাগজপত্র নিয়ে দেখালে দুপুর একটার দিকে তাকে মনিরামপুর হাসপাতালে আনা হয়। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় ওই সময় তাকে যশোর সদর হাসপাতালে পাঠায় চিকিৎসক। সেখানে উপযুক্ত চিকিৎসা না থাকায় বোরহানকে ঢাকায় রেফার করা হয়। ভোররাতে ঢাকায় পৌছানোর আগেই পথিমধ্যে বোরহান মারা যায়।

এদিকে মারপিটের ঘটনায় আটক নাইমকে আসামি করে শনিবার রাতে মনিরামপুর থানায় মামলা করেন বোরহানেরবাবা। সেই মামলার তদন্ত কারী কর্মকর্তা রাজগঞ্জ তদন্ত কেন্দ্রের এসআই তপনকুমার নন্দী বলেন উদ্ধার করে ক্যাম্পে নিয়ে চিকিৎসা করানো হয় বোরহানকে। পরে তাকে মনিরামপুর হাসপাতালে পাঠানো হয়।

রোববার সকালে বোরহানের লাশ যশোর জেনালে হাসপাতালের মর্গে ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। সুরতহাল ও ময়না তদন্ত শেষে মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে পুলিশ জানায়।

জানতে চাইলে রাজগঞ্জ পুলিশ কেন্দ্রের ইনচার্জ (পরিদর্শক) শাহজাহান আহমেদ বলেন, স্বজনদেরঅভিযোগ সত্য নয়। তাকে ক্যাম্পে চিকিৎসা দিয়ে হাসপাতালে পাঠানো হয়।