বানভাসী এলাকায় বসেছে খড়ের হাট বা বাজার। এই হাটে শুধু বিক্রি হয় গোবাধি খাদ্য খড় বা পল। বানভাসী মানুষ তাদের একমাত্র সম্বল গরুর খাদ্য যোগাতে পানির দামে নিজেদের হাঁস মুরুগি ছাগল বিক্রি করে খড় কিনছেন গরুর পেটের খোড়াক যোগাতে। এ অবস্থা গাইবান্ধার নদী তীরবর্তী চার উপজেলার চিত্র।
গাইবান্ধার সাঘাটা, ফুলছড়, সুন্দরগঞ্জ ও গাইবান্ধা সদর সহ চার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া তিস্তা,যমুনা, ব্রহ্মপুত্র ও ঘাঘট নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। সেই সাথে বানের পানি কমতে শুরু করেছে। কিন্তু ঘরবাড়ি থেকে এখনো পানি নেমে যায়নি। মানুষ আশ্রয় কেন্দ্র বা উচু জায়গা থেকে বাড়ি ফিরে যেতে পারেনি । ঘর দুয়ার ও বাড়ি বাড়ি থেকে এখনো পানি নেমে গেলেও কাদা ছাড়া আর কিছু নাই।
কামারজানি ইউনিয়নের খারজানি চরের অবস্থা আরও কাহিল। সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম জাকির জানান দীর্ঘদিন বানের পানি স্থায়ী হওয়ায় নিজের সংরক্ষিত খড়ের ঢিবিতে পানি পড়ে পচে গেছে। যা এখন গো-খাদ্য হিসাবে ব্যবহার করার উপযোগি নয়। এলাকার সবগুলো চারন ভুমিও বেশ কিছুদিন পানিতে ডুবে থাকায় ঘাসও পচে নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে বন্যার্তরা গবাদী পশুর খাদ্য নিয়ে মহা সংকটে পড়েছে।
চরবাসীরা কোনমতো ভেলা বা চৌকি উচু করে রাতদিন কাটালেও গবাদী পশু নিয়ে তারা উচু স্থান বেছে নিয়েছে। কিন্তু তাতে চারদিকে
থৈ থৈ পানি । নিজের খাবার যোগার করা গেলেও গো খাদ্য নিয়ে তাদের মাথা খারাপ অবস্থা । বিশেষ করে সামনে কোরবানী ঈদকে সামনে রেখে যারা গো খামার বা বিক্রির জন্য গরু পালন করছিলো তাদের অবস্থা আরও কাহিল । তারা পানির দামে নিজেদের হাস ,মুরগি ,গরু ছাগল বিক্রি করে গরু বাঁচাতে মরিয়া হয়ে খড় কিনছে।
চর গুপ্তমনির বাসিন্দা মহসিন আলী । তার ঘরবাড়ি সব হাটু পানিতে। গবাদী পশু নিয়ে উঠেছেন একটি আশ্রয় কেন্দ্রে । নিজের খাবার থাকলেও নেই গরুর খাদ্য – তাই হাঁস মুরগি ছাগল কম দামে বিক্রি করে গরুর জন্য খড় কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। গবাদী পশু খাদ্য খড়ের হাট বসেছে বিভিন্ন স্থানে। ২০ টাকা কেজি হিসাবে ৮ শ টাকা মন দরে খড় বিক্রি হচ্ছে নদীর তীরে কামারজানি ,বালাসীঘাট ,দাড়িয়াপুর,সুন্দরগঞ্জের বেলকা ,চন্ডিপুর ,সাঘাটা বাজার ও গাইবান্ধায়। বিশেষ করে চরাঞ্চল থেকে নৌকা নিয়ে বানভাসী মানুষ আসছেন শহরের ব্রীজ রোড সহ বিভিন্ন স্থানে। তারা খড় কিনছেন। চারণ ভুমি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় গরু বাঁচাতে তাদের গাইবান্ধার বিভিন্ন স্থান থেকে পল বা খড় সংগ্রহ করতে হচ্ছে চড়া দামে। নিজের খাবার কম হলেও অবলা পশু তাদের সম্পদ।।