Top

রংপুরে শীতজনিত রোগে আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম

০৪ জানুয়ারি, ২০২৩ ৫:১৩ অপরাহ্ণ
রংপুরে শীতজনিত রোগে আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম
রংপুর প্রতিনিধি :

রংপুরের ১০০ শয্যা বিশিষ্ট আধুনিক শিশু হাসপাতালটি চালু না হওয়ায় শীতজনিত রোগে আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খেতে, হচ্ছে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডেও চিকিৎসক ও নার্সদের। করোনা সময় ২০২০ সালে এই শিশু হাসপাতালটিকে ডেডিকেটেড করোনা আইসোলেশন হাসপাতাল হিসেবে চালু করা হয়। বর্তমানে রংপুরে করোনার প্রকোপ অনেকটাই কেটে গেছে। তবে এখনও শিশু হাসপাতালটি চালুর কোনো উদ্যোগ নেয়নি স্বাস্থ্য বিভাগ। শিশুদের চিকিৎসায় উন্নত অবকাঠামো থাকলেও হাসপাতালটি না চালু হওয়ায় অস্বচ্ছল পরিবারের শিশুরা এর সুফল পাচ্ছে না।

২০১৯ সালে সদর হাসপাতাল ক্যাম্পাসে প্রায় দুই একর জমির ওপর শিশু হাসপাতালটির নির্মাণ কাজ শেষ হয়। ২০২০ সালের ৮ মার্চ ভবনটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রংপুর সিভিল সার্জনকে ভবনটি হস্তান্তর করে। তিনতলা বিশিষ্ট এ শিশু হাসপাতালে রয়েছে ইমার্জেন্সি, আউটডোর, চিকিৎসকদের চেম্বার, ল্যাব, অপারেশন থিয়েটার, ব্রোন ইউনিট, ওয়ার্ড ও কেবিন।

হাসপাতাল চত্বরেই সুপারিনটেনডেন্ট কোয়ার্টার, ডক্টরস কোয়ার্টার, স্টাফ অ্যান্ড নার্স কোয়ার্টার, ড্রাইভার কোয়ার্টার ও বিদ্যুতের সাবস্টেশন নির্মাণ করা হয়েছে।

হাসপাতাল চালুর আগে দেশে করোনার প্রকোপ বেড়ে যায়। একারণে ২০২০ সালের ১৯ এপ্রিল হাসপাতালটিকে রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালের সম্পা্রসারিত ‘করোনা ডেডিকেটেড আইসোলেশন হাসপাতাল’ হিসেবে চালু করে স্বাস্থ্য বিভাগ ও স্থানীয় প্রশাসন।

১০০ শয্যা বিশিষ্ট এ হাসপাতালে করোনার চিকিৎসায় পুরুষ রোগীর জন্য ৬০ শয্যা, নারী রোগীর জন্য ৩০ শয্যা এবং সংকটাপন্ন রোগীর জন্য ১০ শয্যা বিশিষ্ট নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (আইসিইউ) ব্যবস্থা করা হয়।

একই সঙ্গে হাসপাতালটিতে সেন্ট্রাল অক্সিজেন, ২৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সুবিধা ও লাশবাহী গাড়ির ব্যবস্থা করা হয়। এতে করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পাশাপাশি শিশু হাসপাতালে ১০টি আইসিইউ বেডসহ নানা সুযোগ-সুবিধা সংযোজিত হয়। পরে করোনার প্রকোপ আরও বাড়লে রমেক হাসপাতালে একটি করোনা ওয়ার্ড চালু করা হয়। ২০২২ সালের শুরুর দিকে রোগী না থাকায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনা ইউনিট বন্ধ করা হয়। বর্তমানে শিশু হাসপাতালটিতেও করোনা শনাক্ত রোগীর চাপ নেই।

সমাজ কর্মী ডাঃ মফিজুল ইসলাম মান্টু জানান, এই হাসপাতালটির জন্য চিকিৎসক, নার্সসহ অন্যান্ন জনবল প্রয়োজন তা অবিলম্বেব সরকারের দেওয়া দরকার। শিশু হাসপাতালটি চালু হলে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শিশুদের চাপ কিছুটা কমবে। রংপুরের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল জেলায় একটি বিশেষায়িত শিশু হাসপাতাল চালু করা। তাই এটি এখন শিশু হাসপাতাল হিসেবে চালু করা যেতে পারে। নাহলে হাসপাতাল নির্মাণে সরকারের উদ্দেশ্য ব্যাহত হবে।

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগের কনসালটেন্ট ডা. মো. ফখরুল আলম বলেন, শীত কিংবা গরমে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শিশু রোগীর সংখ্যা বেড়ে যায়। হাসপাতালের প্রায় ১৮০ শয্যার বিপরীতে সাড়ে ৩০০-এর বেশি রোগী চিকিৎসা নিচ্ছে। ফলে এক বেডে একাধিক শিশুকে চিকিৎসা দিতে হয়। যেহেতু রংপুরে একটি বিশেষায়িত শিশু হাসপাতাল নির্মাণ হয়েছে, সেটি চালু হলে হাসপাতালে রোগীর চাপ কমবে। আমরা ওই হাসপাতাল চালুর জন্য অপেক্ষা করছি।

১০০ শয্যা বিশিষ্ট শিশু হাসপাতালের কার্যক্রম পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক ও রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. শরিফুল হাসান বলেন, শিশু হাসপাতালটি চালু করতে সেখানে কতজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, কোন কোন বিষয়ে পারদর্শী চিকিৎসক, নার্স, ওয়ার্ডবয়, কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রয়োজন সেটি নিয়ে একটি অর্গানোগ্রামের প্রয়োজন। রংপুরের স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে দ্রæত জনবল নিয়োগে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হবে বলে জানান তিনি।

শেয়ার