কুড়িগ্রামর উলিপুরে প্রশাসন ও ডিবি পুলিশের পরিচয় দিয়ে ব্যবসায়ীর দুই লাখ টাকা ছিনতাইয়ের অভিযাগ ছাত্রলীগ এবং মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের তিন নেতাকে আটক করেছে পুলিশ।

শুক্রবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে এ ঘটনায় ওই ব্যবসায়ী বাদী হয়ে ছয় জনের বিরুদ্ধে উলিপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, রংপুর কোতয়ালী থানার কামাল কাছনা গ্রামের সম্ভুনাথ বণিকের ছেলে পেপার ব্যবসায়ী প্রদীপ বণিক (৩৫) গত বৃহস্পতিবার রাতে তার একজন কর্মচারীসহ মোটর সাইকেল যোগে ব্যবসায়ীক কাজে রংপুর থেকে উলিপুর উপজেলার বজরা বাজারের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলেন। রাত ১১টার দিকে উলিপুর পৌরসভার রামধাস ধনিরাম হাজীপাড়া এলাকায় পৌঁছিলে উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাঈমুল ইসলাম নাঈম (২২) ও উপজেলা মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক ওসমান গনি সরদার রতন (২৪)সহ ৬ জন যুবক ওই ব্যবসায়ীর মাটর সাইকেলের গতিরোধ করেন।

বাণিজ্য প্রতিদিনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

এরপর তারা নিজেদেরকে প্রশাসন ও ডিবি পুলিশের পরিচয় দিয়ে অবৈধ মালামাল রাখার অভিযাগ তুলে ওই ব্যবসায়ী এবং কর্মচারীর শরীর তল্লাশি করেন। এ সময় ব্যবসায়ীকে মারপিটের ভয় দেখিয়ে তার ব্যাগে থাকা দুই লাখ টাকা জোর পূর্বক ছিনিয়ে নেয়ার সময় ব্যবসায়ীর আত্মচিৎকারে এলাকার লোকজন এগিয়ে আসলে তারা টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়। এ সময় স্থানীয় লোকজন তাদেরকে চিনে ফেলে।

এর কিছু সময় পর ছিনতাইকারীরা ঘটনাস্থলে ফেলে যাওয়া তাদের একটি মোটর সাইকেল নিতে আসলে এলাকাবাসী দুইজনকে আটক করে পুলিশে দেন। পরে শুক্রবার বিকেলে পুলিশ অভিযান চালিয়ে আরও একজনকে আটক করেন।

আটককৃতরা হলেন, পৌরসভার নারিকেলবাড়ি গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে আহসান হাবিব বাবু (২৪), আব্দুল হামিদের ছেলে সাদেকুর রহমান দুলু (২৮) ও পশ্চিম কালুডাঙ্গা গ্রামের ছোবেদ আলীর ছেলে শাহিন মিয়া (২৫)।

এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত পলাতক আসামীরা হলেন, উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাঈমুল ইসলাম নাঈম (২২) ও উপজেলা মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক ওসমান গনি সরদার রতন (২৪) এবং তৌফিক আলম চৌধুরী (২২)।

এ ঘটনায় ব্যবসায়ী প্রদীপ বণিক বাদী হয়ে ছয় জনকে আসামী করে শুক্রবার (১২ ফব্রুয়ারি) বিকেলে উলিপুর থানায় মামলা দায়ের করেন (মামলা নং-১৩)।

এ বিষয় উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রফিক বলেন, ছিনতাইয়ের ঘটনা শুনেছি। অপরাধী যেই হোক তাদের শাস্তি হওয়া উচিত। নাঈমের বিষয়টি তদন্ত করে সঠিক প্রমাণ হলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে ।

উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রুবেল বলেন, কোন অপরাধীর স্থান ছাত্রলীগে নেই। নাঈম দোষী প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে ।

উপজেলা মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সভাপতি আবু জাফর মোঃ মঈনুল হক বলেন, বিষয়টি আমি জানি না, আপনার কাছেই প্রথম শুনলাম। যদি এমনটা হয়ে থাকে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। কারো ব্যক্তিগত কর্মকান্ডের দায়ভার সংগঠন নেবে না।

উলিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ ইমতিয়াজ কবীর বলেন, ছিনতাইয়ের ঘটনায় ছয়জনের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার আইনে মামলা দায়ের হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত তিনজনকে শুক্রবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে । অন্যান্য আসামীদর গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।