Top
সর্বশেষ

আঁধার থেকে আলোয় নাছির উদ্দিন

০৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ২:০৬ অপরাহ্ণ
আঁধার থেকে আলোয় নাছির উদ্দিন
মহসিন আলী, বেনাপোল :

এক সময় ভারত থেকে চোরাইপথে গরুর ব্যবসা করতেন। কিন্তু সীমান্তে কড়াকড়ির কারণে ভারতীয় গরু আসা বন্ধ হওয়ায় পথে বসার উপক্রম হয় তার । কিন্তু বসে না থেকে পাঁচটি গরু দিয়ে গড়ে তোলে ছোট্ট গরুর খামার। সেই খামারে আজ ১২০টি গাভি, ৫৫০টি ষাঁড় ও ১২০টি বাছুর রয়েছে রয়েছে। গাভি থেকে প্রতিদিন ৫০০-৬০০ লিটার পর্যন্ত দুধ পেয়ে থাকেন। প্রতিদিন বিভিন্ন দুগ্ধ প্রক্রিয়াজাত কোম্পানি ও মিস্টির দোকানে এসব দুধ সরবরাহ করে থাকেন। বছরে  আয় ২ কোটি টাকা।  বলছিলাম বেনাপোল সফল খামারি নাছির উদ্দিনের কথা।
জানা গেছে, বেনাপোলের সীমান্তবর্তী গ্রাম পুটখালির সফল খামারি নাছির উদ্দিন।গত ১৫ বছর ধরে তিল তিল করে গড়ে তুলেছেন স্বপ্নের গরুর খামার। ২০১৩ সালে নেপালি জাতের মাত্র ৫টি গরু দিয়ে যাত্রা শুরু করেন তিনি। পরবর্তীতে স্থানীয় একটি এনজিও থেকে ৩ লাখ টাকা ঋণ ও নিজস্ব কিছু পুঁজি নিয়ে আরও ৫টি গরু কেনেন। ১০টি গরু থেকে পর্যায়ক্রমে বংশ বৃদ্ধির মাধ্যমে আজকের এ অবস্থায় এসে পৌঁছেছে খামারটি।
পেছনে ফেলে আসা কষ্টের অতীতকে স্মরণ করে অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন তিনি। পরিশ্রমই তাকে সাফল্যের সুবাতাস দিয়েছে। বর্তমানে বছরে আয়ের পরিমাণ প্রায় দুই কোটি টাকা।
নাছির উদ্দিন জানান, বর্তমানে তার খামারে ১২০ টি দুধের গাভি রয়েছে। এসব গাভি থেকে প্রতিদিন ৫০০-৬০০ লিটার পর্যন্ত দুধ পেয়ে থাকেন। প্রতিদিন বিভিন্ন দুগ্ধ প্রক্রিয়াজাত কোম্পানি ও মিস্টির দোকানে এসব দুধ সরবরাহ করে থাকেন।
বর্তমানে তার খামারে ১২০টি গাভি, ৫৫০টি ষাঁড় ও ১২০টি বাছুর রয়েছে। যার আনুমানিক বাজার মূল্য প্রায় ১ কোটি টাকা। গরুর ডেইরি খামারের পাশাপাশি রয়েছে একটি ছাগলের খামার। যেখানে দেশি ও উন্নত জাতের প্রায় ১২৫ টি ছাগল রয়েছে।
বর্তমানে তার খামারে কাজ করছেন ৮৫ জন শ্রমিক। তাদের ৮ হাজার থেকে ১২ হাজার টাকা পর্যন্ত বেতন দিচ্ছেন।
খামারি মো: নাছির উদ্দিন জানান, প্রত্যেক বছরে খরচ বাদ দিয়ে দেড় থেকে ২ কোটি টাকা আয় থাকে। তার খামারের সফলতার পেছনে স্থানীয় প্রাণিসম্পদ অফিসের সহযোগিতা রয়েছে। তিনি মনে করেন, বাংলাদেশে বেকারত্ব দূর করতে অবলম্বন হতে পারে গরুর খামার। সরকারের সহযোগিতা পাওয়া গেলে এ খাতে ৩০% বেকারত্ব দূর করা সম্ভব।
পুটখালি গ্রামের আল আমিন জানান, আত্মনির্ভরশীল নাছির এখন এলাকাবাসী ও পরিবারের কাছে শ্রদ্ধা-ভালোবাসার মানুষ। তাঁকে অনুসরণ করে এলাকায় এখন অনেকেই গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগির খামার করছেন। বিশেষ করে সীমান্তবর্তী অঞ্চলের মানুষ নাছিরের সাফল্যে স্বাবলম্বী হওয়ার অনুপ্রেরণা পেয়েছেন।
যশোর জেলা প্রানী সম্পদ অধিদফতরের কর্মকতা ড. রাশেদুল হক জানান, নাছিরের খামার এ অঞ্চলের সবচেয়ে বড় গরুর খামার। তিনি একজন দক্ষ খামারি। তাঁকে দেখে গ্রামের অন্যান্যরা গরু পালনে উৎসাহিত হচ্ছেন।

 

শেয়ার