ঠাকুরগাঁও জেলায় বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে শুক্রবার সারাদিন মাঝারি বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়ায় ফসলসহ বসত বাড়ির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বাধাগ্রস্ত হয়েছে কৃষিকাজ। এতে জনজীবনও বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
শুক্রবার ঝড় বৃষ্টিতে ঠাকুরগাঁও জেলার ৫ টি উপজেলায় বিভিন্ন ফসলের ও কাঁচা ঘরবাড়ির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার সালন্দর ইউনিয়ন, আকচা ইউনিয়ন ও রাণীশংকৈল উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের ফসলের মাঠ ঘুরে দেখা যায়, গমের ক্ষেত ঝড়ো বাতাসের কারণে মাটিতে নুইয়ে পড়েছে। ভুট্টা ক্ষেত বাতাসে ভেঙ্গে পড়েছে। আলু ক্ষেতে বৃষ্টির পানি জমে রয়েছে। মাঠে কাজ করতে দেখা যায়নি কোন শ্রমিককে। এছাড়াও সরিষা, ভূট্টাসহ সব ফসলই বৃষ্টি ও দমকা হাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এদিকে দমকা হাওয়ায় উড়ে গেছে দরিদ্র মানুষের টিন চাতাইয়ের ঘর। সেগুলো মেরামত করছেন মানুষজন। কৃষক আজিজুর রহমান জানান, এবারে ৪ বিঘা জমিতে আগাম গমের আবাদ করেছেন তিনি। তার গম দানা বাঁধতে শুরু করেছে। কিন্তু বৃষ্টি ও দমকা হাওয়ার কারণে তার গমের ব্যপক ক্ষতি হয়েছে। গম মাটিতে নুইয়ে পড়েছে।
স্থানীয় আলুচাষি করিম বলেন, ৭ বিঘা মাটিতে আলু উৎপাদন করেছি। আজ আলু উত্তোলনের কথা ছিলো। এখন বৃষ্টির কারণে কাজ বন্ধ রয়েছে। দিনমজুর রহমত মিয়া বলেন, আলুর কাজে এসেছিলাম। দেখি আলু ক্ষেতে বৃষ্টির পানি জমে গেছে। তাই কাজ বন্ধ। তাই ফিরে যাচ্ছি। স্থানীয় মানিকের ঘরও দমকা হাওয়ায় উড়ে গেছে, তিনি ঘর মেরামত করছেন। এসময় তিনি বলেন, কয়েকদিন আগে এনজিও থেকে লোন নিয়ে টিনের ঘরটি বানিয়েছি। বাতাসে টিন উড়ে গেছে। সেগুলো আবার কুড়িয়ে এনে ঘর
মেরামত করছি।
এদিকে ঠাকুরগাঁওয়ে ২ দিনের বৃষ্টি ও দমকা হাওয়ায় কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে শীত। শীতের প্রকোপে জনজীবনে স্থবির হয়ে পড়েছে। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছেন না মানুষজন। ঠাকুরগাঁও পৌর শহরের হঠাৎবস্তি, ডিসি বস্তি, পশ্চিম মুন্সিপাড়া, টিকাপাড়া, গোয়ালপাড়া, সেনুয়াপাড়া, খালপাড়া , নিশ্চিন্তপুরসহ বেশ কিছু এলাকায় দেখা যায় দমকা হাওয়ায় ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় কাহিল হয়ে পড়েছে শিশু-কিশোর ও বয়স্করা।