বিশাল খোলা মাঠজুড়ে নারীদের উপচে পড়া ভিড়। একটি মেলাকে কেন্দ্র করে নারীদের এমন জমায়েত। মেলার নাম ‘বউ মেলা’। ৫৩ বছরের পুরোনো এই

মেলাতে শুধু যে বউ এসেছেন তা নয়। এখানে অংশ নিয়েছেন শাশুড়ি, ননদ, জা-ঝিসহ শিশু-কিশোরীরা।

নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার চাপিলা ইউনিয়নের মকিমপুরে বসেছে এই ‘বউ মেলা’। মেলায় নারীদের পাশাপাশি বাহারী সব কাঁচের চুরি, রঙিন ফিতা, লিপস্টিক, কানের দুল, ঝিনুকের মালার পসরা সাজিয়ে রেখেছেন
পুরুষরাও।

বাণিজ্য প্রতিদিনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মেলায় এসে শাশুড়ি, ননদ, জা-ঝিসহ নারীরা এসব অলংকার কিনতে দামাদামি করছেন। দামে মিলে গেলে কিনছেন অলংকারগুলো। তবে ‘বউ মেলা’য় পুরুষদের
সক্রিয় অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ থাকায় দৃষ্টির সীমানাজুড়ে শুধুই নারীদের চোখে পড়বে।

স্থানীয়রা জানান, যুগ যুগান্তের পুরোনো এই মেলার ঐতিহ্য রয়েছে। বাংলা বছরের পহেলা চৈত্রে এই মেলা বসে। দুইদিন ব্যাপী এই মেলার প্রথম দিনে উন্মুক্ত মেলায় সব শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন। দ্বিতীয় দিনের শুরু থেকে ‘বউ মেলা’ শুরু হয়। মেলাকে কেন্দ্র করে জামাইদের দাওয়াত করে আনা
হয় শ্বশুরবাড়িতে। এলাকার পুকুর থেকে আনা বড় বড় মাছও রান্না করা হয় জামাইদের জন্য।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ৫৩ বছর আগে মারা যাওয়া মুন্নাফ মণ্ডল মেলাটি প্রথম শুরু করেছিলেন। তার পর থেকে প্রতিবছরের পহেলা চৈত্রে দুইদিন ব্যাপী
মেলাটির আয়োজন চলে আসছে। মেলায় আসা পপি, লতা, শ্যামলী ও মাওয়াসহ অন্তত ১০ জন বউ উচ্ছ্ধসঢ়;বসিত কণ্ঠে বলেন, এই দিনটির জন্য তারা বছরজুড়ে অপেক্ষা করেন। মেলাটিতে শুধু নারীদের আগমন থাকায় কেনা-কাটা, ঘোরাফেরাতে থাকে অবাধ বিচরণ।

আয়োজক কমিটির সভাপতি মো. আমজাদ হোসেন বলেন, গ্রামীণ ঐতিহ্য ধরে রাখতে তারা যুগ যুগ ধরে শান্তিপূর্ণভাবে মেলাটির আয়োজন করে আসছেন। দিনভর ‘বউ মেলা’ চলার পর বিকেলে ঘোড়দৌড় শুরু হয়। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ ছুটে আসেন এই মেলায়। তবে মাস্ক পড়ে সামাজিক দূরত্ব মেনে মেলাটি পরিচালনা করা হচ্ছে।