Top

সোনাইমুড়ীর বারগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে গেজেট স্থগিত

১৯ জানুয়ারি, ২০২২ ৮:২৫ অপরাহ্ণ
সোনাইমুড়ীর বারগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে গেজেট স্থগিত
এ.এস.এম.নাসিম, নোয়াখালী :

গত ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার বারগাঁও ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল না হওয়া পর্যন্ত গেজেট প্রকাশ স্থগিত করেছে হাইকোর্ট। পাশাপাশি কাশিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোটের ফলাফল ২ রকম কেন এবং তা কেন বাতিল হবে না মর্মে রুল জারি করেছে এবং নির্বাচন কমিশনকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। গতকাল মঙ্গলবার হাইকোর্টের বিচারপতি জাফর আহম্মদ ও কাজী জিনাত হকের দ্বৈত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

উল্লেখ্য, ভুক্তভোগী জামায়াত সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী সাইয়েদ আহমদ অভিযোগ করেন, ৫ জানুয়ারি পঞ্চম ধাপের অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে প্রিজাইডিং কর্মকর্তার স্বাক্ষরিত ফলাফলের কাগজ অনুযায়ী তিনি ২৮০ ভোট বেশি পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তিনি আরো বলেন, বারগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে তিনি চশমা প্রতীকে ৪৮৭১ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন । তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নৌকার প্রার্থী সামছুল আলম পান ৪৫৯১ ভোট। এতে তিনি ২৮০ ভোট বেশী পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন।

সন্ধ্যার পর থেকে উপজেলায় নির্বাচন কর্মকর্তার দপ্তরে ভোট কেন্দ্র থেকে একে একে সব ইউনিয়নের ফলাফল এসে পৌছে, কিন্তু ১০টি ইউনিয়নের মধ্যে নয়টি ইউনিয়নের ফলাফল ঘোষণা করা হয়। তার ইউনিয়নের ফলাফল ঘোষণায় গড়িমসি শুরু করে। এক পর্যায়ে আওয়ামীলীগের নেতা-কর্মীরা মিডিয়া কর্মীদের জোরপূর্বক বের করে দিয়ে প্রিজাইডিং অফিসার এবিএম নোমানকে দিয়ে কাটা ছেড়াঁ করে ফলাফল পরিবর্তন করে। এতে কাশিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে তিনি চশমা প্রতীকে পেয়েছেন ২১০ ভোট এবং তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মো. সামছুল আলম পেয়েছেন ১২৭১ ভোট। অপর প্রার্থী আ. রাজ্জাক দুলাল মোটর সাইকেল প্রতীকে পেয়েছেন ১৯৫ ভোট । প্রিজাইডিং অফিসারের স্বাক্ষরিত তার এজেন্টকে দেয়া ফলাফল শিটে তা লিখা আছে।

এ ফলাফল শিট আমার পোলিং এজেন্টদের মাধ্যমে রাত আটটার সময় আমি হাতে পাই। কিন্তু প্রিজাইডিং অফিসার এবিএম নোমান ফলাফল শিট ওভারাইটিং করে কেঁটে ছিঁড়ে আমার চশমা প্রতীকে ২১০ ভোটের স্থানে ১১০ ভোট, মোটর সাইকেল প্রতীকে ১৯৫ ভোটের স্থানে ৯৫ ভোট এবং নৌকার প্রাপ্ত ভোট ১২৭১ এর স্থানে ১৪৭১ লিখে জমা দেন। বেআইনিভাবে ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে কাশিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা অম্বরনগর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এ বি এম নোমান ও রিটার্নিং কর্মকর্তা সোনাইমুড়ী কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার মো. বরকত উল্যাহ এর যোগসাজশে কাশিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রের সকল প্রার্থীর ভোটকে কাঁটা ছেঁড়া করে পরিবর্তন করে রাত সাড়ে দশটায় প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মো. সামছুল আলমকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।

তিনি আর ও অভিযোগ করেন, ফলাফল পাল্টে দেওয়ার বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে তাৎক্ষণিক অভিযোগ করে কোন সন্তোষজনক উত্তর পাওয়া যায়নি। উল্টো রিটার্নিং কর্মকর্তা দৃঢ়তা দেখিয়ে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মো. সামছুল আলমকে বিজয়ী ঘোষণা করেন। তখন তিনি রিটার্নিং কর্মকর্তা ঘোষিত ফলাফল বাতিলের দাবি জানান । এ ব্যাপারে সাইয়েদ আহমদ গত ৮ জানুয়ারী হাইকোর্টে একটি রিট করেন। রিট নাম্বার ৮৩২/২০২২। পরে, গতকাল ১৮ জানুয়ারী বিজ্ঞ আদালত শুনানী শেষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার সহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট ৭ জনের উপর রুলনিশি জারিসহ এ আদেশ দেন।

বাদী পক্ষের মামলা পরিচালনা করেন ব্যারিষ্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন।

শেয়ার